বানৌজা বঙ্গবন্ধু

বানৌজা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ফ্রিগেট। এটি বর্তমানে নৌবাহিনীর প্রধান জাহাজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। জাহাজটি গভীর সমুদ্রে টহল প্রদান, চোরাচালান বিরোধী অভিযান, দূর্ঘটনা পরবর্তী উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধসহ সার্বিক কর্মক্ষম সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করে। পাশাপাশি সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়নে সমুদ্রের মূল্যবান সম্পদ রক্ষা এবং দেশের অর্থনৈতিক কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

বানৌজা বঙ্গবন্ধু (এফ২৫) কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেনিং (ক্যারাট) ২০১২-এর সময়
ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা বঙ্গবন্ধু
নির্মাণাদেশ: ১৯৯৮
নির্মাতা: দেইয়ু শিপবিল্ডিং এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র
নির্মাণের সময়: ১১ মার্চ, ১৯৯৮
অভিষেক: ২৯ অগাস্ট, ২০০০
কমিশন লাভ: ২০ জুন, ২০০১
পুনঃনিয়োগ: ১৩ জুলাই, ২০০৭
কার্যসময়: ২০০১-বর্তমান
মাতৃ বন্দর: চট্টগ্রাম
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: উলসান-শ্রেণীর ফ্রিগেট
ওজন: ২,৫০০ টন
দৈর্ঘ্য: ১০৩.৭ মিটার (৩৪০ ফু)
প্রস্থ: ১২.৫ মিটার (৪১ ফু)
গভীরতা: ৩.৮ মিটার (১২ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • সিওডিএডি: ৪ এসইএমটি-পিয়েলস্টিক ১২ ভোল্ট পিএ৬ভি২৮০ এসটিসি ডিজেল; ২২,৫০১ অশ্বশক্তি (১৬.৭৭৯ মেওয়াট) ধারণক্ষমতা;
  • ২ x শ্যাফট
গতিবেগ: ২৬ নট (৪৮ কিমি/ঘ; ৩০ মা/ঘ)
সীমা: ৪,০০০ নটিক্যাল মাইল (৪,৬০০ মা; ৭,৪০০ কিমি)
লোকবল: ১৮৬ জন (১৬ জন কর্মকর্তা)
যান্ত্রিক যুদ্ধাস্ত্র
ও ফাঁদ:
  • ইএসএম:রেকাল কাটলাস ২৪২; পথরোধক
  • ইসিএম:রেকাল স্কোরপিয়ান; জ্যামার
রণসজ্জা:
  • ২ x ৪ অটোম্যাট এম কে. ২ ব্লক ৪ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ১ x ৮ এফএম-৯০এন বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • ১ x অটোব্রেডা ৭৬ মিলিমিটার/৬২ সুপার র‍্যাপিড;
  • ৪ xঅটোব্রেডা ৪০ মিলিমিটার/৭০ (২ জোড়া) কম্প্যাক্ট সিআইডব্লিউএস;
  • ২ x ৩ ৩২৪ মিলিমিটার বি-৫১৫ টিউবস - হোয়াইহেড এ২৪৪এস
  • ২ x সুপার ব্যারিকেড শ্যাফ উৎক্ষেপক
বিমান বহন: ১ x হ্যাঙ্গার, ১ x অগাস্টা-ওয়েস্টল্যান্ড এডব্লিউ১০৯ পাওয়ার হেলিকপ্টার

কর্মজীবন

বানৌজা বঙ্গবন্ধুর জাহাজটির নামকরণ করা হয় বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে, যার উপাধি বঙ্গবন্ধু। এটি যুদ্ধে ও শান্তিকালীন সময়ে সমভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম। ১৯৯৮ সালের ১১ মার্চ কোরিয়া প্রজান্তন্ত্রের দেইয়ু শিপবিল্ডিং এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ জাহাজটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২৯ অগাস্ট ২০০০-এ নির্মাণকাজ শেষ হয়। ২০০১ সালের ২০ জুন বানৌজা বঙ্গবন্ধু কে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশনিং করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে এটিকে বানৌজা খালিদ বিন ওয়ালিদ হিসবে পুনরায় কমিশনিং করা হয়। ২০০৯ সালে এটিকে আবারও বানৌজা বঙ্গবন্ধু নামকরণ করা হয়।

বানৌজা বঙ্গবন্ধু ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সাথে দ্বিপক্ষীয় মহড়া ক্যারাট-এ অংশগ্রহণ করে। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে জাহাজটি কাতারের দোহায় এক্সারসাইজ ফেরোশাস ফ্যালকন-এ অংশগ্রহণ করে।[1] ২৯ অগাস্ট ২০১৩ বানৌজা বঙ্গবন্ধু কে জাতীয় পতাকা প্রদান করা হয়।[2] ২০১৪ সালে মালেশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩৭০ নিখোঁজের পর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অনুসন্ধানকার্যে জাহাজটি অংশ নেয়।[3][4]

ক্যারাট-২০১২ তে বানৌজা বঙ্গবন্ধু

রণসজ্জা

এই যুদ্ধজাহাজটি তার শ্রেণির সর্বাধুনিক ফ্রিগ্রেট। এটি অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা সজ্জিত। এই জাহজের অটোম্যাট এমকে ২ ব্লক ৪ একটি অত্যাধুনিক জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র যা ১৮০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উৎক্ষেপণের পর মাঝপথে গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে ফলে আক্রমণেরর জন্য যুদ্ধ জাহাজকে অবস্থান পরিবর্তন করতে হয় না। বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র হিসেবে এতে রয়েছে ৮টি এফএম-৯০ ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, যা ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি নৌ-কামান ও টর্পেডো বহন করে।

বানৌজা বঙ্গবন্ধুতে ১টি হ্যাঙ্গার আছে যা অগাস্টা-ওয়েস্টল্যান্ড এডব্লিউ১০৯ পাওয়ার হেলিকপ্টার বহন করে থাকে।

অভিযান

এই যুদ্ধজাহজের প্রাথমিক ও মূল দায়িত্ব হচ্ছে দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা তত্ত্বাবধায়ন ও নিরাপত্তা দেয়া। এছাড়াও জাহাজটি বাংলাদেশের নৌ সীমান্তে নৌ-সন্ত্রাস, প্রাকৃতিক দূষণচোরাচালান রোধেও কাজ করে থাকে। প্রয়োজনে এটি অনুসন্ধান এবং উদ্ধার কাজের দায়িত্ব পালনেও সক্ষম।

তথ্যসূত্র

  1. http://www.kalerkantho.com/print_edition/index.php?view=details&archiev=yes&arch_date=30-10-2012&type=gold&data=news&pub_no=1046&cat_id=1&menu_id=43&news_type_id=1&index=43#.VJlu5RsFM%5B%5D
  2. http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article665127.bdnews
  3. "Bangladesh begins Malaysian plane search"ঢাকা ট্রিবিউন। ১৫ মার্চ ২০১৪। ১৫ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৪
  4. "বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ বিমানটির সন্ধান মেলেনি"দৈনিক জনকণ্ঠ। ২০ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.