বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্লাস ২০০০
বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্লাস ২০০০ বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশের মিটার-গেজ ডিজেল-বৈদ্যুতিক লোকোমোটিভের একটি শ্রেণী। এই শ্রেণীর মোট ৪০টি লোকো ১৯৫৩, ১৯৫৪ ও ১৯৫৬ সালে তৎকালীন ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের বহরে যুক্ত হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্লাস ২০০০ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
সূচনাকাল থেকে এই শ্রেণীর লোকো যাত্রীবাহী ও মালবাহী উভয় ধরনের ট্রেনেই ব্যবহৃত হতো। উল্কা এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস ও পারাবত এক্সপ্রেসের মতো যাত্রীবাহী ট্রেন এদের দ্বারা টানা হতো। তবে বর্তমানে বয়স বেশি হওয়ার কারণে এদেরকে আর যাত্রীবাহী ট্রেনে ব্যবহার করা হয় না। মালবাহী ট্রেনের মধ্যে এদেরকে কন্টেইনার ট্রেনেই বেশি দেখা যায়, তবে অয়েল ট্যাংকারের মতো অন্যান্য মালবাহী ট্রেনেও এদের ব্যবহার করা হয়।
প্রস্তুতকারক বিবরণ
২০০০ শ্রেণীর লোকো কানাডার জেনারেল মটরস ডিজেল (জিএমডি) উৎপাদন করে।[1] এদের মডেল ইএমডি বি১২। এই ৪০টি লোকো ৩ ধাপে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসে:[2]
- আগস্ট–অক্টোবর, ১৯৫৩: ২০০০–২০০৯
- জুলাই–সেপ্টেম্বর ১৯৫৪: ২০১০–২০২৪
- মার্চ–এপ্রিল, ১৯৫৬: ২০২৫–২০৩৯
যান্ত্রিক বিবরণ
২০০০ শ্রেণী বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ডিজেল লোকো। এগুলো দেশের একমাত্র সিঙ্গেল-ক্যাব লোকো যাদের দুই পাশে কোনো হুড নেই, ফলে এদেরকে পেছন দিকে চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। এই লোকোগুলোর জন্য টার্নটেবিল প্রয়োজন।
এই লোকোগুলোতে ইএমডি ১২-৫৬৭সি প্রাইম মুভার ব্যবহার করা হয়েছে। এদের ক্ষমতা ১,১২৫ অশ্বশক্তি এবং এরা সর্বোচ্চ ১০০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে। এদের চাকার বিন্যাস হলো এ১এ-এ১এ। এদেরকে বাংলাদেশের অন্যতম সফল লোকো শ্রেণী বলা হয়ে থাকে। ২০২০ সাল পর্যন্ত (৬৪–৬৭ বছর পর), ৬টি লোকো এখনও সচল রয়েছে (২০১৫, ২০১৭, ২০২১, ২০২২, ২০২৩, ২০২৫ এবং ২০৩০)। একটি লোকো (২০০০) চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিজেল শপে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
পূর্ব পাকিস্তানের পাশাপাশি আরও ৯টি ইএমডি বি১২ লোকো ব্রাজিলের ভিক্টোরিয়া এ মিনাস রেলওয়ের জন্য উৎপাদন করা হয়। এই লোকোগুলোর সাথে ২০০০ শ্রেণীর লোকোগুলোর অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। কিছু পার্থক্যের মধ্যে একটি হচ্ছে, চাকার বিন্যাস এ১এ-এ১এ না হয়ে বি-বি হয়েছে।
শ্রেণীকরণ ও সংখ্যায়ন
এই লোকোগুলোর সংখ্যা-সিরিজ/শ্রেণী হচ্ছে ২০০০, এবং এদেরকে ২০০০ থেকে ২০৩৯ পর্যন্ত সংখ্যায়িত করা হয়েছে। এদের শ্রেণী-নাম/স্পেসিফিকেশন হচ্ছে “এমইজি-১১”। এখানে, এম = মিটার-গেজ, ই = ডিজেল-ইলেক্ট্রিক, জি = জিএমডি এবং ১১ = ১১ × ১০০ = ১,১০০ অশ্বশক্তি (আসলে ১,১২৫ অশ্বশক্তি)।
রং
- সবুজ-হলুদ (ইবিআর রং) (বর্তমানে নেই)
- লাল, সাথে সাদা ডোরা (বর্তমানে নেই)
- নীল
- সবুজ-হলুদ[3]
- সবুজ
রক্ষণাবেক্ষণ
২০০০ শ্রেণীর লোকোগুলোর বেজ চট্টগ্রাম রেল বিভাগে। এদেরকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিজেল শপে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। বিভিন্ন যান্ত্রিক জটিলতার কারনে এদেরকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে দেওয়া হয় না। ফলে রক্ষণবেক্ষণের জন্য এরা দিনাজপুরের পার্বতীপুরের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানায় (কেলোকা) যেতে পারে না।
চিত্রশালা
- ২০১৫
- ২০২১
- ২০২২
- ২০২৫
তথ্যসূত্র
- "Railway to procure nine locomotives"। The Daily Star। ১২ জানুয়ারি ২০১০।
- Utah Rail। "GM Locomotives Built In Canada"। ৩১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- "General Motors Diesel Ltd."। Old Time Trains।
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে Category:Bangladesh Railway Class 2000 সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।