প্রাচীন বিশ্বায়ন
প্রাচীন বিশ্বায়ন বিশ্বায়নের ইতিহাসের একটি ধাপ যা সাধারনভাবে একদম প্রথম দিকের সভ্যতা থেকে শুরু করে মোটামুটিভাবে ১৬০০ সাল (পরবর্তী সময়কাল প্রাক আধুনিক বিশ্বায়ন হিসেবে পরিচিত) পর্যন্ত বিস্তৃত সময়ে ঘটে যাওয়া উন্নয়ন ও বিশ্বায়নের ঘটনাগুলোকে নির্দেশ করে। সম্প্রদায় ও রাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক এবং কীভাবে ধারণা ও সামাজিক আদর্শের স্থানীয় ও আঞ্চলিক উভয় পর্যায়ে ভৌগোলিক বিস্তারের মাধ্যমে কীভাবে তা গড়ে ওঠে এই বিষয়গুলো প্রাচীন বিশ্বায়নে বিবৃত হয়।[1]
বিভিন্ন রাষ্ট্র লোভনীয় পণ্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজেদের মাঝে যোগাযোগ ও পণ্য আদান প্রদান শুরু করে। এ ব্যবসার মাধ্যমেই ধর্ম, অর্থনৈতিক কাঠামো ও রাজনৈতিক ধারণা ছড়িয়ে পড়ে। বণিকেরা পরস্পরের সাথে কীভাবে এতটা সম্পর্কিত ও সচেতন হয়ে পড়ে যা পরিষ্কার নয়। বর্তমান সময়ের বিশ্বায়নের সাথে প্রাচীন বিশ্বায়নকে খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে তুলনা করা যায়। এটি শুধুমাত্র নানা অঞ্চলের মাঝে পণ্য বিস্তারের সুবিধাই দেয়নি, সাথে সাথে মানুষকে ভিন্ন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগও করে দিয়েছিল। যে সব নগর ব্যবসায়ে অংশ নিয়েছিল তারা নদী, সামুদ্রিক লেন বা বিস্তৃত মহাসড়কের মাধ্যমে যুক্ত ছিল এবং এর কিছু অতি প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।[2] বাণিজ্য পদ্ধতি কয়েকটি ভৌগোলিক অঞ্চলের মাঝে বিভক্ত ছিল। যার মাঝে ছিল ব্যবসা কেন্দ্র, দূরবর্তী বাজারের জন্য বিপণন অঞ্চল ইত্যাদি।[2] তখনকার সময়ের উপব্যবস্থাগুলো নিজেরা আজকের থেকে অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল এবং নিত্যদিনের টিকে থাকার জন্য পরস্পরের ওপর কম নির্ভরশীল ছিল।[2] লম্বা দূরত্বের বাণিজ্য অনেক পরীক্ষা নিরিক্ষার মাঝে দিয়ে গেলেও তা অনেক লম্বা সময়ের জন্য চলেছিল। পুরো বাণিজ্য ব্যবস্থা যুক্ত হয়েছিল আটটি উপব্যবস্থা নিয়ে যা তিনটি বড় অংশে বিভক্ত ছিল, যা ছিল পশ্চিম ইউরোপীয়, মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে। বাণিজ্যের মাধ্যমে এ পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া আদি সভ্যতার যোগাযোগের মাধ্যমে পরিণত হয়েছিল, যার কারণে আধুনিক বিশ্বায়ন ছড়িয়ে পরে এবং বর্তমান সমাজকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।
বিশ্বায়নের সংজ্ঞা
বিশ্বায়ন হচ্ছে অঞ্চল এবং স্বতন্ত্র ব্যক্তিদের মধ্যে আন্তঃসংযোগ বাড়ানোর প্রক্রিয়া। বিশ্বায়নের ধাপগুলো হল বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ। প্রাচীন বিশ্বায়ন এর ইংরেজি প্রতিশব্দের অংশ “আর্কাইক” শব্দটি প্রাথমিক ঐতিহ্য এবং ক্রিয়া হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে, যা একসময় সমাজে ঐতিহাসিকভাবে স্পষ্ট ছিল কিন্তু সময়ের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিশ্বায়নের প্রধান তিনটি পূর্বশর্ত রয়েছে। প্রথমটি প্রাচ্যে উদ্ভূত ধারণা, যাতে দেখানো হয়েছে কীভাবে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলি এ অঞ্চল থেকে অধিকৃত নীতির অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করেছে।[3] প্রাচ্যের এসব ঐতিহ্যগত ধারণা ছাড়া, পশ্চিমা বিশ্বায়নটি যেভাবে উদ্ভূত হয়েছিল তা হতে পারত না। দ্বিতীয় শর্তটি হচ্ছে দূরত্ব। রাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার যোগাযোগ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত ছিল না এবং প্রায়শই এটি এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের কিছু অংশে সীমিত ছিল।