ফুকুশিমা প্রশাসনিক অঞ্চল
ফুকুশিমা প্রশাসনিক অঞ্চল (福島県? ফুকুশিমা কেন্) হল জাপানের মূল দ্বীপ হোনশুর তোওহোকু অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।[2] এর রাজধানী ফুকুশিমা নগর।[3]
ফুকুশিমা প্রশাসনিক অঞ্চল 福島県 | |
---|---|
প্রশাসনিক অঞ্চল | |
জাপানি প্রতিলিপি | |
• জাপানি | 福島県 |
• রোমাজি | Fukushima-ken |
পতাকা | |
দেশ | জাপান |
অঞ্চল | তোওহোকু |
দ্বীপ | হোনশু |
রাজধানী | ফুকুশিমা নগর |
সরকার | |
• গভর্নর | মাসাও উচিবোরি |
আয়তন | |
• মোট | ১৩,৭৮২.৭৬ বর্গকিমি (৫,৩২১.৫৫ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ৩য় |
জনসংখ্যা (2015-05-01[1]) | |
• মোট | ১৯,২৮,০৮৬ |
• ক্রম | ১৭শ |
• জনঘনত্ব | ১৫৪/বর্গকিমি (৪০০/বর্গমাইল) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | JP-07 |
জেলা | ১৩ |
পৌরসভা | ৫৯ |
ফুল | নেমোতোশাকুনাগে (রোডোডেন্ড্রন ব্র্যাকিকার্পাম) |
গাছ | জাপানি যেলকোভা (যেলকোভা সেরাটা) |
পাখি | নার্সিসাস ফ্লাইক্যাচার (ফিকেডুলা নার্সিসিনা) |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
মেইজি পুনর্গঠনের আগে পর্যন্ত ফুকুশিমা অঞ্চলটি মুৎসু প্রদেশের অন্তর্গত ছিল।[4] পঞ্চম শতাব্দী নাগাদ ‘সভ্য জাপান’-কে ‘উত্তুরে অসভ্য’-দের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য শিরাকাওয়া প্রাচীর ও নাকোসো প্রাচীর তৈরি হয়। ৬৪৬ খ্রিঃ তাইকা সংস্কারের সময় ফুকুশিমা মুৎসু প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়।[5] ৭১৮ খ্রিঃ ইওয়াসে ও ইওয়াকি নামক দুটি নতুন প্রদেশ তৈরি হয়, কিন্তু ৭২২ থেকে ৭২৪ খ্রিঃ এর মধ্যে এগুলি আবার মুৎসুর অন্তর্ভুক্ত হয়।[6]
১৮৮২ খ্রিঃ মিশিমা মিচিৎসুনে ফুকুশিমার শাসকের পদে আসীন হলে একটি বড় বিদ্রোহ ঘটে। এই বিদ্রোহ ফুকুশিমা ঘটনা বলে পরিচিত।
২০১১ ভূমিকম্প ও ক্ষয়ক্ষতি
২০১১ তোওহোকু ভূমিকম্প ও সুনামি এবং তৎসঞ্জাত ফুকুশিমা দাইচি নিউক্লীয় দুর্ঘটনায় ফুকুশিমা প্রশাসনিক অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সর্বাধিক দুর্ভোগ সহ্য করতে হয় পূর্বের উপকূলভাগে হামা-দোওরি অঞ্চলকে।
২০১১ খ্রিঃ ১১ই মার্চ, স্থানীয় সময় দুপুর ২ টো ৪৬ মিনিটে একটি ৯ মাত্রার ভূমিকম্প মিয়াগি প্রশাসনিক অঞ্চলের উপকূলভাগে আঘাত করে। জাপান আবহবিদ্যা নিয়োগের শিন্দো ভূকম্প মাপক স্কেলে হামা-দোওরি সহ ফুকুশিমার পূর্বদিকের বিভিন্ন স্থানে ৬ মাত্রার বেশি কম্পন অনুভূত হয়; পশ্চিমে আইযু ইত্যাদি অঞ্চলে কম্পনের মাত্রা ২ এর কাছাকাছি নেমেছিল। নাকা-দোওরি অঞ্চলে অবস্থিত রাজধানী নগর ফুকুশিমায় কম্পনের মাত্রা ছিল ৬ এর সামান্য কম।[7]
এই ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন স্থান থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর আসে। ফুজিনুমা বাঁধ বিকল হয়ে যায়[8] এবং বিভিন্ন অঞ্চলে ধস নামে।[9] ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট বিধ্বংসী সুনামিটি পূর্বে উপকূলে আঘাত করে বিপুল প্রাণহানির কারণ হয়।
ভূমিকম্পের পরবর্তী দুই বছরে ফুকুশিমা প্রশাসনিক অঞ্চলের ১৮১৭ জন অধিবাসীকে হয় মৃত বলে শনাক্ত করা গেছে, অথবা নিখোঁজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।[10]
ফুকুশিমা দাই-ইচি নিউক্লীয় দুর্ঘটনা
