বিধানসভা

বিধানসভা ভারতের রাজ্য আইনসভার নিম্নকক্ষ (দ্বিকক্ষীয় আইনসভার ক্ষেত্রে) অথবা একমাত্র কক্ষ (এককক্ষীয় আইনসভার ক্ষেত্রে)। দিল্লি, জম্মু ও কাশ্মিরপুদুচেরি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল-দুটির আইনসভাও বিধানসভা নামে পরিচিত। বিধানসভার সদস্য বা বিধায়কেরা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, বিধানসভার সদস্যসংখ্যা সর্বাধিক ৫০০-এর বেশি বা সর্বনিম্ন ৬০-এর কম হতে পারে না। তবে গোয়া, সিকিমমিজোরাম রাজ্যের বিধানসভার সদস্যসংখ্যা সংসদের বিশেষ আইন বলে ৬০-এর কম। রাজ্যপাল যদি মনে করেন যে, আইনসভায় অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের যথেষ্ট প্রতিনিধি নেই, তবে তিনি উক্ত সম্প্রদায় থেকে ১ জনকে বিধানসভায় মনোনীত করতে পারেন।

প্রতিটি বিধানসভা পাঁচ বছরের মেয়াদে গঠিত হয়। প্রতিটি আসনের জন্যই নির্বাচন হয়। জরুরি অবস্থার সময় বিধানসভার মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি বাড়ানো যায় বা পাঁচ বছরের আগেই বিধানসভা অবলুপ্ত করা যায়। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে পাস হলেও বিধানসভা অবলুপ্ত হয়।

বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা

বিধায়ক নির্বাচিত হতে হলে, প্রার্থীকে ভারতের নাগরিক এবং কমপক্ষে ২৫ বছর বয়সী হতে হয়।[1] বিকৃতমস্তিষ্ক বা আর্থিকভাবে দেউলিয়া ব্যক্তিরা বিধায়ক হতে পারেন না। প্রার্থীকে একটি হলফনামা দিয়ে জানাতে হয় যে, তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা নেই। বিধানসভার অধ্যক্ষ বা তার অনুপস্থিতিতে উপাধ্যক্ষ বিধানসভার অধিবেশন ও কাজকর্ম পরিচালনা করেন। অধ্যক্ষ নিরপেক্ষ বিচারকের মতো কাজ করেন এবং সব বিতর্ক ও আলোচনায় পৌরহিত্য করেন। সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোট থেকেই অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।

অর্থ বিল ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান বোর্ড ও নিম্নকক্ষ বিধানসভার ক্ষমতা একই রকমের হয়। অর্থ বিলের ক্ষেত্রে বিধানসভার চূড়ান্ত কর্তৃত্ব রয়েছে। দুই কক্ষের মধ্যে মতবিরোধ হলে যৌথ অধিবেশনের মাধ্যমে তা নিরসন করা হয়।

বিধানসভার বিশেষ ক্ষমতা

সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব কেবলমাত্র বিধানসভাতেই আনা যায়। এই প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে পাস হলে মুখ্যমন্ত্রী সহ মন্ত্রিপরিষদকে পদত্যাগ বা পদচ্যুতি করতে হয়।

অর্থ বিল কেবলমাত্র বিধানসভাতেই আনা যায়। বিধানসভায় পাস হওয়ার পর তা বিধান বোর্ডে পাঠানো হয়। বিধান বোর্ড ১৪ দিনের বেশি আটকে রাখতে পারে না।

অন্যান্য বিলের ক্ষেত্রে, বিলটি যে কক্ষে সর্বাগ্রে উত্থাপিত হয় (সে বিধানসভাই হোক বা বিধান বোর্ডই হোক), সেই কক্ষে পাস হওয়ার পর অপর কক্ষে প্রেরিত হয়। অপর কক্ষ বিলটি ছয় মাস আটকে রাখতে পারে। অপর কক্ষ বিল প্রত্যাখ্যান করলে, ছয় মাস অতিক্রান্ত হলে বা অপর কক্ষের আনা বিলের সংশোধনী মূল কক্ষে বর্জনযোগ্য হলে একটি অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। তখন রাজ্যপাল উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশন ডেকে অচলাবস্থা কাটান এবং সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে বিলটির ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তবে বিধানসভা সংখ্যাধিক্যের দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় এক্ষেত্রে বিধানসভার মতই গ্রাহ্য হয়ে থাকে, যদি না তা নিয়ে বিভিন্ন দলের মতান্তর উপস্থিত হয়।

বিভিন্ন রাজ্যর বিধানসভা

নাম চিত্র কেন্দ্র রাজধানী আসন সংখ্যা
অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভা List অমরাবতী ১৭৫
অরুণাচল প্রদেশ বিধানসভা List ইটানগর ৬০
আসাম বিধানসভা List দিসপুর ১২৬
বিহার বিধানসভা List পাটনা ২৪৩
ছত্তিসগড় বিধানসভা List নয়া রায়পুর ৯০
দিল্লি বিধানসভা List নতুন দিল্লি ৭০
গোয়া বিধানসভা List পানাজি ৪০
গুজরাত বিধানসভা List Gandhinagar ১৮২
Haryana Legislative Assembly List চন্ডীগড় ৯০
Himachal Pradesh Legislative Assembly List Shimla (summer) and

Dharamshala (winter)

৬৮
জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা List Srinagar (summer)

& Jammu (winter)

৮৫
Jharkhand Legislative Assembly List রাঁচি ৮১
কর্ণাটক বিধানসভা List Bangalore (summer)

and Belgaum (winter)

২২৪
Kerala Legislative Assembly List Thiruvananthapuram ১৪০
Madhya Pradesh Legislative Assembly List ভোপাল ২৩০
মহারাষ্ট্র বিধানসভা List Mumbai (summer)

& Nagpur (winter)

২৮৮
Manipur Legislative Assembly List Imphal ৬০
Meghalaya Legislative Assembly List Shillong ৬০
মিজোরাম বিধানসভা List Aizawl ৪০
Nagaland Legislative Assembly List কোহিমা ৬০
Odisha Legislative Assembly List Bhubaneshwar ১৪৭
Puducherry Legislative Assembly List পুদুচেরি ৩৩
Punjab Legislative Assembly List Chandigarh ১১৭
রাজস্থান List জয়পুর ২০০
সিকিম List গ্যাঙ্গতক ৩২
Tamil Nadu Legislative Assembly List চেন্নাই ২৩৪
Telangana Legislative Assembly List Hyderabad ১১৯
ত্রিপুরা বিধানসভা List আগরতলা ৬০
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা List লখনউ ৪০৩
উত্তরাখণ্ড বিধানসভা List গায়েরসাই (গ্ৰীষ্ম)

& দেরাদুন (শীত)

৭০
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা List কলকাতা ২৯৪
মোট
৪,১২১[2]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Johari, J. C. (২০০০)। Indian Political System। New Delhi: Anmol Publications। পৃষ্ঠা 150–2। আইএসবিএন 81-7488-162-X।
  2. "Election Commission of India"। eci.nic.in। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৭

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.