বাঁধন হারা
বাঁধন হারা বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি পত্রোপন্যাস। বাঁধন হারা নজরুল রচিত প্রথম উপন্যাস। করাচিতে থাকাকালীন তিনি 'বাঁধন হারা' উপন্যাস রচনা শুরু করেন। মোসলেম ভারত পত্রিকায় বাঁধন হারা-র প্রথম কিস্তি এবং ১৯২১ সালে (১৩২৭ বঙ্গাব্দ) ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯২৭ সালে জুন মাসে (শ্রাবণ, ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ) এটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।[1] এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রোপন্যাস।[2]
লেখক | কাজী নজরুল ইসলাম |
---|---|
অনুবাদক | তানভিরুল হক, আসফা খাতুন, শিরীন হাসানাত ইসলাম, আয়েশা কবীর, জ্যাকি কবির, সায়েদা করিম খান, শাহরুখ রহমান ও নিয়াজ জামান |
প্রচ্ছদ শিল্পী | কাইয়ুম চৌধুরী |
দেশ | ভারত বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ধরন | পত্র উপন্যাস |
প্রকাশিত | জুন ১৯২৭ |
প্রকাশক | মোসলেম ভারত (১৯২১), আগামী প্রকাশনী (২০১৩) |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ১০৩ |
আইএসবিএন | ৯৮৪ ৭০০০৬ ০১৫৩ ৭ আইএসবিএন বৈধ নয় |
কাহিনী সংক্ষেপ
নুরু মাহবুবা একে অন্যকে পছন্দ করে এবং তাদের বিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। এই সময়ে নুরু বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগদান করে। নুরুর সেনাবাহিনীতে যোগদানের পিছনে দেশ ও জাতিকে রক্ষার কোন তাগিদ ছিল না। মাহবুবা, রাবেয়া ও সাহসিকা বাল্যসখী ও তাদের মধ্যে পত্র যোগাযোগ হয়। সাহসিকা তার নামের মতই সাহসী ও প্রতিবাদী। চিরকুমারী সাহসিকা নারীদের উপর অন্যায়ের প্রতিবাদ করে। মাহবুবা নুরুল হুদাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। কিন্তু নুরুল হুদা কোনো বাঁধনে জড়াতে চায় না। অবশেষে মাহবুবার বিয়ে হয়ে যায় চল্লিশোর্ধ্ব এক জমিদারের সঙ্গে। কিছুদিন বাদেই মাহবুবা বিধবা হয়ে যায়। নুরুল হুদাকে সে লেখে যে, সে মক্কা ও মদিনায় তীর্থ ভ্রমণে যাবে এবং নুরুল হুদার কর্মস্থল বাগদাদেও যেতে পারে। নুরুল হুদা মাহবুবাকে নিষেধ করে না। তাদের দুজনের দেখা হওয়ার সম্ভাবনার মাধ্যমে শেষ হয় উপন্যাসটি।
প্রধান চরিত্র
'বাঁধন হারা' উপন্যাসে মোট চরিত্রের সংখ্যা দশটি -
- নুরুল হুদা
- মাহবুবা
- রাবেয়া
- সাহসিকা
- আয়েশা
- খুকি/ আনারকলি
- মা/রোকেয়া
- মনুয়ার
- রবিউল
- সোফিয়া
রাবেয়া ও রবিউল দম্পতির শিশুকন্যা খুকি বা আনারকলি ছাড়া প্রত্যেকেই চিঠিতে নিজেদের চরিত্র ও ভাবনা ধরে।[3]
বৈশিষ্ট্য
এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রোপন্যাস।[2][3] নজরুল বাঁধন হারা'র মাধ্যমে বাঙালিদের প্রথম আধুনিক যুদ্ধ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জ্ঞাত করেছেন। উপন্যাসে নজরুলের সামরিক জীবনের অভিজ্ঞতার ছাপ রয়েছে। তবে এটি যুদ্ধের অভিজ্ঞতায় প্রেমের আখ্যান।[3]
অনুবাদ
২০১৩ সালের ঢাকা রিডিং সার্কেলের একদল অনুবাদক - তানভিরুল হক, আসফা খাতুন, শিরীন হাসানাত ইসলাম, আয়েশা কবীর, জ্যাকি কবির, সায়েদা করিম খান, শাহরুখ রহমান ও নিয়াজ জামান, 'বাঁধন হারা' উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ করেন। শহীদ কাজী'র প্রচ্ছদে অনুবাদ কর্মটি 'আনফেটার্ড' শিরোনামে ঢাকার নিমফিয়া পাবলিকেশন হতে প্রকাশিত হয়।[3][4]
তথ্যসূত্র
- ইমন, নাজমুল হক (২৭ আগস্ট ২০১৫)। "কাজী নজরুল ইসলামের কয়েকটি বই"। দৈনিক মানবকণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৬।
- শেখর, সৌমিত্র (২০০৪)। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেট (দোতলা), কাটাবন, ঢাকা: অগ্নি পাবলিকেশন্স। আইএসবিএন 984-32-3217-8।
- রাসেল, আজিজুল (২০১৩-০৮-২৯)। "'বাঁধনহারা'র সুখপাঠ্য অনুবাদ"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২৩।
- আলম, ফকরুল (২০১৩-০৩-০২)। "Nazrul's Bandhan Hara in English"। দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২৩।
বহিঃসংযোগ
- গুড রিডস-এ বাঁধন হারা
- রকমারি.কম-এ বাঁধন হারা