[3] প্রারম্ভিক বিশ্বায়নের ক্ষেত্রে কাছাকাছি অবস্থিত না থাকা অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ রাষ্ট্রগুলোর জন্য কঠিন ছিল। ধীরে ধীরে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি রাষ্ট্রগুলিকে অন্যদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে ও বিশ্বায়নের আরেকটি পর্যায় আনতে সক্ষম হয়। তৃতীয় শর্তটি পারস্পরিকতা, স্থিতিশীলতা এবং ধারাবাহিকতার সাথে সম্পর্কিত। যদি একটি রাষ্ট্র অন্যের উপর নির্ভরশীল না হয় তবে পরস্পরের দ্বারা পারস্পরিক প্রভাবিত হওয়ার কোন উপায় নেই। এটা বৈশ্বিক যোগাযোগের একটি অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি যা ছাড়া বিশ্বায়ন যেভাবে আবির্ভূত হয়েছে তা হতে পারত না এবং রাষ্ট্রকে নিজের উৎপাদন ও সম্পদের উপর নির্ভরশীল হতে হতো। এই ধারনাটি প্রারম্ভিক বিশ্বায়নকে ঘিরে দাঁড় করা বিভিন্ন যুক্তির মাঝে অন্যতম। এটা বলা হয় যে আধুনিক বিশ্বায়নের মত করে প্রাচীন বিশ্বায়ন কাজ করতে পারত না কারণ তখনকার সময়ের রাষ্ট্রগুলো পরস্পরের ওপর বর্তমানকালের মত এতটা নির্ভরশীল ছিল না।[4]
একটি বৈশ্বিক ব্যবস্থার আবির্ভাব
ঐতিহাসিকরা বলেন যে ষোল এবং উনিশ শতকের মধ্যে পুঁজিবাদের উত্থানের আগে বিশ্বাব্যপী একটি ব্যবস্থা ছিল। একে পুঁজিবাদের প্রাথমিক যুগ হিসেবে উল্লেখ করা হয় যেখানে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য, বাজার বিনিময় এবং পুঁজির সংগ্রহ রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিদ্যমান ছিল।[1] আটশত খ্রিষ্টাব্দে গ্রিক, রোমান ও মুসলিম সাম্রাজ্যগুলি চীন ও মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আবির্ভূত হয়েছিল। প্রধান ধর্মগুলো যেমন খ্রিস্ট ধর্ম, ইসলাম ও বৌদ্ধ ধর্ম দূরবর্তী দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে যেখানে অনেকগুলো আজও অপরিবর্তিত রয়েছে। দূরবর্তী বাণিজ্য পথের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি উদাহরণ হচ্ছে সিল্ক রুট, যা চীন ও ভূমধ্যসাগরের সাথে আরবদেশ, দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার মাঝে চলাচল ও বাণিজ্যের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হতো।[5] মূলত প্রাচ্যে বাণিজ্যের মাধ্যমে গড়ে ওঠা এসব সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল এবং তারাই পরবর্তীতে পুঁজিবাদের বিকাশে নেতৃত্ব দেয়। এ সময়েই ক্ষমতা এবং ভূমি অভিজাত ও চার্চের কবল থেকে বুর্জোয়া শ্রেণীর হাতে যায় এবং এর ফলে উৎপাদনে শ্রমের বিভাজন ঘটে।[6] বারো শতকের শেষ এবং তেরো শতকের শুরুর দিকে একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ থেকে শুরু করে চীন পর্যন্ত বিকশিত হয়েছিল।[7]
১৫০০ সালের দিকে অন্যান্য এশীয় সাম্রাজ্যের আবির্ভাব ঘটে, যা আগের তুলনায় আরও দূরবর্তী বাণিজ্যের সম্প্রসারণ করে। প্রারম্ভিক সময়কালে অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে বিনিময় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ক্রীতদাস, ধাতু, কাঠ এবং পশম বাদে ইউরোপের সামান্যই দেয়ার ছিল।[8] প্রাচ্যে বিভিন্ন পন্য বিক্রির ওপর জোড় দেয়া ইউরোপীয়দের উৎপাদন বৃদ্ধি ও তাদেরকে বাণিজ্যে একীভূত করতে সাহায্য করেছে।[9] ক্রুসেডের ফলে ইউরোপের বিস্তার ও বাণিজ্যের সুযোগ বৃদ্ধি পায় এবং এতে কৃষি, খনন ও বিভিন্ন বস্তুর উৎপাদন বেড়ে যায়।[9] ইউরোপ জুড়ে দ্রুত নগরায়নের ফলে উত্তর সাগর থেকে ভেনিসের সাথে সংযোগ সৃষ্টি হয়।[9] জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রাচ্যে বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে শিল্পায়নের অগ্রগতি সামুদ্রিক নির্গমদ্বারের মাধ্যমে সত্যিকারের বাণিজ্যিক বড় বাজারের প্রবৃদ্ধি ঘটায়।[9]
