বানৌজা প্রত্যয়

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) প্রত্যয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি টাইপ ০৫৬ আলফা স্টেলথ গাইডেড মিসাইল কর্ভেট। যা উচ্যাং শিপইয়ার্ড কর্তৃক নির্মিত হয়। এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হওয়া এই শ্রেণীর দ্বিতীয় জাহাজ যা বহুমাত্রিক যুদ্ধ ক্ষমতা সম্পন্ন। জাহাজটি গভীর সমুদ্রে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান, সুনীল অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনাসহ মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[1][2][3][4]

ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা প্রত্যয়
নির্মাণাদেশ: অক্টোবর, ২০১২
নির্মাতা: উচ্যাং শিপইয়ার্ড
নির্মাণের সময়: ০৮ জানুয়ারী, ২০১৩
অভিষেক: ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৪
অর্জন: ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫
কমিশন লাভ: ১৯ মার্চ, ২০১৬
শনাক্তকরণ: এফ১১২
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: টাইপ ০৫৬ কর্ভেট
ওজন: ১,৪০০ টন
দৈর্ঘ্য: ৯০.২ মিটার (২৯৬ ফু)
প্রস্থ: ১১.১৪ মিটার (৩৬.৫ ফু)
ড্রাফট: ৩.২৬ মিটার (১০.৭ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ x এসইএমটি পিয়েলসটিক ১২পিএ৬ ডিজেল ইঞ্জিন
  • ২ x শ্যাফট
গতিবেগ: ২৫ নট (৪৬ কিমি/ঘ; ২৯ মা/ঘ)
সীমা: ৩,৫০০ নটিক্যাল মাইল (৪,০০০ মা; ৬,৫০০ কিমি)
সহনশীলতা: ১৫ দিন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • টাইপ ৩৬০ এয়ার/সারফেস সার্চ রাডার, ই/এফ ব্যান্ড
  • টাইপ ৩৪৮ ফায়ার কন্ট্রোল রাডার
  • কেলভিন হিউজেস শার্পআই আই-ব্যান্ড (এক্স-ব্যান্ড) রাডার
  • কেলভিন হিউজেস শার্পআই ই/এফ-ব্যান্ড (এস-ব্যান্ড) রাডার
রণসজ্জা:
  • ১ x এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি কামান
  • ২ x এইচ/পিজে-১৭ ৩০ মিমি কামান
  • ২ x ২ সি-৮০২এ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র
  • ১ x ৮ এফএল-৩০০০এন আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র
  • ২ x ৬-টিউব টাইপ ৮৭ ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী রকেট লঞ্চার
বিমানচালানর সুবিধাসমূহ: হেলিকপ্টার ডেক

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো

জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার (৩০০ ফু), প্রস্থ ১১.১৪ মিটার (৩৬.৫ ফু) এবং ওজন ১,৪০০ টন। জাহাজটিতে দুইটি জার্মানির তৈরি এসইএমটি পিয়েলসটিক ১২পিএ৬ ডিজেল ইঞ্জিন রয়েছে যার সাহায্যে সে সর্ব্বোচ্চ ২৫ নট (৪৬ কিমি/ঘ; ২৯ মা/ঘ) গতিবেগে চলতে সক্ষম। জাহাজটিতে সামনে ও পিছনে দুইটি আলাদা শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে এবং একটি অকার্যকর হয়ে পড়লেও অন্যটির সাহায্যে জাহাজটি কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। চিরাচরিত গোলাকার সম্মুখভাগের পরিবর্তে জাহাজটিকে ভি-আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে যাতে উত্তাল সমূদ্রেও দ্রুতগতিতে চলতে পারে। কিন্তু জাহাজটিতে কোন সোনার না থাকায় এটি খুব সীমিত মাত্রায় ডুবোজাহাজ-বিধ্বংসী কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। বানৌজা প্রত্যয়ে একটি হেলিকপ্টার ডেক রয়েছে যেখানে একটি মধ্যম আকৃতির হেলিকপ্টার ওঠানাম করতে পারে তবে এতে কোনো হ্যাঙ্গার নেই।

ইলেক্ট্রনিক্স

জাহাজটি কেলভিন হিউজেস এর তৈরি শার্পআই আই-ব্যান্ড (এক্স-ব্যান্ড) এবং শার্পআই ই/এফ-ব্যান্ড (এস-ব্যান্ড) রাডার এবং মান্টাডিজিটাল কৌশলগত প্রদর্শন সফটওয়ার ব্যবহার করে।[5] এই রাডারগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠে অনুসন্ধান এবং নৌচালনার কাজে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি হেলিকপ্টার উড্ডয়ন ও অবতরন নিয়ন্ত্রণের জন্যও এই রাডার ব্যবহার করা যায়।

অস্ত্রসজ্জা

জাহাজটিতে একটি এইচ/পিজে-২৬ ৭৬ মিমি কামান রয়েছে যা জাহাজের সম্মুখভাগে বসানো হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠে থাকা হুমকি মোকাবেলা করার জন্য রয়েছে চারটিসি-৮০২এ জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। জাহাজটির নিজস্ব প্রতিরক্ষার জন্য রয়েছে দুইটি এইচ/পিজে-১৭ ৩০ মিমি দূর-নিয়ন্ত্রিত কামান। আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য রয়েছে ৮টি এফএল-৩০০০এন বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। জাহাজটিতে দুইটি ৬-টিউব বিশিষ্ট টাইপ ৮৭ ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী রকেট লঞ্চারও রয়েছে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.