বহড়ু

বহড়ু হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগর ১ ব্লকের অন্তর্গত একটি শহর। এই শহরটি জয়নগর থানার আওতাধীন।

বহড়ু
শহর
বহড়ু
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২.২০৪০° উত্তর ৮৮.৪২৮৩° পূর্ব / 22.2040; 88.4283
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাদক্ষিণ চব্বিশ পরগণা
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট১৬,১৫৫
ভাষা
  প্রাতিষ্ঠানিকবাংলা
সময় অঞ্চলIST (ইউটিসি+৫:৩০)
ওয়েবসাইটs24pgs.gov.in

ইতিহাস

বহড়ু দক্ষিণবঙ্গের এক প্রাচীন জনপদ। রায়মঙ্গল কাব্যে উল্লেখ আছে 'বড়ুক্ষেত্র'-এর। মধ্যযুগের 'বড়ুক্ষেত্র' আজকের বহড়ু গ্রাম ও বহড়ুক্ষেত্র গ্রাম পঞ্চায়েত। ঊনবিংশ শতকের প্রথম ভাগে জনৈক নন্দকুমার বসু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লবণ বিভাগের দেওয়ান নিযুক্ত হন ও বহড়ুর জমিদারী লাভ করেন। তিনি কিছুকাল রাজপুতানার জয়পুর রাজ্যেরও দেওয়ান ছিলেন। সেই সময় তিনি বৃন্দাবনের তিন প্রধান দেবতা গোবিন্দ, গোপীনাথ ও মদনমোহনের জন্য তিনটি মন্দির নির্মাণ করার অনুমতি চান জয়পুরের রাজার কাছে। জয়পুরের রাজার অনুমতি পেয়ে ১৮১৯ থেকে ১৮২১ সালের মধ্যে তিনি জয়পুরে তিনটি মন্দির নির্মাণ করেন। এরপর তিনি স্থির করেন যে তার বৃদ্ধা মায়ের জন্য বহড়ুতেই মথুরা-বৃন্দাবন স্থাপন করবেন। সেই মত তিনি জয়পুর রাজ্যের চুনার থেকে পাথর ও স্থপতি আনিয়ে বহড়ুতে শ্যামসুন্দরের মন্দির নির্মাণ করেন। ১৮২৫ সালে মন্দিরের গাত্রে দেওয়ালচিত্র অঙ্কন করেন বর্ধমান জেলার দাঁইহাটের শিল্পী গঙ্গারাম ভাস্কর। পরবর্তীকালে বসু পরিবার বহড়ুতে পাঁচটি শিব মন্দির নির্মাণ করেন।[1]

ভৌগোলিক বিবরণ

বহড়ু গ্রামটি জয়নগর মজিলপুর শহরের পাঁচ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এটি সড়কপথে কুলপি রোড ও রেলপথে শিয়ালদহ-নামখানা লাইন দ্বারা দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার অন্যান্য স্থান ও কলকাতার সাথে সুসংযুক্ত।

শিক্ষা

১৮৫৬ সালে স্থাপিত বহড়ু উচ্চ বিদ্যালয় একটি বাংলা মাধ্যমের সরকারী সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালাভ করেন। বিদ্যালয়ের নিজস্ব গ্রন্থাগার ও ক্রীড়াঙ্গণ আছে। বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা আছে। ১৯৫৪ সালে স্থাপিত বহড়ু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় একটি বাংলা মাধ্যমের সরকারী স্ত্রীশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীরা বিদ্যালাভ করেন। বিদ্যালয়ের নিজস্ব গ্রন্থাগার ও ক্রীড়াঙ্গণ আছে। বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা আছে। ১৮৬০ সালে স্থাপিত হয় বহড়ু বালিকা মুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি একটি বাংলা মাধ্যমের সরকারী প্রাথমিক সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্রীড়াঙ্গণ আছে ও মিড ডে মিলের ব্যবস্থা আছে। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত বহড়ু দীঘিরপাড় মুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি বাংলা মাধ্যমের সরকারী প্রাথমিক সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ের নিজস্ব গ্রন্থাগার ও ক্রীড়াঙ্গণ আছে ও মিড ডে মিলের ব্যবস্থা আছে। ১৯৯৮ সালে স্থাপিত বহড়ু চিলড্রেন্‌স্‌ অ্যাকাডেমি একটি বাংলা মাধ্যমের বেসরকারী প্রাথমিক সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দীঘিরপাড়ে একটি অস্বীকৃত মাদ্রাসা আছে।

তথ্যসূত্র

  1. ঘোষ, বিনয় (জানুয়ারী ১৯৮০)। পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি। প্রকাশ ভবন। পৃষ্ঠা 237–239।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.