প্রাচীন বিশ্বায়নের একটি বহুর্মুখী ধর্ম ছিল, যা অ-ইউরোপীয়দের সক্রিয় অংশগ্রহণের সাথে জড়িত। যেহেতু এটি উনিশ শতকের গ্রেট ডাইভারজেন্সের পূর্বাভাস দিয়েছিল, যাতে পশ্চিম ইউরোপ শিল্প ও অর্থনৈতিক উৎপাদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাকি বিশ্ব থেকে এগিয়ে যায়। প্রাচীন বিশ্বায়ন এমন একটি ঘটনা যা শুধুমাত্র ইউরোপই নয়, বরং অন্যান্য অর্থনৈতিকভাবে উন্নত প্রাচীন বিশ্বের কেন্দ্র যথা গুজরাত, বঙ্গ, চীনের উপকূলবর্তী অঞ্চল ও জাপানও গ্রহণ করেছিল।[10]
এসব প্রাক-পুঁজিবাদী গতিবিধিগুলো বৈশ্বিক না হয়ে বরং আঞ্চলিক ছিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছিল অস্থায়ী। ২০০১ সালে ইতিহাসবেত্তা এ.জি. হপকিন্স প্রাথমিক বিশ্বায়নের এই ধারণার প্রস্তাব দেন।[11] প্রাচীন বিশ্বায়নের উপর হপকিন্সের মূল বক্তব্যগুলোতে বাণিজ্য, এটি থেকে উদ্ভূত জনগণ, পাশাপাশি পুরো অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পরা ধর্মীয় ভাবধারা এবং সাম্রাজ্য নিয়ে আলোকপাত করা হয়।[12] রাষ্ট্রগুলির মধ্যকার এই নতুন মিথস্ক্রিয়তার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন অংশগুলির মধ্যে আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি হয়, যা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে স্বাধীন মনোভাবের সৃষ্টি করেছিল।[13] পণ্য ও চিন্তার এ ছড়িয়ে পরায় অংশগ্রহণকারী মূল নিয়ন্ত্রকরা ছিল রাজা, যোদ্ধা, পুরোহিত এবং ব্যবসায়ীরা। হপকিন্স আরো বলেন যে এ সময়কালে ক্ষুদ্র বিশ্বায়ন বিশিষ্ট হয়ে ওঠে এবং কিছু ভেঙ্গে পড়ে অথবা সংকীর্ণ হয়ে ওঠে।[3]
এই ক্ষুদ্র বিশ্বায়নগুলোকে অনিয়মিত এবং ভঙ্গুর হিসেবে উল্লেখ করা হয় যেহেতু মাঝেমাঝে সাম্রাজ্যগুলো নাগালের বাইরে চলে যেত এবং ফলে পিছিয়ে আসতে হতো।[3] এগুলোর রেখে যাওয়া অবশেষ নতুন ধারণার সাথে পশ্চিমকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে এবং পশ্চিমা পুঁজিবাদের ধারণার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। গৃহীত ধারণাগুলো পশ্চিমা মুদ্রা ব্যবস্থায় দেখা যায় এবং পুঁজিবাদের মতো পদ্ধতির কেন্দ্র হয় যা আধুনিকতা এবং আধুনিক বিশ্বায়নকে সংজ্ঞায়িত করে।[4]
প্রাচীন বিশ্বায়নের তিনটি মূলনীতি
প্রাচীন বিশ্বায়ন তিনটি মূলনীতি নিয়ে গঠিতঃ সার্বজনীন রাজত্ব, ধর্মীয় আন্দোলনের সম্প্রসারণ, ঔষধ বিষয়ক বোধ।
- রাজত্বের সার্বজনীনতা সৈন্য ও শাসনকর্তাদের অনেক দূরের পথ অতিক্রম করতে প্রেরণা দেয় সম্মান ও মর্যাদার খোঁজে। এছাড়াও বিদেশী জমি অতিক্রম করে চলা ভ্রমণকারী মানুষদের মূল্যবান পণ্য আদান প্রদান করার সুযোগও প্রদান করে। এই দূরবর্তী অঞ্চলের মধ্যে প্রসারিত বাণিজ্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
- শাসনকর্তা ও তাদের দ্বারা অতিক্রম করা বিশাল দূরত্ব ছাড়াও তীর্থযাত্রা ছিল অন্যতম প্রধান বৈশ্বিক বিচলন।
- সবশেষে, ভাল স্বাস্থ্যের আকাঙ্ক্ষা প্রাচীন বিশ্বায়নের পেছনকার অবশিষ্ট অন্যতম প্রধান ধাক্কা ছিল। যদিও মশলা, মূল্যবান পাথর, প্রাণী ও অস্ত্রের ব্যবসা্রগুরুত্ব সর্বাধিক ছিল, মানুষ দূর দূরান্ত থেকে ঔষধ খোঁজা শুর করে। এটা আরো বাণিজ্য পথের বাস্তবায়ন ঘটায়, বিশেষ করে চায়ের জন্য চীনমুখী বাণিজ্যের।[14]
অর্থনৈতিক বিনিময়
রাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার সংযুক্তি ও বাণিজ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে অর্থনৈতিক বিনিময় পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পরে এবং কর্তাব্যক্তিদের নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার কারণ হয়।[15] প্রারম্ভিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন শ্যাম্পেন মেলাগুলিতে দেখা যায়, যেগুলো ছিল বাইরের বাজার যেখানেযেখানে ভ্রমণকারীরা তাদের পণ্যগুলি বিক্রি করতে এবং কেনাকাটা করতে আসত।[16] ঐতিহ্যগতভাবে অর্থের বিপরীতে বিনিময়কে ব্যবহার করা হত, কিন্তু একসময় ভ্রমণকারী বণীকদের সংখ্যা বেড়ে গেলে মুদ্রার প্রয়োজন বেড়ে যায় টাকা পরিবর্তন করার পদ্ধতি স্থাপন করা জরুরি হয়ে পড়ে।কিছু ঐতিহাসিক পণ্ডিতরা [কারা?] যুক্তি দেন যে এটি ব্যাংকার এবং ক্রেডিট প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার শুরু।এর উদাহরণ দেখা যায় কোনো ব্যক্তির যদি এমন কোনো পণ্যের প্রয়োজন পড়ে যা শহুরে বণিকেরা সাধারণত মজুত করে না। পণ্যটির সন্ধানকারী পণটির ফরমাশ দেন , বণিক যা পরবর্তীতে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়। পণ্যের সন্ধানকারী হয় বণিককে আমানত দেন কিছু মজুরি আগেভাগে প্রদানের মাধ্যমে, বণিক থেকে আমানত গ্রহণ করে পণ্যটি মজুত হওয়া মাত্র পুরো মূল্য শোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে, অথবা ডাউন পেমেন্টের মাধ্যমে এক ধরনের রেয়াৎ গঠন করেন। পণ্যের সন্ধানকারীর বণিকের চাওয়া টাকা না থাকলে তিনি অর্থ পরিবর্তনকারী দ্বারা সংরক্ষিত মূলধন থেকে ঋণ নিতে পারেন অথবা তিনি তিনি তার প্রত্যাশিত ফসলের অংশ বন্ধক করতে পারেন, হয় টাকা পরিবর্তনকারী থেকে অথবা যে বণিকের কাছে পণ্যটি খুঁজছেন তার থেকে।[17] এই লম্বা লেনদেন অবশেষে একটি জটিল অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পর্যবসিত হয় এবং সাপ্তাহিক বাজার বন্ধক থেকে দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় নগদীকরণ পদ্ধতিতে প্রসারিত হয়।[17]
শহুরে বণিকেরা যখন শহরের সীমার বাইরে গিয়ে বড় দূরত্ব ভ্রমণ করে পণ্য বেচাকেনার উদ্দেশ্যে বাজারের কেন্দ্রে যাত্রা শুরু করে বাণিজ্যের একটি বৃহৎ পরিসীমার উন্নয়ন ঘটে। তারপর বণিকেরা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে একই স্থানে মিলিত হতে শুরু করে, যা তাদের অন্য বণিকদের সাথে বিশেষ পণ্য যার চাহিদা স্থানীয় কৃষিজীবীদের কাছে নেই কিন্তু তাদের নিজ শহরে আছে সেগুলো আনার ব্যবস্থা করার সুযোগ করে দেয়।[17] স্থানীয় ব্যক্তিরা যখন অগ্রিম আদেশ প্রদান করে, তখন বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গ্রাহকরা দূরবর্তী শহরগুলির আইটেমগুলির জন্য অর্ডার দিতে শুরু করতে পারে যা তাদের ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিপক্ষ থেকে অর্ডার করতে পারে। এই কেন্দ্রীয় সাক্ষাতের স্থান হয়ে ওঠে দীর্ঘ দূরত্ব বাণিজ্য এবং এর বিস্তারের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।[17]
দীর্ঘ দূরত্বের বাণিজ্যের বিস্তার
প্রারম্ভিক সময়কালে বাণিজ্যের বিস্তারের জন্য এটাকে কিছু বাজারের বণিকদেরও কিছু মৌলিক ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। প্রথমটি হচ্ছে নিরাপত্তা। যেসব পণ্যকে পরিবহন করা হতো সেগুলোর মূল্য বেড়ে যেতে থাকে এবং বণিকদের নিজেদের ঈপ্সিত পণ্য রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় বিশেষভাবে যখন সেগুলো দরিদ্র এলাকার মাঝ দিয়ে পরিবহন করা হতো তখন ঝুঁকি বেশি ছিল। এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য বণিকরা কাফেলায় করে ভ্রমণ করা শুরু করে নিজেদের ও পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।