বিনু মানকড়

মালবন্তরায় হিম্মতলাল মানকড় (এই শব্দ সম্পর্কেউচ্চারণ ; মারাঠি: विनू मांकड; জন্ম: ১২ এপ্রিল, ১৯১৭ - মৃত্যু: ২১ আগস্ট, ১৯৭৮) বোম্বে প্রেসিডেন্সির জামনগর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বিনু মানকড়। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৯ সময়কালে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মহারাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন ‘বিনু’ ডাকনামে পরিচিত বিনু মানকড়

বিনু মানকড়
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমালবন্তরায় হিম্মতলাল মানকড়
জন্ম(১৯১৭-০৪-১২)১২ এপ্রিল ১৯১৭
জামনগর, নয়ানগর রাজ্য, কাঠিয়ার এজেন্সি, বোম্বে প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২১ আগস্ট ১৯৭৮(1978-08-21) (বয়স ৬১)
বোম্বে, মহারাষ্ট্র, ভারত
ডাকনামবিনু
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স
সম্পর্কঅশোক মানকড় (পুত্র), অতুল মানকড় (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩০)
২২ জুন ১৯৪৬ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৩৫১৯৩৬পশ্চিম ভারত
১৯৩৬১৯৪২নয়ানগর
১৯৩৬১৯৪৬হিন্দু
১৯৪৩১৯৪৪মহারাষ্ট্র
১৯৪৪১৯৫১গুজরাত
১৯৪৮১৯৪৯বাংলা
১৯৫০১৯৫১সৌরাষ্ট্র
১৯৫১১৯৫৬বোম্বে
১৯৫৬১৯৬২রাজস্থান
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৪ ২৩৩
রানের সংখ্যা ২,১০৯ ১১,৫৯১
ব্যাটিং গড় ৩১.৪৭ ৩৪.৭০
১০০/৫০ ৫/৬ ২৬/৫২
সর্বোচ্চ রান ২৩১ ২৩১
বল করেছে ১৪,৬৮৬ ৫০,১২২
উইকেট ১৬২ ৭৮২
বোলিং গড় ৩২.৩২ ২৪.৫৩
ইনিংসে ৫ উইকেট ৩৮
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৮/৫২ ৮/৩৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩৩/ ১৯০/
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

তার সন্তান অশোক মানকড় ভারতের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। আরেক সন্তান রাহুল মানকড় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

ভারতের পক্ষে ৪৪ টেস্টে অংশ নেন তিনি। ৩১.৪৭ গড়ে ৫ সেঞ্চুরি সহযোগে ২১০৯ রান সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৩১ করেন। এছাড়াও ৩২.৩২ গড়ে ১৬২ উইকেট পেয়েছেন তিনি। তন্মধ্যে আটবার পাঁচ উইকেট লাভ করেন। টেস্ট ক্রিকেট জীবনে তিনজন ক্রিকেটারের একজন হিসেবে শুরু থেকে শেয পর্যন্ত প্রত্যেক অবস্থানে ব্যাট করেছেন।

১৯৫২ সালে লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। ৭২ ও ১৮৪ রান তুলে উভয় ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। এছাড়াও প্রথম ইনিংসে ৭৩ ওভারে ৫/১৯৬ লাভ করেন। তাস্বত্ত্বেও ইংল্যান্ড খুব সহজেই জয় পায়। পুরো সিরিজে ভারত দল নাস্তানাবুদ হলেও তিনি স্বীয় প্রতিভায় ভাস্বর ছিলেন। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একই টেস্টে শতরান ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির ঘটনাটি ত্রিশ বছরের অধিককাল টিকেছিল এবং প্রথম ভারতীয় হিসেবে এ অর্জনের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। এছাড়াও ইংল্যান্ডের বাইরে তিন বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে কিথ মিলার এবং স্যার গ্যারি সোবার্সের সাথে তিনিও ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগে অনন্য সাধারণ অবদান রাখায় লর্ডসের অনার্স বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

অর্জনসমূহ

১৯৫৬ সালে পঙ্কজ রায়ের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ৪১৩ রান করে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ব্যাপক পরিচিতি পান। তাদের গড়া এ রেকর্ডটি ৫২ বছর অক্ষত ছিল যা পরবর্তীতে ২০০৭-০৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটিতে গ্রেইম স্মিথনিল ম্যাকেঞ্জি ৪১৫ রান তুলে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন।[1] ঐ টেস্টে তার সংগৃহীত ২৩১ রানের তৎকালীন রেকর্ডটি পরবর্তীকালে ১৯৮৩ সালে সুনীল গাভাস্কার অপরাজিত ২৩৬* রান তুলে ভেঙ্গে ফেলেন।

১৯৯৩ সালে ভারত সরকার নাগরিক সম্মাননা হিসেবে তাকে পদ্মভূষণ পদবীতে ভূষিত করে।[2]

বিতর্ক

১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে বিল ব্রাউনকে রান আউট করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। রান-আপে থাকাকালীন নন-স্ট্রাইকার্স প্রান্তে অবস্থানরত ব্যাটসম্যান স্থান ছেড়ে চলে গেলে তিনি উইকেট ভেঙ্গে ফেলেন। সফরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে খেলাকালীন ব্রাউনকে একইভাবে আউট করেছিলেন তিনি। এ ঘটনাটি অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয় ও এ পন্থায় আউট করার ফলে 'মানকড়ীয়' পন্থারূপে ক্রিকেট বিশ্বে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।[3] কিন্তু, ডন ব্র্যাডম্যান তার আত্মজীবনীতে মানকড়ের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। কেননা, মানকড় ব্রাউনকে আউট করার পূর্বে সতর্ক করেছিলেন।[3] তবে, ১৯৮৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে সেলিম জাফরকে এ পন্থায় আউট করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও কোর্টনি ওয়ালশ তা গ্রহণ করেননি।

তথ্যসূত্র

  1. South Africa set new opening mark BBC News retrieved 1 March 2008
  2. "Padma Awards" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। নভেম্বর ১৫, ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২১, ২০১৫
  3. Frindall, Bill (২০০৯)। Ask Bearders (ইংরেজি ভাষায়)। BBC Books। পৃষ্ঠা 131–132। আইএসবিএন 978-1-84607-880-4। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১১

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.