বানৌজা অপরাজেয়

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) অপরাজেয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পদ্মা-শ্রেণীর প্রথম ব্যাচের প্যাট্রোল ক্রাফট। এটি গণচীনের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত হয়। জাহাজটি উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[1][2][3]

ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা অপরাজেয়
নির্মাণাদেশ: ২ মে, ২০১০
নির্মাতা: খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড
অর্জন: ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩
কমিশন লাভ: ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৩
মাতৃ বন্দর: খুলনা
শনাক্তকরণ: পি২৬১
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: পদ্মা-শ্রেণীর টহল জাহাজ
ওজন: ৩৫০ টন
দৈর্ঘ্য: ৫০.৪ মিটার (১৬৫ ফু)
প্রস্থ: ৭.৫ মিটার (২৫ ফু)
উচ্চতা: ১৩.৭ মিটার (৪৫ ফু)
ড্রাফট: ১.৮০ মিটার (৫.৯ ফু)
গভীরতা: ৪.১ মিটার (১৩ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ x ৩০৪১ অশ্বশক্তি (২২৭০ কিলোওয়াট) বিশিষ্ট এমটিইউ ডিজেল ইঞ্জিন (জার্মানি)
  • ১ × ১২০ কিলোওয়াট বিশিষ্ট সিএটি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য)
  • ১ × ৪৯ কিলোওয়াট বিশিষ্ট সিএটি ইমারজেন্সি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য)
  • জেডএফ ৭৬০০ ট্রান্সমিশন (জার্মানি)
গতিবেগ: ২১ নট (৩৯ কিমি/ঘ; ২৪ মা/ঘ)
সীমা: ১,৫০০ নটিক্যাল মাইল (১,৭০০ মা; ২,৮০০ কিমি)
সহনশীলতা: ৭ দিন
লোকবল: ৪৫ জন
রণসজ্জা:
  • ২ × ৩৭ মিমি কামান;
  • ২ × ২০ মিমি বিমান বিধ্বংসী কামান
  • সামুদ্রিক মাইন

ইতিহাস

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মানের পদক্ষেপ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২ মে, ২০১০ সালে খুলনা শিপইয়ার্ড এবং প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর এর মধ্যে জাহাজ নির্মাণ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২৩ জানুয়ারি, ২০১৩ সালে জাহাজটিকে প্রথম বারের মত পানিতে ভাসানো হয়। পরবর্তীতে ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ সালে জাহাজটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। অবশেষে ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৩ সালে বানৌজা অপরাজেয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।[4][5][6]

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো

বানৌজা অপরাজেয় জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৫০.৪ মিটার (১৬৫ ফু), প্রস্হ ৭.৫ মিটার (২৫ ফু) এবং গভীরতা ৪.১ মিটার (১৩ ফু)। এই টহল জাহাজটির ওজন ৩৫০ টন এবং জাহাজটিতে রয়েছে ৪টি ১০১৬ কিলোওয়াট বিশিষ্ট ডিজেল ইঞ্জিন, ১টি ১২০ কিলোওয়াট বিশিষ্ট সিএটি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য), ১টি ৪৯ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সিএটি ইমারজেন্সি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য) এবং জেডএফ ৭৬০০ ট্রান্সমিশন (জার্মানি)। যার ফলে জাহাজটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২১ নট (৩৯ কিমি/ঘ; ২৪ মা/ঘ)। এছাড়াও জাহাজটি ৪৫ জন সদস্য নিয়ে একনাগাড়ে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম।

রণসজ্জা

বানৌজা অপরাজেয় জাহাজটির আকার আয়তন অপেক্ষাকৃত ছোট হলেও নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। শত্রু জাহাজ মোকাবেলা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ১টি টুইন ব্যারেল ৩৭ মিমি বিমান বিধ্বংসী কামান;
  • ১টি টুইন ব্যারেল ২০ মিমি বিমান বিধ্বংসী কামান;
  • সামুদ্রিক মাইন;
  • ৬টি কিউডব্লিউ-২ ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণ যোগ্য বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।[7]

তথ্যসূত্র

  1. "PATROL CRAFT – Khulna Shipyard Ltd" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২০
  2. "4 warships including Somoudra Joy commissioned"bdnews24.com। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০১৫
  3. "Tender specification of main engine" (পিডিএফ)Directorate General Defense Purchase (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১৪
  4. "First Bangladesh made warship launched"। The Daily Star। ৯ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬
  5. "Navy gets another patrol craft"Daily Sun। Dhaka। ৭ মে ২০১৩। ২৪ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৮
  6. "'Padma' latest Bangladesh Navy warship"। BDNews24.com। ২৪ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬
  7. "Bangladesh still aiming for sub purchases"upi.com। United Press International, Inc। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৫
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.