[18] দ্বিতীয় পূর্বশর্তটি হচ্ছে প্রারম্ভিক দীর্ঘ দূরত্বের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনিময়ের হারের জন্য চুক্তি থাকা। যেহেতু অনেক বণিকই বেশ দূরের দেশ থেকে ভিন্ন ভিন্ন মুদ্রাব্যবস্থা থেকে আসত, একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজন হয় যাতে করে পণ্যের মূল্য পরিশোধ করা, পূর্ববর্তী দেনা শোধ করা, চুক্তি সম্পাদিত হচ্ছে কিনা তার জন্যে একটি নির্দিষ্ট পথ তৈরী হয়।[18] বাণিজ্যের বিস্তার ততক্ষ্ণ পর্যন্ত সাফল্যলাভ করে যতক্ষণ তার বিনিময়ের উদ্দেশ্য ছিল বৈদেশিক ভুমিতে বাণিজ্য অগ্রসর করা। এছাড়াও বাণিজ্যের স্থানগুলিতে বহিরাগত বণিকদের প্রবেশাধিকার বাণিজ্যপথের বিস্তারের বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল।
পণ্য এবং ধারণার বিস্তার
ফসলী পণ্যের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল মশলা, যা স্বল্প দূরত্বে বিক্রি হত। আবার উৎপাদিত পণ্য ছিল এই ব্যবস্থার মূল এবং এ ধরনের পণ্য ছাড়া বাণিজ্যে তেমন সুযোগ পাওয়া যেত না। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে স্বর্ণের মুদ্রার আকারে এবং ত্রয়োদশ শতকে চীনে কাগজের মুদ্রার আকারে টাকার উদ্ভাবন বিভিন্ন ক্রিয়াশীল পক্ষের মাঝে বাণিজ্যের ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ দেয়।[19] এই ব্যবস্থার সাথে জড়িত মূল পক্ষগুলো সোনা, রুপা এবং তামাকে ভিন্ন মাত্রায় মূল্যবান মনে করত। তথাপি, পণ্য স্থানান্তরিত হয়, দাম নির্ধারিত হয়, বিনিময়ের হারে সম্মতি আসে, চুক্তি সম্পাদিত হয়, ঋণ বেড়ে যায়, অংশীদারত্ব তৈরী হয় এবং যেসব চুক্তি গঠিত হয়েছিল তা নথিভুক্ত করা হয় এবং তা মেনে চলা হয়।[20] বিশ্বায়নের সময় বাণিজ্যের উপায় হিসেবে ঋণেরও ব্যবহার হয়। ঋণের ব্যবহার প্রথমে রক্ত সম্বন্ধের মাধ্যমে শুরু হলেও পরবর্তীতে তা থেকে “ব্যাংকার” পেশার উৎপত্তি ঘটে।[21]
মানুষের ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সমগ্র বিশ্বে নতুন ধারণা, ধর্ম এবং পণ্য আসে যা ইতোপূর্বে কোনো সমাজেই এতটা স্পষ্ট হয় নি।[15] এছাড়াও, এই বিশ্বয়ন সামন্ততান্ত্রিক সমাজের মাত্রা কমিয়ে দেয় স্বনির্ভরশীল সমাজকে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের মাধ্যমে।[22] ১৪০০ শতকের কাছাকাছি সময়ে উত্তর আফ্রিকা এবিং ইউরোপকে সযুক্ত করা বেশিরভাগ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রিত হতো মধ্যপ্রাচ্য, চীন এবং ভারতের দ্বারা।[23] প্রাক-আধুনিক সময়ে দীর্ঘ দূরত্বের বাণিজ্যের বিশাল খরচ ও বিপদের কারণে প্রাচীন বিশ্বায়ন উচ্চমূল্যের পণ্যের ব্যবসা থেকে বেরিয়ে আসে যা অল্প জায়গা দখল করত। বেশিরভাগ পণ্য যা উৎপাদিত ও বিক্রি হতো বিলাসদ্রব্য হিসেবে বিবেচিত হতো এবং অনেকেই [কে?] এসব ঈপ্সিত দ্রব্যকে সমাজের মাপনীতে উচ্চতর স্থানের হিসেবে বিবেচিত করতো।[উদ্ধৃতি প্রয়োজন]
এ ধরনের বিলাসদ্রব্যের উদাহরণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিল চৈনিক সিল্ক, বহিরাগত ভেষজ, কফি, তুলো, লোহা, ভারতীয় সুতি কাপড়, আরবীয় ঘোড়া, রত্ন এবং মশলা বা ঔষধ যেমন জায়ফল, লবঙ্গ, মরিচ, অম্বর এবং আফিম। ত্রয়োদশ শতাব্দীর পাশাপাশি আজকের দিনেও বিলাসদ্রব্য পছন্দ করা হয় এজন্য যে ছোট কিন্তু মূল্যবান পণ্যগুলোর উচ্চ পরিবহন খরচ থাকার পরেও এদের উচ্চমূল্য থাকতে পারে, যেখানে স্বল্প মূল্যের ভারী পণ্য বেশি দূর বহন করার মূল্য নেই।[24] এই ধরনের বিলাসবহুল দ্রব্যের ক্রয়কে বলা হয় প্রাচীন ভোগ যেহেতু নিত্যদিনের প্রয়োজনের বিপরীতে এসব দ্রব্যের বাণিজ্য অনেক জনপ্রিয় ছিল। এসব দ্রব্যের ক্ষেত্রে খাদ্য, ঔষধ এবং ব্যবহারিক ঔষধবিজ্ঞান এর মাঝে পার্থক্য অনেক সময়ই বেশ অস্পষ্ট যেগুলো দামী ছিল কেবল তারা বিরল এজন্যেই না বরং এ কারণে যে এগুলোর আবেদন ছিল স্বাস্থ্য এবং শরীরের দেহরস তত্ত্বের ওপর যা প্রাক-আধুনিক ইউরেশিয়া জুড়ে প্রভাব বিস্তার করে ছিল।