উপর্যুক্ত ভূমিকম্প ও সুনামির ফলে ওকুমায় অবস্থিত ফুকুশিমা দাই-ইচি নিউক্লীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ছয়টি রিয়্যাক্টরের দু’টিতে বিস্ফোরণ হয়, এর পরেই আরও তিনটি রিয়্যাক্টরে আংশিক গলন ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে। নিকটবর্তী অঞ্চলের বহু বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আশেপাশে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাত্রা প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ মিলিসিভার্টে পৌঁছে যায়। সমগ্র জাপানে বিকিরণের মাত্রায় লক্ষ্যণীয় বিবর্ধন আসে।[11] ১১ই এপ্রিল, ২০১১ তে অধিকর্তারা পারমাণবিক দুর্ঘটনার ৭ মাত্রার স্কেলে ফুকুশিমা দাই-ইচিকে সর্বোচ্চ মাত্রা ৭ দিয়ে ব্যাখ্যা করেন। ১৯৮৬ খ্রিঃ চের্নোবিল দুর্ঘটনার পর এত বড় পারমাণবিক দুর্ঘটনা কোথাও হয়নি।[12] অনেক মাস পরে ঘটনাস্থলের ২০ কিমি ব্যাসার্ধের অন্তর্বর্তী অঞ্চলকে জনবসতি স্থাপনের জন্য নিরাপদ ঘোষণা করা হয়, যদিও বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অতি নিকটস্থ অঞ্চল তখনও বিপজ্জনক ছিল।[13]
ভূগোল
ফুকুশিমা হল তোওহোকু অঞ্চলের দক্ষিণতম ও টোকিওর নিকটতম প্রশাসনিক অঞ্চল। উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত সমান্তরাল পর্বতশ্রেণী দ্বারা এটি তিনটি উপাঞ্চলে বিভক্ত। পশ্চিম থেকে পূর্বে এই উপাঞ্চলগুলি হল যথাক্রমে আইযু, নাকাদোওরি ও হামাদোওরি।
উপকূলীয় হামাদোওরি অঞ্চল প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত, সর্বাপেক্ষা সমতল ও সমভাবাপন্ন জলবায়ুর জায়গা। নাকাদোওরি হল কৃষিপ্রধান মধ্যাঞ্চল; রাজধানী নগরটি এখানে অবস্থিত। আইযু উপাঞ্চলের পর্বতগুলিতে আছে নয়নাভিরাম হ্রদ, ঘন বন ও শীতে দৃষ্ট তুষারপাত।
২০১২ এর এপ্রিলের হিসেব অনুযায়ী সমগ্র প্রশাসনিক অঞ্চলটির ১৩ শতাংশ সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বান্দাই-আসাহি, নিক্কোও ও ওযে হল জাতীয় উদ্যান; এচিগো সান্যান-তাদামি হল উপ-জাতীয় উদ্যান। এছাড়া ১১টি প্রশাসনিক আঞ্চলিক উদ্যান আছে।[14]
তথ্যসূত্র
- National Census 2015 Preliminary Results
- Nussbaum, Louis-Frédéric. (2005). "Fukushima-ken" in গুগল বইয়ে Japan Encyclopedia, p. 218, পৃ. 218,; "Tōhoku" in গুগল বইয়ে p. 970, পৃ. 970,
- Nussbaum, "Fukushima" in গুগল বইয়ে p. 218, পৃ. 218,
- Nussbaum, "Provinces and prefectures" in গুগল বইয়ে p. 780, পৃ. 780,
- Takeda, Toru et al. (2001). Fukushima – Today & Tomorrow, p. 10.
- Meyners d'Estrey, Guillaume Henry Jean (1884). গুগল বইয়ে Annales de l'Extrême Orient et de l'Afrique, Vol. 6, p. 172, পৃ. 172,; Nussbaum, "Iwaki" in গুগল বইয়ে p. 408, পৃ. 408,
- "Felt earthquakes" (পিডিএফ)। Japan Meteorological Agency। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২৩, ২০১১।
- "東北・関東7県で貯水池、農業用ダムの損傷86カ所 補修予算わずか1億、不安募る梅雨"। msn産経ニュース। ২৬ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৯, ২০১১।
- "新たに女性遺体を発見 白河の土砂崩れ"। 47NEWS। নভেম্বর ২৫, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৯, ২০১১।
- "Damage Situation and Police Countermeasures... March 11, 2013" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত জুন ২৩, ২০১৭ তারিখে National Police Agency of Japan. Retrieved March 18, 2013.
- "Japan quake: Radiation rises at Fukushima nuclear plant"। BBC News। মার্চ ১৫, ২০১১।
- "Fukushima crisis raised to level 7, still no Chernobyl"। NewScientist। এপ্রিল ১২, ২০১১।
- Fukushima Accident. (2013) Encyclopædia Britannica. Retrieved from: http://www.ebscohost.com/academic/research-starters-education
- "General overview of area figures for Natural Parks by prefecture" (পিডিএফ)। Ministry of the Environment। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২৬, ২০১২।