বিধেয়

"বিধেয়" শব্দটি ভাষাবিজ্ঞান ও এর উপক্ষেত্রগুলোতে দুইভাবে উপস্থাপন করা হয়। প্রথম সংজ্ঞা মতে, বাক্যে উদ্দেশ্য ব্যতীত বাকি সবকিছুকে বিধেয় বলে। দ্বিতীয় সংজ্ঞা মতে, বিধেয় হলো বাক্যের শুধুমাত্র মূল ক্রিয়াপদ অথবা বাক্যাংশের বিধেয়সূচক অভিব্যক্তি। “সুমন বল খেলে” উদাহরণটিতে প্রথম সংজ্ঞামতে “বল খেলে” অংশটি বিধেয় আর দ্বিতীয় সংজ্ঞামতে একই বাক্যের ক্রিয়াপদ “খেলে” শব্দটি বিধেয়, যেখানে “সুমন” ও “বল” হলো বাক্যের সূচি। এই দুটি সংজ্ঞার মধ্যে পার্থক্য বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে।

উদ্দেশ্য বিধেয়

বিধেয় বাক্যের কর্তৃপদ তথা উদ্দেশ্যের উপর নির্ভরশীল। বিধেয় সাধারণত বাক্যের শেষের দিকে বসে। তবে উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের অবস্থান বদলে যেতে পারে।

চিনি বা শর্করা এইসব মিলিয়ে তৈরি হয়।

এই বাক্যকে এভাবেও লেখা যেতে পারে-

এইসব মিলিয়ে তৈরি হয় চিনি বা শর্করা

উপরের মোটা কালির অংশটি উদ্দেশ্য, যার অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে দ্বিতীয় উদাহরণে, ফলে বিধেয়ের অবস্থানও পরিবর্তিত হয়েছে।

বিভিন্ন অংশ

পূরক

বিধেয় অংশে সাধারণত ক্রিয়াপদ থাকে। বিধেয় ক্রিয়াপদের বিশেষ্য অংশকে বলা হয় পূরক

প্রসারক

বাক্য দীর্ঘতর হলে বিধেয়ের সঙ্গে নানা ধরনের শব্দবর্গ যুক্ত হতে পারে। বিধেয়কে এইসব শব্দ ও বর্গ প্রসারিত করে বলে এগুলোর নাম বিধেয়ের প্রসারক। সাধারণত উদ্দেশ্যের পূর্বে উদ্দেশ্যের প্রসারক এবং বিধেয়ের পূর্বে বিধেয়ের প্রসারক বসে। তবে বিধেয়ের স্থান ও কাল সংক্রান্ত প্রসারক উদ্দেশ্যের পূর্বেও বসতে পারে। যেমন-

“১৯৫২ সালে ঢাকার রাজপথে বাঙালি জাতির অহংকার রফিক-সালাম-বরকত-জব্বার মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।”

এই বাক্যে উদ্দেশ্য হলো ‘রফিক-সালাম-বরকত-জব্বার’, উদ্দেশ্যের প্রসারক হলো ‘বাঙালি জাতির অহংকার’। মূল ক্রিয়াপদ হলো ‘উৎসর্গ করেছিলেন’, বিধেয়ের পূরক হলো ‘জীবন’। অন্যদিকে ‘১৯৫২ সালে’, ‘ঢাকার রাজপথে’, এবং ‘মাতৃভাষার জন্য’ – এই তিনটি অংশ হলো বিধেয়ের প্রসারক।

আরও দেখুন

উদ্ধৃতি

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.