প্রধান বাণিজ্যিক পথসমূহ
প্রাচীন বিশ্বায়নের সময়ে ইউরোপ, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের সাথে যুক্ত তিনটি প্রধান বাণিজ্য পথ ছিল।[[25] সর্ব উত্তরের রাস্তাটি মূলত মঙ্গোল সাম্রাজ্যের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল এবং প্রায় ৫০০০ মাইল দীর্ঘ ছিল।[26]] যদিও পথটি গড়ে উঠেছিল বিস্তির্ন মরুভূমির মধ্য দিয়ে যেখানে সম্পদ খুব কম ছিল বা নেই বললেই চলে, তারপরও বণিকেরা এই পথে ভ্রমণ করতো। তেরো শতক জুড়েও পথটিতে ভ্রমণ করা হতো কারণ কুবলাই খান সমগ্র মঙ্গোল সাম্রাজ্যকে একত্রিত করেছিলেন এবং ভ্রমণকারীদের থেকে খুব কম নিরাপত্তা কর নিতেন।[27] একত্রীকরনের আগে মধ্যপ্রাচ্যের বণিকেরা এই পথ ব্যবহার করত কিন্তু প্রত্যেক গ্রামেই তাদের থামানো হত এবং কর দিতে হতো।[28]
মাঝের পথটি সিরিয়ার উপকূল হয়ে বাগদাদ পর্যন্ত গিয়েছিল যেখান থেকে ভ্রমণকারীরা পারস্য থেকে ভারতে স্থলভাগের পথ অনুসরণ করতে পারত, অথবা পারস্য উপসাগরের মধ্য দিয়ে ভারত ভ্রমণ করতে পারত। অষ্টম এবং দশম শতকের মাঝে বাগদাদ ছিল বৈশ্বিক শহর[29], কিন্তু এগার শতকে তার পতন ঘটতে শুরু করে বন্যা, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।[30] ১২৫৮ সালে, মঙ্গোলরা বাগদাদ দখল করে। তারা বাগদাদের অধিবাসীদের ওপর উচ্চ কর চাপিয়ে দেয় যার ফলে উৎপাদন কমে আসে বণিকদের শহরটি এড়িয়ে চলার কারণ হিসেবে।[31] তৃতীয় এবং সর্ব দক্ষিণের পথটি মামলুক নিয়ন্ত্রিত মিসরের মধ্য দিয়ে যায়। বাগদাদের পতনের পর কায়রো ইসলামিক রাজধানী হয়ে ওঠে।[32]
এই বাণিজ্যিক পথগুলির মাঝের বেশ কয়েকটি প্রধান শহর ধনী ছিল এবং বণিক ও আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য পরিষেবা প্রদান করত। পালমিরা এবং পেত্রার অবস্থান ছিল সিরিয়ার মরুভূমির প্রান্তে এবং এগুলো বাণিজ্যের শক্তিকেন্দ্র হিসেবে মুলত উন্নীত হয়েছিল। তারা বাণিজ্যের পথগুলির আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতো এবং বনিকদের কাফেলার সরবরাহের উৎস ছিল। শহরগুল এমন স্থানে পরিনত হয়েছিল যেখানে বিভিন্ন জাতির এবং সংস্কৃতির মানুষদের পরিচয় এবং মেলবন্ধন ঘটত। এ বাণিজ্যের পথগুলো ছিল প্রাচীন সভ্যতার মানুষ এবং তাদের সমাজের মধ্যবর্তী যোগাযোগের মহাসড়ক। নতুন আবিষ্কার, ধর্মবিশ্বাস, শৈল্পিক শৈলী, ভাষা এবং সামাজিক রীতিনীতি, সেইসাথে পণ্য ও কাঁচামাল, ছড়িয়ে পড়েছিল বাণিজ্যের জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটে চলা মানুষের মাধ্যমে।[33]
আদি বিশ্বায়ন
আদি বিশ্বায়ন হচ্ছে প্রাচীন বিশ্বায়নের পরবর্তী সময়কাল যা ১৭ শতক থেকে ১৯ শতকের মাঝে ঘটেছিল। প্রাচীন বিশ্বায়নের সময়ে যেসব পথগুলো স্থাপিত হয়েছিল তা আদি বিশ্বয়নের সময়ে আরো বৈশিষ্টপূর্ণ বিস্তৃত পথের এবং জটিল বাণিজ্যিক পদ্ধতির উৎপত্তি ঘটায়।[34] ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মত পরিচিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থার প্রকাশ ঘটে এই সময়ে যা বৃহৎ মাত্রায় বিনিময় সম্ভব করে তোলে।[35] বিশেষ করে দাশ ব্যবসা ছিল বৃহৎ এবং এর সাথে উপনিবেশএ সম্মিলিতভাবে পণ্যদ্রব্যের গণউৎপাদন এ সময়কালের বৈশিষ্ট্য।[36]
উচ্চ স্পন্দনশীল বাণিজ্যিক পথগুলোর কারণে গড়ে ওঠা বেশ কিছু সংখ্যক বহুজাতিগত অঞ্চলের ফলাফলে যুদ্ধ লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। এ যুদ্ধগুলোর মাঝে অন্যতম ফরাসি-ভারত যুদ্ধ ,আমেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধ[37] এবং যুক্তরাজ্য ও ডাচদের মাঝে সংঘটিত অ্যাংলো-ডাচ যুদ্ধ।[38]
