প্রাকৃতিক পরিবেশ

প্রাকৃতিক পরিবেশ অথবা প্রাকৃতিক জগত বলতে সমগ্ৰ জীবিত এবং প্রাণহীন বস্তুর স্বাভাবিক অবস্থানকে বুঝায়, এক্ষেত্রে এটা মোটেও কৃত্রিম নয়।এই শব্দটি প্রায়শই পৃথিবীতে অথবা পৃথিবীর কিছু অংশে ব্যবহৃত হয়। সমস্ত প্রজাতি, জলবায়ু, আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক সম্পদ এই পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত যেটা মানুষের বাঁচা ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে।[1]

জমি ব্যবস্থাপনা থেকে অস্ট্রেলিয়ার হেপটাউন ফলস ঝর্নার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যকে সংরক্ষণ করা হয়েছে; যার ফলে দর্শনার্থীদের প্রবেশের সুযোগ বেশি
সাহারা মরুভূমির উপগ্রহ চিত্র। এটা বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো উষ্ণ মরুভূমি এবং মেরু মরুভূমির পর তৃতীয় বৃহত্তম।

প্রাকৃতিক পরিবেশের ধারণাকে নিম্নলিখিত উপাদানে ভাগ করা যায়:

প্রাকৃতিক পরিবেশের ঠিক বিপরীত হল নির্মিত পরিবেশ। কিছু এরকম অঞ্চল আছে যেখানে মানুষেরা শহর গঠন ও ভূমি রূপান্তরের মতো ভূদৃশ্যের মৌলিক পরিবর্তন ঘটায়; প্রাকৃতিক পরিবেশ বদল হয়ে একটা সরলীকৃত মানব পরিবেশে পরিণত হয়। এমনকি দেখা যায় যেটা চরম নয়, যেমন মাটি দিয়ে বানানো কুঁড়েঘর অথবা মরুভূমিতে ফটোভোল্টাইক পদ্ধতি, এই সংশোধিত পরিবেশ কৃত্রিম হয়ে যায়। যদিও মানুষ ছাড়া অনেক প্রাণী তাদের নিজেদের পরিবেশ ভালো করার জন্যে কিছু জিনিস তৈরি করে, সুতরাং, বীবর বাঁধ এবং উই ঢিবির কাজ, এগুলোকে প্রাকৃতিক হিসেবে ধরা হয়।

পৃথিবীতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষেরা কমই দেখে, এবং স্বাভাবিকতা সাধারণত একশো শতাংশ, এক চরম অবস্থা থেকে শূন্য শতাংশ অন্যথায় আলাদা হয়। খুব জটিলভাবে আমরা একটা পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিত অথবা উপাদান নিয়ে ভাবনা করতে পারি, এবং দেখা যায় যে, তাদের স্বাভাবিকতার মাত্রা সমান নয়।[2] উদাহরণস্বরূপ, যদি একটা কৃষি জমিতে খনিজ সংক্রান্ত উপাদান এবং মাটির কাঠামো নির্বিঘ্ন অরণ্যের মাটির সমান হয়, তাহলেও কাঠামো কিন্তু আলাদা হয়।

প্রাকৃতিক পরিবেশকে কখনো কখনো আবাসস্থলের সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা বলি যে, জিরাফের প্রাকৃতিক পরিবেশ হল বিচরণ ভূমি

গঠন

পৃথিবীর স্তরীয় কাঠামো: (১) ইনার কোর; (২) আউটার কোর; (৩) লোয়ার ম্যান্টল; (৪) আপার ম্যান্টল; (৫) ভূত্বক; (৬) ক্রাস্ট

ভূবিজ্ঞানে সাধারণত চারটে পরিমণ্ডলের অবস্থান পাওয়া যায়, ভূত্বক, বারিমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল এবং জীবমণ্ডল[3] যেগুলোর সঙ্গে যথাক্রমে (ভূবিদ্যা)শিলা, জল, বায়ু এবং জীবনের যোগসূত্র আছে।

