ফজলে রাব্বী মিয়া
ফজলে রাব্বী মিয়া (১৫ এপ্রিল ১৯৪৬ - ২২ জুলাই ২০২২) ছিলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। এছাড়া তিনি গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন।[1][2]
এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া | |
---|---|
গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ | |
পূর্বসূরী | আসন শুরু |
উত্তরসূরী | মতিয়র রহমান টুকু |
কাজের মেয়াদ ১২ জুন ১৯৯৬ – ১ অক্টোবর ২০০১ | |
পূর্বসূরী | মতিয়র রহমান টুকু |
উত্তরসূরী | রওশন এরশাদ |
কাজের মেয়াদ ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ – ২২ জুলাই ২০২২ | |
পূর্বসূরী | রওশন এরশাদ |
উত্তরসূরী | মাহমুদ হাসান রিপন |
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার | |
কাজের মেয়াদ ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ – ২২ জুলাই ২০২২ | |
পূর্বসূরী | শওকত আলী |
উত্তরসূরী | শামসুল হক টুকু |
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১১ জানুয়ারি ১৯৯০ – ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | গাইবান্ধা জেলা, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) | ১৫ এপ্রিল ১৯৪৬
মৃত্যু | ২২ জুলাই ২০২২ ৭৬) নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | আনোয়ারা রাব্বী (বি. ১৯৭০) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | গাইবান্ধা সরকারি কলেজ |
প্রাথমিক জীবন
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফয়জার রহমান এবং মাতার নাম হামিদুন নেছা (১৯১৪-২০১৬)।[3] ১৯৬১ সালে তিনি গাইবান্ধা কলেজে ভর্তি হন। তিনি বিএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবন
ফজলে রাব্বী মিয়া আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। আইনজীবী থাকার সময় তিনি রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।[4] ১৯৬৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সনদ লাভ করেন। ১৮.১১.১৯৬৮ ইং সালে গাইবান্ধা জেলা বার এসোসিয়েশনে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। গাইবান্ধা জেলা বার এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি ছিলেন। এরপর ১৯৮৮ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সদস্য হন।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৫৮ সালে রাজনীতিতে আসেন ফজলে রাব্বী মিয়া। তখন তিনি অষ্টম শ্রেণীতে পড়তেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান পাকিস্তানে মার্শাল ল’ চালু করেছিলেন। সে সময় ফজলে রাব্বীর চাচা উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। চাচার মাধ্যমে তিনি মার্শাল ল' বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পরেন। এভাবেই তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২-৬৩ সালে শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন করেছিলেন। তিনি গাইবান্ধা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কলেজ ছাত্র সংসদের জি.এস. ছিলেন।[4]
মুক্তিযুদ্ধে যোগদান
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফজলে রাব্বী মিয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ১১ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বৈশ্বিক জনমত গড়ে তুলতে তিনি কাজ করেন।
সংসদ নির্বাচন
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[5][6][7][8] এর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদিয়ে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন।[2]
২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[9][10][11]
১৯৯০ সালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।[4] দশম সংসদ থেকে তিনি আমৃত্যু ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[3][12]
পরিবার
ফজলে রাব্বী মিয়ার স্ত্রীর নাম আনোয়ারা রাব্বী (বি. ১৯৭০), যিনি ২০২০ সালের ২৬ মে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফজলে রাব্বী মিয়া তিন মেয়ের জনক ছিলেন।[13]
মৃত্যু
২০২১ সালের জুনে ফজলে রাব্বী মিয়ার পেটে টিউমার অপারেশন হয়। তবে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আগস্টে তাকে ভারত নেওয়া হয়।[14] এরপর সেখান থেকে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।[15] ২০২২ সালের ২২ জুলাই (বাংলাদেশ সময় ২৩ জুলাই), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ঐ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফজলে রাব্বী মিয়া মৃত্যুবরণ করেন।[16]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- গাইবান্ধা থেকে, সাঘাটা (১৯ আগস্ট ২০১৭)। "গাইবান্ধায় ভালো অবস্থানে ডেপুটি স্পিকার, তবে!"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২৪ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৮।
- "ফজলে রাব্বী মিয়া, আসন নং: ৩৩, গাইবান্ধা-৫, দল: আওয়ামী লীগ (নৌকা)"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৪ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০২০।
- ইসলাম মিঠু, আমিনুল (২০ জুন ২০১৫)। "আমার কোনো ব্যর্থতা নেই, ডেপুটি স্পিকার আমার অর্জন: মো. ফজলে রাব্বি মিয়া"। প্রিয়.কম। ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৮।
- "আমার কোনো ব্যর্থতা নেই, ডেপুটি স্পিকার আমার অর্জন: মো. ফজলে রাব্বি মিয়া"। প্রিয়.কম। ২০১৮-০১-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৪।
- "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০১৬-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-২৪।
- "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার।
- "১১তম সংসদের সদস্যবৃন্দ"। জাতীয় সংসদ। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। ২০১৯-১০-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০১৯।
- "শিরীন শারমিন স্পিকার ও ফজলে রাব্বি ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৪।
- "মারা গেছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া"। bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২২।
- "ভারত গেলেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০২২।
- "ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া আর নেই"। বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২২।
- "চলে গেলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০২২।