বর্ণনামূলক নীতিশাস্ত্র
বর্ণনামূলক নীতিশাস্ত্র (Descriptive ethics) হচ্ছে মানুষের নৈতিকতা সম্পর্কিত বিশ্বাস সংক্রান্ত পাঠ।[1] একে তুলনামূলক নীতিশাস্ত্রও বলা হয়। বিধান নীতিশাস্ত্র বা আদর্শগত নীতিশাস্ত্র (যা কীভাবে মানুষ কাজ করতে বাধ্য সে সম্পর্কে আলোচনা করে), এবং পরানীতিশাস্ত্র (যা নৈতিক শব্দ এবং তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করে) এর সাথে এর তুলনা করা হয়। নীতিশাস্ত্রের বিভিন্ন শাখাকে নিম্নোক্ত প্রশ্নাবলির সাহায্যে তুলনা করা যায়।
- বর্ণনামূলক নীতিশাস্ত্র: কোনটি সঠিক- এটা মানুষ কীভাবে চিন্তা করে?
- পরানীতিশাস্ত্র: "সঠিক" অর্থ কী?
- আদর্শগত (বিধান) নীতিশাস্ত্র: কীভাবে ব্যক্তির কাজ করা উচিত?
- ফলিত নীতিশাস্ত্র: আমরা কীভাবে নৈতিক জ্ঞান গ্রহণ করি এবং তার প্রয়োগ করি?
বর্ণনামুলক নীতিশাস্ত্র কী
বর্ণনামুলক নীতিশাস্ত্র ব্যক্তি বা দলবদ্ধ মানুষের আচরণ সংক্রান্ত প্রায়োগিক গবেষণার অংশ। অন্য কথায় এটি দর্শন বা সাধারণ নীতিশাস্ত্রেরই অংশ যা ইন্দ্রিয়গাহ্য বিষয়কে বর্ণনা করার উদ্দেশ্যের সাথে নৈতিক সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণ করতে অন্তর্ভুক্ত থাকে। যারা বর্ণনামুলক নীতিশাস্ত্রে কাজ করে; তাদের লক্ষ্য হলো মুল্য আছে এরুপ মানুষের বিশ্বাসকে অনাচ্ছাদিত করা; কাজ সৎ না অসৎভাবে করছে; এসব বিষয়গুলো বর্ণনামুলক নীতিশাস্ত্র তত্বাবধান করে। বর্ণনামুলক নীতিশাস্ত্র মানুষের নৈতিক আদর্শকে তদন্ত করে দেখে। সেখান থেকেই নির্ধারিত হয়; সমাজে কোন কাজ পুরস্কৃত হবে অথবা কোন কাজ আইন অথবা রাজনীতি অনুসারে সাজাপ্রাপ্ত হবে। এই যে নানান নিয়ম কানুনের সংস্কৃতি; এটা ধ্রুব নয়, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পরিবর্তিত হয়। এইভাবেই নতুন প্রজন্ম তাদের নতুন নৈতিকতার সেট নিয়ে আবির্ভুত হয় এবং তাদের মত করে নীতিশাস্ত্র রচনা করে।
বর্ণনামুলক নীতিশাস্ত্র বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান, মনস্তত্ব, সমাজবিজ্ঞান অথবা নৃবিজ্ঞানেও আলোচিত হয়। বর্ণনামুলক নীতিশাস্ত্র থেকে যে তথ্য (Information) বের হয়ে আসে; তা দর্শনের বিতর্কে (philosophical arguments) ব্যবহৃত হয়।
ভ্যালু তত্ব হয় নিয়মাত্মক অথবা বর্ণানাত্মক হতে পারে। কিন্তু সচরাচর এটি বর্ণনাত্মক হতে পারে।
তথ্যসূত্র
- Vincent Icheku; Vincent Icheku (৩১ আগস্ট ২০১১)। Understanding Ethics and Ethical Decision-Making। Xlibris Corporation। আইএসবিএন 978-1-4653-5131-9।