কয়েকজন বিজ্ঞানী বরফের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্রায়োস্ফিয়ার, এছাড়া মাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পেডোস্ফিয়ারকে একটা সক্রিয় এবং অন্তর্নির্মিত পরিমণ্ডল রূপে পৃথিবীর পরিমণ্ডলের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। পৃথিবী গ্রহের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সাধারণ শব্দ হল ভূবিজ্ঞান (ভূতত্ত্ব, ভৌগোলিক বিজ্ঞান অথবা ভূবিজ্ঞানসমূহও বলা হয়)।[4] ভূবিজ্ঞানসমূহের চারটে প্রধান শাখা আছে; যথা, ভূগোল, ভূবিদ্যা, ভূপদার্থবিদ্যা এবং ভূগণিত। পৃথিবীর পরিমণ্ডলসমূহ অথবা এদের মূল ক্ষেত্রের একটা গুণগত এবং পরিমাণগত বোঝাপড়ার জন্যে এই সমস্ত প্রধান শাখায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, কালপঞ্জি এবং গণিত ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ভূবিদ্যাগত কার্যকারিতা

পৃথিবীর ক্রাস্ট অথবা ভূত্বক হল এই গ্রহের সবচেয়ে দূরের শক্ত পৃষ্ঠতল এবং এটা রাসায়নিক ও যান্ত্রিকভাবে নিচের আস্তরণ ম্যান্টল থেকে আলাদা। এটা আগ্নেয় পদ্ধতিতে ম্যাগমা ঠান্ডা ও শক্ত হয়ে বিশেষভাবে কঠিন শিলা তৈরি হয়। ভূত্বকের নিচে অবস্থানকারী ম্যান্টল তেজস্ক্রিয় উপাদানের ক্ষয় দ্বারা গরম হয়। ম্যান্টল কঠিন হলেও এটা রেইক সংশ্লেষ অবস্থানে থাকে। এই সংশ্লেষ প্রক্রিয়া খুব ধীরে হলেও ভূত্বক পাতগুলোকে সরায়। এর ফলে যা ঘটে তাকে বলে প্লেট টেকটনিকআগ্নেয়গিরি থেকে প্রাথমিকভাবে ভূত্বক উপাদানের অবশিষ্ট গলিত অংশ অথবা মধ্য-মহাসাগর রিজ এবং ম্যান্টল প্লুমসমূহে উঠতি ম্যান্টল বেরিয়ে আসে।

পৃথিবীতে জল

প্রবাল প্রাচীরসমূহের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য বর্তমান।

বেশির ভাগ জল বিভিন্ন ধরনের জলাভূমিতে পাওয়া যায়।


মহাসাগরসমূহ

একটা মহাসাগর হল বেশির ভাগ লবণাক্ত জল এবং বারিমণ্ডলের উপাদান। পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রায় ৭১ শতাংশ (৩.৬২ কোটি বর্গকিলোমিটার অঞ্চল) মহাসাগর দিয়ে ঢাকা, একটা অবিচ্ছিন্ন জলভাগ যেটা প্রথাগতভাবে বিভিন্ন প্রধান মহাসাগর এবং সাগরসমূহে বিভক্ত। এই অঞ্চলের অর্ধেকের বেশি অংশ ৩,০০০ মিটারের ওপর (৯,৮০০ ফুট) গভীর। গড় মহাসাগরীয় লবণাক্ততা হল ৩৫ প্রতি-অংশ অঙ্কানুপাত (পিপিটি) (৩.৫ শতাংশ) এবং প্রায় সব সাগরজলের লবণাক্ততা হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৮ পিপিটি ধরনের। যদিও সাধারণত বিভিন্ন মহাসাগর আলাদাভাবে স্বীকৃত, এই জলভাগ পরস্পর সংযুক্ত লবণজলের আকর হিসেবে একই মহাসাগর অথবা বৈশ্বিক মহাসাগর বলা হয়ে থাকে।[5][6] গভীর সাগরতলসমূহ হল পৃথিবীপৃষ্ঠের অর্ধেকের বেশি এবং সেগুলো স্বল্প-সংশোধিত প্রাকৃতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। প্রধান মহাসাগরীয় বিভাগগুলোকে মহাদেশসমূহ, বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জ ও অন্যান্য মানদণ্ডের অংশ হিসেবে ভাগ করা হয়: এই বিভাগগুলো (আয়তনের অবতরণক্রমে) হল - প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, দক্ষিণ মহাসাগর এবং উত্তর মহাসাগর


নদীসমূহ

নদী হল প্রাকৃতিক একটা জলস্রোত;[7] এটা সাধারণত মিঠাজলের হয়, এবং কোনো এক মহাসাগর, হ্রদ, সাগর অথবা অন্য নদীতে গিয়ে মিলিত হয়ে থাকে। কিছুসংখ্যক নদী মাটির ভিতর দিয়ে বয়ে চলে এবং অন্য কোনো জলাধারে না পৌঁছানোর ফলে পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যে পাহাড়ের ভিতর প্রবাহ

