বিক্রম (অভিনেতা)
কেনেডি জন ভিক্টর (জন্ম ১৭ এপ্রিল ১৯৬৬) যিনি তার মঞ্চনাম বিক্রম অথবা চিয়াঁ বিক্রম নামে বেশি পরিচিত, একজন ভারতীয় অভিনেতা এবং গায়ক, যিনি সাধারণত তামিল ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের সঙ্গে সঙ্গে একটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কারও জিতেছেন, অন্যান্য স্বীকৃতি এবং সম্মাননাসহ তিনি ২০১১ সালের মে মাসে পিপলস ইউনিভার্সিটি অব মিলান দ্বারা অনারারী ডক্টরেট উপাধি পান।
বিক্রম விக்ரம் | |
---|---|
জন্ম | কেনেডি জন ভিক্টর ১৭ এপ্রিল ১৯৬৬[1][2] |
অন্যান্য নাম | বিক্রম, কেনি, চিয়াঁ বিক্রম |
পেশা | অভিনেতা, চলচ্চিত্র প্রযোজক, নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী |
কর্মজীবন | ১৯৯০–বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | শৈলাজা বলকৃষ্ণ |
পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) (২০০৩ সাল) শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৯, ২০০৩ সাল) কালাইমামনি (২০০৪ সাল) |
ওয়েবসাইট | chiyaanvikram |
তার অভিনীতি প্রথম চলচ্চিত্র ছিলো এন কাদাল কানমানি (১৯৯০), এরপর তিনি ছোটো বাজেটের কিছু তামিল, তেলুগু এবং মালয়লাম ভাষার চলচ্চিত্রে কাজ করলেও সেগুলো কারো নজরে আসেনি। ১৯৯৯ সালের তামিল চলচ্চিত্র সেতু যেটি বালা পরিচালনা করেছিলেন বিক্রমের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে মাইলফলক হিসেবে কাজ করে, চলচ্চিত্রটিতে বিক্রম একজন ভদ্র মাস্তান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যে একটি সহজ-সরল মেয়ের প্রেমে পড়ে। ২০০০ এর দশকের শুরুর দিকে বিক্রম বেশ কয়েকটি 'মশলা চলচ্চিত্রে' অভিনয় করেন যেমনঃ ঢিল (২০০১), জেমিনি (২০০২), ঢুল (২০০৩) এবং স্যামী (২০০৩) বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছিলো। ঐ সময়ে বিক্রম কিছু ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন এবং তার অভিনয়ের জন্য চলচ্চিত্রসমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিলেন; কশি চলচ্চিত্রে একজন অন্ধ গ্রাম্যর চরিত্র এবং সামুরাই চলচ্চিত্রে রবিনহুড এর মত শারীরিক গঠনে দেখা গিয়েছিলো তাকে। বালার চলচ্চিত্র পিতামাগান-এ বিক্রমের 'গ্রেভডিগার উইথ অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার্স' এর অভিনয় দক্ষতা তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) পুরস্কার এনে দেয়, তার চরিত্রটি পুরো চলচ্চিত্রে মাত্র কয়েকটি লাইন সংলাপ বলেছিলো।[3] 'মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার' যুক্ত একজন আদর্শবাদী আইনজীবীর চরিত্রে তিনি আন্নিয়ান চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, এস. শঙ্করের পরিচালনা করা ২০০৫ সালের এই চলচ্চিত্রটির জন্য বিক্রম প্রশংসিত হয়েছিলেন, আবার ২০০৯ সালের কন্দস্বামী চলচ্চিত্রে একজন সুপারহিরোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি। মণি রত্নম পরিচালিত চলচ্চিত্র রাবণন চলচ্চিত্রে বিক্রম বীরাইয়া নামের এক ট্রাইবাল লিডার এর চরিত্রে অভিনয় করেন যেই চরিত্রটি রামায়ণের রাবণ চরিত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলো; এই চলচ্চিত্রটি বিক্রমকে আরো প্রশংসিত এবং মেধাবী শিল্পীর মর্যাদা এনে দেয়, বিক্রম এরপর মানসিক সমস্যাগ্রস্ত প্রাপ্তবয়স্ক কিন্তু ছয় বছর বয়স্ক একজন বালকের চিন্তাভাবনাধারণকারী দেইভা তিরুমাগাল (২০১১) তে অভিনয় করেও প্রশংসিত হন। তিনি শঙ্করের আই (২০১৫) চলচ্চিত্রে একজন বডি-বিল্ডার হিসেবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন এবং ৩৫ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রটি ছিলো প্রণয়ধর্মী সহিংসতাবাদী, এই চলচ্চিত্রেও বিক্রম তার অভিনয়ের জন্য সাধুবাদ লাভ করেন। চলচ্চিত্রটি তামিল ভাষার অন্যতম সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র হিসেবে পরিগণিত হয়ে যায়।[4][5]
