বাংলাদেশের উপপ্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী (ইংরেজি: Deputy Prime Minister of Bangladesh) হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপ-প্রধান এবং জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদমর্যাদার সংসদ নেতা। একজন উপ-প্রধানমন্ত্রী সাধারণত স্ব-পদ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে মন্ত্রিসভার কার্যভার এর পাশাপাশি যেকোনো স্বতন্ত্র মন্ত্রাণলয়ের দায়িত্বও পালন করতে পারেন। এই পদটি অনিয়মিতভাবে তৈরী করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠার পর মাত্র ৯ বার এটি বহাল করা হয়েছিল। এই পদটি সাধারণত রাষ্ট্রপতি শাসন আমলে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের কোনো উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ নেই।

বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী
Deputy Prime Minister of Bangladesh
দায়িত্ব
পদশূন্য

১৯৯০ থেকে
এর সদস্যবাংলাদেশের জাতীয় সংসদ
বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা
মনোনয়নদাতাবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
নিয়োগকর্তাবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি
সর্বপ্রথমমওদুদ আহমেদ (১৯৭৯-১৯৮০)
গঠন১৫ এপ্রিল ১৯৭৯ (1979-04-15)

ইতিহাস

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম (১৯৭৫–১৯৭৭) এর রাষ্ট্রপতিত্বে এবং জিয়াউর রহমানের (১৯৭৭–১৯৮১) শাসন আমলে মওদুদ আহমেদ ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে জামাল উদ্দিন আহমেদ ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[1][2][3] হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর শাসন আমলেও ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত এম এ মতিন বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[4] কাজী জাফর আহমেদ প্রথমে উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১৯৮৫ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করেন কিন্তু তিনি ১৯৮৯ থেকে পুনরায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রাপ্ত হোন।

গুঞ্জন

২০১৭ সালে কিছু সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এর উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।[5][6] পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এটিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন এবং বলেন, "প্রধানমন্ত্রীই সিদ্ধান্ত নিবেন কাকে রাখবেন, কাকে বাদ দিবেন। তবে একটি পরিবর্তন আসতে পারে। এখন সেটি কখন হবে তা আমি জানি না।"[5]

বিরোধীদলীয় নেতার পদকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদার দাবী

২০১৯ সালে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংসদের বিরোধী দলের নেতাকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর এবং দলের চিফ হুইপের পদকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদার দাবী করেন।[7][8] তিনি সংসদে স্পিকারের কাছে উত্থাপন করার কথা জানান।[8]

বাংলাদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রীর তালিকা

রাজনৈতিক দল
নাম জন্ম কার্যকাল মৃত্যু দল প্রধানমন্ত্রী (দায়িত্ব গ্রহণ-দায়িত্ব হস্তান্তর) রাষ্ট্রপতি (দায়িত্ব গ্রহণ-দায়িত্ব হস্তান্তর) মন্তব্য
মওদুদ আহমেদ ২৪ মে ১৯৪০ ১৫ এপ্রিল ১৯৭৯-০২ জানুয়ারি ১৯৮০ ১৬ মার্চ ২০২১ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শাহ আজিজুর রহমান (১৫.০৪.১৯৭৯-২৪.০৩.১৯৮২) জিয়াউর রহমান (২১.০৪.১৯৭৭-৩০.০৫.১৯৮১) বাংলাদেশের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী। বিদ্যুৎ,পানি সম্পদ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে
একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১লা নভেম্বর ১৯৩২ ১৫ এপ্রিল ১৯৭৯-২৩ আগষ্ট ১৯৭৯ - বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শাহ আজিজুর রহমান (১৫.০৪.১৯৭৯-২৪.০৩.১৯৮২) জিয়াউর রহমান (২১.০৪.১৯৭৭-৩০.০৫.১৯৮১) বাংলাদেশের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী;স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।
জামাল উদ্দিন আহমেদ ১৯২৯ ২৩ আগস্ট ১৯৭৯-১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ ০৪ জানুয়ারি ২০১৫ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শাহ আজিজুর রহমান (১৫.০৪.১৯৭৯-২৪.০৩.১৯৮২) জিয়াউর রহমান (২১.০৪.১৯৭৭-৩০.০৫.১৯৮১)