আধুনিক বিশ্বায়ন
বিশ্বায়নের আধুনিক রূপটি ১৯ শতকের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল। এই সময়ের উদ্ভবের শুরু মূলত পশ্চিম, পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদকে জাতির রাষ্ট্র ও শিল্প প্রযুক্তি দ্বারা সমর্থিত সম্প্রসারণের জন্য দায়ী।[39] এগুলি পনেরো শতকে প্রবর্তিত হতে শুরু করে,যা ১৮ শতাব্দীতে শিল্পোন্নয়নের ফলে সময়ের সাথে দ্রুততার সাথে প্রসারিত হয়। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের জয় এবং আফিম যুদ্ধের বিজয়গুলি ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সমাজের শিল্পায়ন ও গঠনে যুক্ত হয় কারণ এটি একটি বিশাল ভোক্তা অঞ্চল তৈরি করেছিল।[40]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছিল সে সময় যখন আধুনিক বিশ্বায়নক প্রথম পর্যায়ের প্রভাব বিস্তার শুরু করে। ভিএম ইয়েটস বলেন যে, বিশ্বায়নের অর্থনৈতিক শক্তি এ যুদ্ধের একটি কারণ ছিল।[41] বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে, বিশ্বায়ন ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়।বহুজাতিক কর্পোরেশন, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান এবং গণমাধ্যম এর উর্ধ্বগামী সংস্কারগুলি বিশ্বব্যাপী বিশাল বিনিময়ের ফলাফল। উপরন্তু, বিশ্বব্যাংক, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং অনেক আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলিও আধুনিক বিশ্বায়নের আকার ধারণ করেছে।[42] ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আধুনিক বিশ্বায়নের একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। ইন্টারনেটআন্তর্জাতিক এবং আন্তর্জাতিক সীমানার মধ্যে সংযোগ প্রদান করেছে, বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের বৃদ্ধিতে সাহায্যের মাধ্যমে।[43]
আরো দেখুন
- বিশ্বায়নের ইতিহাস
- সামরিক বিশ্বায়ন
তথ্যসূত্র
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। Policy Press। পৃষ্ঠা ৪৫।
- abu-lughod, janet (১৯৯১)। Before European Hegemony। Oxford University Press.। পৃষ্ঠা ৩৩।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। Polity Press। পৃষ্ঠা ৪৭।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। Polity Press। পৃষ্ঠা ৪৮।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। পৃষ্ঠা ৪৪।
- Rossi, Ino (২০০৮)। Frontiers of Globalization Research: Theoretical and Methodological Approaches। Springer Science + Business Media। পৃষ্ঠা ৩৩–৩৬।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony The World System A.D. 1250–1350। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৮।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony The World System A.D. 1250–1350। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৪৭।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৪৭।
- Kochler, Hans (২০০০)। Globality versus Democracy: The Changing Nature of International Relations in the Era of Globalization। Vienna: International Progress Organization.। পৃষ্ঠা ৩৫।
- Pramanick (২০১০)। Globalization in India: New Frontiers Emerging। New Dehli: PHI Learning Private Limited। পৃষ্ঠা ৪৯।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। পৃষ্ঠা ৪৫।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। Polity Press। পৃষ্ঠা ৪৫।
