বড়দিনের প্রাক্কাল
বড়দিনের প্রাক্কাল বলতে বড়দিনের আগের দিন, বিশেষত বড়দিনের আগের সন্ধ্যাটিকে বোঝানো হয়। বড়দিন হল যিশুখ্রিস্টের জন্ম উদযাপনকারী দিবস, যা সারা বিশ্ব জুড়ে পালন করা হয়। যিশুখ্রিস্ট ঠিক কোন্ তারিখে জন্ম নিয়েছিলেন, তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ৩৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে পুণ্যপিতা (পোপ) ১ম জুলিয়াসের নির্দেশ অনুযায়ী খ্রিস্টান মন্ডলীগুলি ২৫শে ডিসেম্বর তারিখের দিবসটিকে প্রতীকীভাবে খ্রিস্টের জন্মবার্ষিকী তথা বড়দিন হিসেবে পালন করে আসছে। বড়দিনের প্রাক্কাল হল ২৪শে ডিসেম্বর। অনেক দেশে বড়দিনের প্রাক্কালটিকেও পূর্ণ বা আংশিক ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই দুইটি দিনকে একত্রে সাংস্কৃতিক দৃষ্টিতেও পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব-পর্ব হিসেবে গণ্য করা হয়।
বড়দিনের প্রাক্কাল | |
---|---|
পালনকারী | খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীগণ বহু অ-খ্রিস্টান[1] |
ধরন | খ্রিস্টান, সাংস্কৃতিক |
তাৎপর্য | যিশুখ্রিস্টের জন্মদিনের (বড়দিন) আগের দিন বা সন্ধ্যা |
পালন | উপহার ক্রয়, উপহার প্রদান, ছুটির শুভেচ্ছা সম্ভাষণ, মধ্যরাত্রির খ্রিস্টযোগ, অন্যান্য গির্জা সেবা, ভোজ, বড়দিনের জন্য প্রস্তুতি |
তারিখ |
|
সংঘটন | বার্ষিক |
সম্পর্কিত | বড়দিন, বড়দিনের পর্ব, নববর্ষের প্রাক্কাল (গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি) |
খ্রিস্টধর্মের পশ্চিমী ধারাগুলিতে বহুদিন ধরেই বড়দিনের প্রাক্কালেই বড়দিনের উৎসব শুরু হওয়ার চল। এর একটি কারণ হল খ্রিস্টীয় যাজকীয় দিবস সূর্যাস্তের সাথে সাথেই শুরু হয়ে যায়; সূর্যাস্তের সাথে সাথে দিবস শুরু করার এ প্রথাটি ইহুদী ঐতিহ্য থেকে এসেছে। এছাড়া খ্রিস্টধর্মের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে বিশ্বসৃষ্টির যে কাহিনী আছে, তাতে বলা হয়েছে "সন্ধ্যা হল এবং এরপর সকাল হল। এই হল প্রথম দিন।" খ্রিস্টধর্মের অনেক মন্ডলী বড়দিনের প্রাক্কালেই গির্জার ঘণ্টা বাজিয়ে থাকে ও সেই সন্ধ্যাতেই বিশেষ প্রার্থনাসভার আয়োজন করে থাকে। খ্রিস্টীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী যিশু রাত্রিতে জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণে বড়দিনের প্রাক্কালে মধ্যরাত্রিতে বিশেষ প্রার্থনা তথা মাঝরাতের খ্রিস্টযোগ অনুষ্ঠিত হয়। বড়দিনের প্রাক্কালকে অনেক ভাষাতেই পবিত্র রাত্রি বা পুণ্য রাত্রি (যেমন জার্মান ভাষায় "হাইলিগে নাখ্ট" Heilige Nacht; স্পেনীয় ভাষায় "নোচেবুয়েনা" Nochebuena) নামে ডাকা হয়। ইংরেজি ভাষাতে একে সাধারণত "ক্রিসমাস ইভ" (Christmas Eve) নামে ডাকা হয়।
খ্রিস্টধর্মের প্রাক্কালে অনেক সাংস্কৃতিক প্রথার প্রচলন আছে। যেমন ঐ সন্ধ্যায় পরিবার ও বন্ধুবান্ধবেরা একত্রিত হয়, বড়দিনের স্তবগান গাওয়া হয়, বড়দিনের বৃক্ষ, আলোকসজ্জা ও অন্যান্য অলঙ্করণ করা হয়। এদিন পরিবার ও বন্ধুবান্ধব একে অপরকে মোড়কবন্দী উপহার প্রদান করে থাকে, যেগুলি সবার সামনে খুলে গ্রহণ করা হয়।
তথ্যসূত্র
- Christmas as a Multi-faith Festival—BBC News. Retrieved 24 November 2011.
- "Christmas is here- yet again!The Holy Land is unique in celebrating Christmas three times; on December 25th, January 6th and January 19th"। JPost।
- Ramzy, John। "The Glorious Feast of Nativity:? 29 Kiahk? 25 December?"। Coptic Orthodox Church Network। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১১।