আবদুস সাত্তার( ৩০.০৫.১৯৮১–২৪.০৩.১৯৮২)

শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।
এস. এ. বারী ২৮ মার্চ ১৯২৭ ২৩ আগস্ট ১৯৭৯-২৭ নভেম্বর ১৯৮১ ০৩ মার্চ ১৯৮৭ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শাহ আজিজুর রহমান (১৫.০৪.১৯৭৯-২৪.০৩.১৯৮২) জিয়াউর রহমান (২১.০৪.১৯৭৭-৩০.০৫.১৯৮১)

আবদুস সাত্তার( ৩০.০৫.১৯৮১–২৪.০৩.১৯৮২)

জনশক্তি উন্নয়ন,সমাজকল্যাণ,মৎস্য ও পশুপালন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।
এম এ মতিন আনু.১৯৩২ ০৯ জুলাই ১৯৮৬–১৩ আগস্ট ১৯৮৯ ১৩ জুন ২০১২ জাতীয় পার্টি মিজানুর রহমান চৌধুরী (০৯.০৭.১৯৮৬–২৭.০৩.১৯৮৮)

মওদুদ আহমেদ (২৭.০৩.১৯৮৮-১২.০৮.১৯৮৯)

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ (১১.১২.১৯৮৩–০৬.১২.১৯৯০) যোগাযোগ,স্বরাষ্ট্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে।
কাজী জাফর আহমেদ ০১ জুলাই ১৯৩৯ ০৯ জুলাই ১৯৮৬-১০ আগস্ট ১৯৮৭
            এবং 

২৭ মার্চ ১৯৮৮-১২ ডিসেম্বর ১৯৯০

২৭ আগস্ট ২০১৫ জাতীয় পার্টি মিজানুর রহমান চৌধুরী (০৯.০৭.১৯৮৬–২৭.০৩.১৯৮৮)

মওদুদ আহমেদ (২৭.০৩.১৯৮৮-১২.০৮.১৯৮৯)

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ (১১.১২.১৯৮৩–০৬.১২.১৯৯০) বাণিজ্য,বন্দর জাহাজ চলাচল ও অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল,তথ্য মন্ত্রণালয় এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্বে
মওদুদ আহমেদ ২৪ মে ১৯৪০ ০৯ জুলাই ১৯৮৬–২৭ মার্চ ১৯৮৮ ১৬ মার্চ ২০২১ জাতীয় পার্টি মিজানুর রহমান চৌধুরী (০৯.০৭.১৯৮৬–২৭.০৩.১৯৮৮) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ (১১.১২.১৯৮৩–০৬.১২.১৯৯০) শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ১০ জানুয়ারি ১৯৩৯ ২০ নভেম্বর ১৯৮৭-০৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ জাতীয় পার্টি মিজানুর রহমান চৌধুরী (০৯.০৭.১৯৮৬–২৭.০৩.১৯৮৮)

মওদুদ আহমেদ (২৭.০৩.১৯৮৮-১২.০৮.১৯৮৯) কাজী জাফর আহমেদ (১২.০৮.১৯৮৯-০৬.১২.১৯৯০)

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ (১১.১২.১৯৮৩–০৬.১২.১৯৯০) স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়,শ্রম ও জনশক্তি এবং খাদ্য মন্ত্রণালায়ের দায়িত্বে

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Former deputy prime minister Jamal Uddin Ahmad dies"Bdnews24.com। ২০১৫-০১-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০১-০৪
  2. jagonews24.com। "সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী জামাল উদ্দিন আহমদের ইন্তেকাল"jagonews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১৬
  3. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী জামাল উদ্দিনের ইন্তেকাল"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১৬
  4. "সাবেক মন্ত্রী ডা. এম এ মতিন আর নেই"বিডিনিউজ.কম। ১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  5. "'উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি গুজব, রদবদল হতে পারে মন্ত্রিসভায়'"m.poriborton.news। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১৬
  6. "প্রয়োজন দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন ছোট মন্ত্রিসভা"প্রিয়.কম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১৬
  7. "বিরোধীদলীয় নেতার পদকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা চান এরশাদ"Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১৬
  8. "'উপ প্রধানমন্ত্রী' মর্যাদা চান এরশাদ"Dhaka Tribune Bangla। ২০১৯-০১-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-১৬
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.