বিক্রম অনেক সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মে অংশ নিয়েছেন এবং ২০১১ সালে জাতিসংঘের হিউম্যান সেটেলমেন্টস প্রোগ্রামে ইয়ুথ এনভয় হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি সঞ্জীবনী ট্রাস্ট এর একজন ব্র্যান্ড এ্যাম্বেসেডর হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদ্যাসুধা নামের একটি স্কুলেও তিনি ব্র্যান্ড এ্যাম্বেসেডর ছিলেন যেটি হচ্ছে একটি বিশেষ স্কুল, দেইভা তিরুমাগাল চলচ্চিত্রের শুটিং এর সময় তিনি ওখানে ছিলেন, বিক্রম এছাড়াও কশি আই কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে যুক্ত ছিলেন এবং তার নিজের প্রতিষ্ঠান বিক্রম ফাউন্ডেশন দ্বারাও তিনি সমাজকল্যাণমূলক কাজ করেছেন।[6] ২০১৬ সালে বিক্রম 'স্পিরিট অব চেন্নাই' নামের একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, ভিডিওটি বন্যা নিয়ে ছিলো।
প্রারম্ভিক জীবন
বিক্রমের জন্ম হয়েছিলো তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে, তার বাবা ছিলেন খ্রিষ্টান এবং মা ছিলেন হিন্দু।[7][8] তার বাবা জন ভিক্টর (ওরফে বিনোদ রাজ) পরমকুঁড়ির স্থানীয় লোক ছিলেন এবং একদা বাড়ি থেকে পালিয়ে চলচ্চিত্রে কর্মজীবন শুরু করার চেষ্টা চালান। ইনি তামিল চলচ্চিত্রে সহভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন এবং বিক্রম তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অভিনেতা হওয়ার বাসনা লালন করেন। বিক্রমের মা রাজ্যেশ্বরী সরকারী কর্মচারী ছিলেন এবং বিক্রমের মামা থিয়াগরজন তামিল চলচ্চিত্রে মোটামুটি ভালো আয়কারী অভিনেতা এবং পরে পরিচালক বনে যান।[9]
বিক্রমের বোন অনিতা একজন স্কুলশিক্ষিকা এবং তার অরবিন্দ নামের কনিষ্ঠ আরেকটি ভাই আছে।[10]
তথ্যসূত্র
- Surprise b`day cake for Vikram on `Sketch` set. Sify.com (17 April 2017). Retrieved on 17 September 2018.
- Vasudevan, K.V. (23 April 2016) Actor vikram turned 50 last week. The Hindu. Retrieved on 17 September 2018.
- Kumar, Ashok (২০ আগস্ট ২০০৪)। "Vikram, the Victor"। The Hindu। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১১।
- "Vikram's 'I' Box Office: Shankar's Film Completes 50-Day Milestone in Theatres"। International Business Times। ৪ মার্চ ২০১৫। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- Rangan, Baradwaj (১৪ জানুয়ারি ২০১৫)। "I: A terrific performance let down by an uninspired, exhausting movie"। The Hindu। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৫।
- "Vikram happy at being chosen UN Youth envoy"। Deccan Herald। ২৩ এপ্রিল ২০১০। ১৫ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১১।
- Sreedhar, Sridevi (৪ জুন ২০০৬)। "Southern spice"। The Telegraph। ২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১১।
- Narasimham, N. L (৪ মার্চ ২০০৫)। "Still the regular guy"। The Hindu। ২১ মার্চ ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১১।
- "Did You Know"। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। ৫ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৪।
- "Shruti Kamal snubs Venkat Prabhu"। Behindwoods। ১৯ অক্টোবর ২০০৭। ২০ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১১।