সাধারণত দুদিকে তীর, মাঝে প্রবাহ আধার নদীতে জল একটা খাত দিয়ে প্রবাহিত হয়। বড়ো বড়ো নদীতে প্রায়ই একটা চওড়া প্লাবনভূমি থাকে যা খাতের অতি-দোহনের দ্বারা জলের আকার নেয়। নদী-খাতের আকার অনুযায়ী প্লাবনভূমি অনেক বেশি চওড়া হতে পারে। নদীসমূহ জলবিজ্ঞান চক্রের একটা অংশ। নদীতে জলের উৎস হল পৃষ্ঠজলের মাধ্যমে বর্ষণ, ভূজল পুনর্সংযোজন, ঝরনাসমূহ এবং হিমবাহের বরফগলা জল।

ছোটো ছোটো নদীগুলোর অন্য নামও দেওয়া হয়, যেমন, প্রবাহ, খাঁড়ি এবং নালা। আকর এবং প্রবাহ তীর এই দুয়ের মধ্যে তাদের স্রোত সীমাবদ্ধ। খণ্ডিত আবাস বিষয়ে সংযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ অববাহিকা ভূমিকা নিয়ে থাকে এবং এরূপেই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত হয়। প্রবাহ এবং জলপথের পরীক্ষাকে সাধারণভাবে বলা হয় পৃষ্ঠ জলবিজ্ঞান[8]

হ্রদসমূহ

আর্জেন্টিনার নেউকোয়েন রাজ্যে হিমবাহ থেকে উৎপন্ন ল্যাকার হ্রদ

একটা হ্রদ (লাতিন লকুস শব্দ থেকে এসেছে) হল অববাহিকার নিম্নে কেন্দ্রীভূত একটা জলের আকর। একটা জলের আকরকে তখনই হ্রদ বলা যাবে যখন এটা হবে অন্তর্দেশীয়, কোনো মহাসাগরের অংশ নয় এবং একটা পুকুরের থেকে বড়ো ও গভীর হয়।[9][10]

এভারগ্ল্যাডস ন্যাশনাল পার্ক, ফ্লোরিডা, যুক্রাষ্ট্রের একটা জলাভূমি অঞ্চল

পৃথিবীতে প্রাকৃতিক হদ্রসমূহ সাধারণত দেখা যায় পর্বত সন্নিহিত অঞ্চল, ফাটল অঞ্চলসমূহ এবং বর্তমান অথবা সাম্প্রতিক হিমবাহ অঞ্চলে। অন্তর্হীন অববাহিকা অথবা পরিণত নদীর গতিপথের পাশে অন্যান্য হ্রদ দেখা যায়। শেষ তুষার যুগের শেষভাগ থেকে পৃথিবীর কিছু অংশে বিশৃংখল নিকাশি ধরনের কারণে অনেক হ্রদ আছে। ভূতাত্ত্বিক কালক্রমের ওপর সকল হ্রদই অস্থায়ী যেহেতু সেগুলো ধীরভাবে পলিসহ পূর্ণ হয় অথবা তাদের মধ্যে থাকা অববাহিকায় ছড়িয়ে পড়ে।

পুকুরসমূহ

একটা পুকুর হল প্রাকৃতিক কিংবা মানুষে-বানানো স্থির জলের একটা আকর; পুকুর সাধারণত হ্রদ অপেক্ষা ছোটো। একটা ব্যাপক মানুষে-বানানো জলাধারসমূহকে পুকুরের নানা রূপ দেওয়া হয়; যেমন, নান্দনিক অথবা সাজানো নকশা করা জলাশয় বাগান, ব্যবসায়িক মাছ চাষের নকশা করা মাছ পুকুর এবং তাপীয় শক্তি সঞ্চয়ের নকশা করা সৌর পুকুরধারার গতি থেকে পুকুর এবং হ্রদের পার্থক্য নির্ধারণ করা যায়। যখন প্রবাহের ধারা সহজেই বোঝা যায়, পুকুর ও হ্রদে তাপশক্তির দ্বারা এবং পরিমিত বায়ুতাড়িত ধারা থাকে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো প্রবাহ পুকুর এবং ঢেউ পুকুর ইত্যাদি থেকে পুকুরকে আলাদা করে।

মানুষ নানাভাবে জলের ওপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে।যেমনঃ

