ফো

ফো (ভিয়েতনামীয় ভাষায় Phở) ভিয়েতনামের একটি নুডুলসের স্যুপ, যা তৈরি হয় ঝোল, বান ফো নামীয় চালের নুডুলস, কিছু ভেষজ এবং মুরগী অথবা গরুর মাংস দ্বারা। ফো ভিয়েতনামের একটি জনপ্রিয় রাস্তার খাবার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁ গুলোতে এটি বিশেষ খাবার হিসেবে পরিবেশিত হয়।

ফো (Phở)
ধরননুডূলস সুপ
উৎপত্তিস্থলভিয়েতনাম
অঞ্চল বা রাজ্যহ্যানয়, নাম দিন প্রদেশ (Nam Định)
প্রধান উপকরণভাতের নুডুলস, গরুর মাংস বা মুরগীর মাংস
ভিন্নতামুরগীর মাংসের ফো (phở gà), পাতলা করে কাটা গরুর মাংসের টুকরা উপরে দিয়ে ফো (phở tái)

ফো এর উৎপত্তি হয় বিংশ শতকের শুরুতে উত্তর ভিয়েতনামে এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধের শরণার্থীদের দ্বারা এটি সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা পায়।যেহেতু, ফো এর উৎপত্তি সুষ্ঠুভাবে লিপিবদ্ধ নেই, তাই ভিয়েতনামে এর সাংস্কৃতিক প্রভাব নিয়ে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। হানোয় এবং সায়গন ফো এর নুডুলসের প্রস্থ, ঝোলের মিষ্টতা এবং ভেষজ ব্যবহারের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

ইতিহাস

ফো এর উৎপত্তি হয় বিংশ শতাব্দীর শুরুতে, উত্তর ভিয়েতনামে, হানোয় এর দক্ষিণপূর্বে নাম ডিন প্রদেশে। ঐতিহ্যগতভাবে ফো এর আঁতুড়ঘর ধরা হয় ভান চু এবং ডাম চু গ্রামকে। গ্রামবাসীদের মতে ফো ভান চু গ্রামে ফরাসী ঔপনিবেশিক যুগের আগে থেকেই খাওয়া হত।

ফো এর জনপ্রিয়তা আসে ফরাসী উপনিবেশ স্থাপনের পর, যখন গরুর মাংসের আমদানী বৃদ্ধি পায় তারপর। চীনের ইউনান এবং কুয়াংতোং প্রদেশের শ্রমিকেরা একে জনপ্রিয় করে তোলে কেননা ফো এর স্বাদ তাদের স্থানীয় খাবারের মত ছিল।

ফো সাধারনত ফেরিওয়ালারা ভোরে এবং সন্ধ্যায় তাদের ভ্রাম্যমাণ চুলায় নিয়ে বিক্রি করতেন। তাদের ভ্রাম্যমাণ চুলার দুটো অংশ থাকত, এক অংশে কাঠ দিয়ে জ্বালানো আগুন এবং আরেক অংশে নুডুলস , মসলা ,ভেষজ এবং মাংস থাকত.

উন্নতি

১৯২০ এর শেষের দিকে দোকানিরা ফো এর স্বাদ নিয়ে বিভিন্ন নিরীক্ষণ করা শুরু করেন। ১৯৩০ সালের দিকে হালকা করে ভাজা গরুর মাংসের সাথে ফো পরিবেশন শুরু হয়। মুরগীর মাংস দিয়ে ফো রান্না শুরু হয়, সম্ভবত সোমবার এবং শুক্রবারে গরুর মাংস বিক্রি না হওয়ার জন্য।

১৯৫৪ সালের ভিয়েতনামের বিভক্তির পর লক্ষ লক্ষ মানুষ উত্তর ভিয়েতনাম থেকে পালিয়ে দক্ষিণ ভিয়েতনাম যায়। তখন দক্ষিণ ভিয়েতনামে ফো জনপ্রিয় হয়ে উঠে ,যদিও পূর্বে তা ওত জনপ্রিয় ছিল না। কেবল উত্তর ভিয়েতনামে আটকে না থাকার জন্য এখন ফো এর বিভিন্ন প্রকারভেদ দেখা যায়।

এদিকে উত্তর ভিয়েতনামে সমস্ত ফো এর দোকানের জাতীয়করণ হয়, এবং তারা পুরানো চালের নুডুলস ব্যবহার শুরু করে।রাস্তার দোকানীরা আমদানীকৃত আলুর ময়দা দিয়ে নুডুলস বানাতে বাধ্য হন, এসময়। পুঁজিবাদ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার জন্য দোকানীরা ভ্রাম্যমাণ না থেকে প্লাস্টিকের টুল ব্যবহার আরম্ভ করেন।

বিশ্বায়ন

ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর ,ভিয়েতনামী শরণার্থীরা ফোকে বিভিন্ন দেশে নিয়ে আসেন। ফো ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা সহ বিভিন্ন দেশের এশীয় উপনিবেশে ফো এর দোকান খোলা হয়। ১৯৮০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার অরেঞ্জ কাউন্টিতে প্রথম ফো এর দোকান খোলা হয়।

৯০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনামের সম্পর্ক উন্নয়নের সাথে সাথে ফো যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয়তা পায়। ২০০০ সালের দিকে ফো বছরে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি বিক্রি হয়। ফো এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজের ক্যাফিটেরিয়াতেও পাওয়া যায়। সিএনএনের জরিপে ফো কে বিশ্বের ২৮ তম সুস্বাদু খাবার ধরা হয়।

উপাদান এবং প্রস্তুত প্রণালী

ফো পরিবেশন করা হয় নির্দিষ্ট কাটের চালের নুডুলস,

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.