- C.A. Bayly (২০০৪)। Birth of the Modern World। Oxford। পৃষ্ঠা ৪২–৪৪।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। Policy Press। পৃষ্ঠা ৪৪।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৫২।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৫৩।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৫৪।
- Abu-Lughod, Janet L. (১৯৮৯)। Before European Hegemony। Oxford University Press Inc। পৃষ্ঠা ১৫।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony The World System A.D. 1250–1350। পৃষ্ঠা ৮।
- Abu-Lughod, Janet L (১৯৮৯)। Before European Hegemony। Oxford University Press Inc। পৃষ্ঠা ১৫–১৬।
- Dobb, Maurice (১৯৬২)। Transition from Feudalism to Capitalism। পৃষ্ঠা ৩।
- Abu-Lughod, Janet L (১৯৮৯)। Before European Hegemony.। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৪।
- Abu-Lughod, Janet (১৯৯১)। Before European Hegemony। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৫৫।
- Abu-Lughod, Janet L (১৯৮৯)। Before European Hegemony। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৩৭।
- Abu-Lughod, Janet L. (১৯৮৯)। Before European Hegemony। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৭৬।
- Abu-Lughod, Janet L. (১৯৮৯)। Before European Hegemony.। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৫৪।
- Abu-Lughod, Janet L. (১৯৮৯)। Before European Hegemony। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৫৭।
- Abu-Lughod,, Janet L. (১৯৮৯)। Before European Hegemony। Oxford University Press Inc। পৃষ্ঠা ১৪৫।
- Abu-Lughod, Janet L (১৯৮৯)। Before European Hegemony.। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৯২।
- Abu-Lughod, Janet L. (১৯৮৯)। Before European Hegemony। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৯৫।
- Abu-Lughod, Janet L. (১৯৮৯)। Before European Hegemony.। Oxford University Press Inc.। পৃষ্ঠা ১৯৬।
- Art, Author: Department of Ancient Near Eastern। "Trade Routes between Europe and Asia during Antiquity | Essay | Heilbrunn Timeline of Art History | The Metropolitan Museum of Art" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৫।
- Hopkins, A.G (২০০৩)। , . (2003). Globalization in World History. :। New York City: Norton। পৃষ্ঠা ৩। আইএসবিএন 0-393-97942-3.
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)। - Bayly, A.C (২০০৪)। The Birth of the Modern World। Blackwell Publishing Ltd.। পৃষ্ঠা ৬২।
- Bayly, C..A (২০০৪)। The Birth of the Modern World.। Blackwell Publishing Ltd.। পৃষ্ঠা ৪২।
- Hopkins, A.G. (২০০৩)। Globalization in World History.। New York City, NY: Norton। পৃষ্ঠা ৪–৫। আইএসবিএন 0-393-97942-3.
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)। - Rommelse, Gijs (২০০৬)। The Second Anglo-Dutch War (1665-1667)। Hilversum। পৃষ্ঠা ১১।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। Polity Press। পৃষ্ঠা ৫৩–৫৪।
- Martell, Luke (২০১০)। The Sociology of Globalization। Polity Press। পৃষ্ঠা ৬০।
- Yeates, V.M. (১৯৬২)। Winged Victory.। London: Jonathan Cape। পৃষ্ঠা ৫৪–৫৫।
- Jurgen, Osterhammel (২০০৫)। Globalization: A Short History। পৃষ্ঠা ৮।
- Elmer, Greg (২০০২)। Critical Perspectives on the Internet। Lanham, Maryland: Rowman and Littlefield Publishers, Inc.। পৃষ্ঠা ১৮৩।