  1. মানুষ নদীগুলোতে সরাসরি খাল খনন করে নিজেদের কাজে লাগানোর মাধ্যমে পরিবর্তন ঘটায়।আমরা বাঁধ ও জলাধার বানাই এবং নদীগুলোর ও জলপথের অভিমুখ নিজেদের মতো করি। বাঁধগুলো কার্যকরভাবে জলাধার এবং জলবিদ্যুৎ শক্তি তৈরি করে। যাই হোক, জলাধার এবং বাঁধ থেকে পরিবেশ ও বন্যজীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
  2. মাছেদের স্থানান্তরণ এবং স্রোত বরাবর জীবদের গতিবিধি বাঁধে আটকা পড়ে।
  3. নগরায়ন পরিবেশের ক্ষতি করে কারণ এর ফলে অরণ্য ধ্বংস হয় এবং হ্রদের জলতল, ভূজলের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। অরণ্য ধ্বংস এবং নগরায়ন হাত ধরাধরি করে চলে।
  4. অরণ্য ধ্বংসের ফলে বন্যা হতে পারে, জলপ্রবাহ হ্রাস পেতে পারে, এবং নদীতীরের গাছপালায় পরিবর্তন আসতে পারে। গাছপালার পরিবর্তন ঘটে কেননা তারা যথেষ্ট জল না পেয়ে অবস্থার অবনতি হয়, ফলস্বরূপ আঞ্চলিক বন্যজীবনের খাদ্য সরবরাহে ঘাটতি পড়ে। [11]

উপরোক্ত কারণগুলো জলতল, ভূগর্ভে জলের অবস্থা, জল দূষণ, তাপীয় দূষণ এবং সামুদ্রিক দূষণ এসবের প্রভাব পড়ে।


আবহমণ্ডল, জলবায়ু ও আবহাওয়া

মহাকাশ থেকে দেখা যাচ্ছে আবহমণ্ডলের গ্যাসগুলো (অন্যান্য তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চেয়ে বেশি নীল আলো ছড়ায় ), নীল বর্ণবলয় তৈরি করছে
বিমান থেকে দেখা পৃথিবীর ট্রপোমণ্ডল
বজ্রপাত হল বজ্রঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক অবস্থায় আবহমণ্ডলীয় বিদ্যুৎ ঝলক যার সঙ্গে থাকে বজ্রধ্বনি [12]

পৃথিবীর আবহমণ্ডল এই গ্রহের পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করে। গ্রহের মাধ্যাকর্ষণের টানে পাতলা গ্যাসসমূহের স্তর পৃথিবীকে আবৃত করে রেখেছে। শুকনো বায়ু ৭৮ শতাংশ নাইট্রোজেন, ২১ শতাংশ অক্সিজেন, ১ শতাংশ আর্গন এবং অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস, এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড দিয়ে তৈরি। অন্যান্য গ্যাসগুলো প্রায়ই সামান্য হিসেবে ধরা হয়।[13] আবহমণ্ডলে কতগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস আছে; যেমন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড এবং ওজোন। পরিস্রুত বায়ুতে অন্যান্য রাসায়নিক যৌগ সামান্য পরিমাণে থাকে। বাতাসে আরো যেসব জিনিস থাকে সেগুলো হল: জলীয় বাষ্প এবং জলকণার প্রলম্বনসমূহ এবং মেঘ হিসেবে দেখা বরফ স্ফটিকের পরিবর্তনশীল পরিমাণ। অল্প পরিমাণ অপরিস্রুত বায়ুতে ধুলো, রেণু, জীবাণু, সাগর ফেনা, আগ্নেয় ছাই এবং উল্কাপিণ্ড থাকতে পারে। এছাড়া ক্লোরিন (প্রাথমিক বা যৌগ), ফ্লোরিন যৌগ, প্রাথমিক পারদ এবং গন্ধক যৌগ যেমন সালফার ডাইঅক্সাইড জাতীয় বিভিন্ন ধরনের শিল্প দূষকও থাকতে পারে। (SO2).

পৃথিবীপৃষ্ঠে ধেয়ে আসা অতিবেগুনি রশ্মির মাত্রা কমিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ওজোন স্তর একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেহেতু ডিএনএ অতিবেগুনি রশ্মিতে সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এটা পৃষ্ঠতলের জীবনকে রক্ষার কাজ করে। এছাড়া আবহমণ্ডল রাতের তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখে, যার ফলে দৈনিক চরম তাপমান হ্রাস হয়।

পরিবেশের শ্রেণীবিভাগ

প্রাকৃতিক পরিবেশ :প্রাকৃতিক পরিবেশ হচ্ছে সেই পরিবেশ যা প্রকৃতি নিজে নিজে তৈরি করে। এগুলো হচ্ছেঃ গাছ,পাহাড়-পর্বত,ঝর্ণা,নদী ইত্যাদি। এগুলো মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। এগুলো প্রাকৃতিক ভাবেই সৃষ্টি হয়।

মানুষের তৈরি পরিবেশ :মানুষের তৈরি পরিবেশ হচ্ছে দালান-কোঠা,নগরায়ন,বন্দর ইত্যাদি। এগুলো মানুষ নিজের প্রয়োজনের তাগিদে তৈরি করে।

পরিবেশ দূষণ ও অবক্ষয়

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং লাভা প্রবাহের দৃশ্য।

পরিবেশের প্রতিটা উপাদানের সুসমন্বিত রূপই হলো সুস্থ পরিবেশ। এই সুসমন্বিত রূপের ব্যত্যয়ই পরিবেশের দূষণ ঘটায় এবং পরিবেশের স্বাভাবিক মাত্রার অবক্ষয় দেখা দেয়। পরিবেশ বিভিন্ন কারণে দূষিত হতে পারে।যেমনঃ

  • প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট কারণও এর সাথে দায়ী।
  • পরিবেশ দূষণের জন্য বিশেষভাবে দায়ী ১২টি মারাত্মক রাসায়নিক দ্রব্যকে একত্রে ডার্টি ডজন বা নোংরা ডজন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই ১২টি রাসায়নিক দ্রব্যের মধ্যে ৮টি কীটনাশক [অলড্রিন (aldrin), ডায়েলড্রিন (dieldrin), ক্লোরডেন (chlordane), এনড্রিন (endrin), হেপ্টাক্লোর (heptachlor), ডিডিটি (DDT), মিরেক্স (mirex), এবং টক্সাফেন (toxaphene); দুটি শিল্পজাত রাসায়নিক দ্রব্য পিসিবি (PCBs) এবং হেক্সাক্লোরোবেনজিন (hexachlorobenzene); এবং অন্য দুটো হলো কারখানায় উৎপন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত উপজাত: ডাইওক্সিন (dioxin) এবং ফিউরান (furan)]; খাদ্যচক্রে প্রবেশ করে পৃথিবীব্যাপী সব পরিবেশের সব ধরনের জীবজন্তুর উপর তীব্র প্রতিক্রিয়া ঘটায় এই বিষাক্ত পদার্থগুলো।
  • ত্রুটিপূর্ণ শিশুর জন্ম, ক্যান্সার উৎপাদন, ভ্রুণ বিকাশের নানাবিধ সমস্যার মূলেই দায়ী থাকে এই ডার্টি ডজন।[14]

পরিবেশ আইন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই বিপন্ন পরিবেশের বিরূপ প্রভাব থেকে মুক্তির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পরিবেশ আইন। মূলত পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থান তত্ত্বাবধান ও সংরক্ষণের আইনই পরিবেশ আইন। এই আইন স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য বিশ্ব আন্দোলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাগরিক ও সরকারি সংস্থাসমূহের অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারণ করে।[15]

তথ্যসূত্র

  1. Johnson, D. L.; Ambrose, S. H.; Bassett, T. J.; Bowen, M. L.; Crummey, D. E.; Isaacson, J. S.; Johnson, D. N.; Lamb, P.; Saul, M.; Winter-Nelson, A. E. (১৯৯৭)। "Meanings of Environmental Terms"। Journal of Environmental Quality26 (3): 581–589। ডিওআই:10.2134/jeq1997.00472425002600030002x
  2. Symons, Donald (১৯৭৯)। The Evolution of Human Sexuality। New York: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 31আইএসবিএন 0-19-502535-0।
  3. Earth's Spheres ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৭-০৮-৩১ তারিখে. Wheeling Jesuit University/NASA Classroom of the Future. Retrieved November 11, 2007.
  4. "Wordnet Search: Earth science"। ১০ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২১
  5. ""Archived copy"। ২০১২-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৭-১৫". The Columbia Encyclopedia. 2002. New York: Columbia University Press
  6. "Distribution of land and water on the planet ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত মে ৩১, ২০০৮ তারিখে". UN Atlas of the Oceans ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত সেপ্টেম্বর ১৫, ২০০৮ তারিখে
  7. River {definition} from Merriam-Webster. Accessed February 2010.
  8. http://ga.water.usgs.gov/edu/hydrology.html/ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ এপ্রিল ২০১২ তারিখে |date=June 20, 2019
  9. Britannica Online। "Lake (physical feature)"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-২৫[a Lake is] any relatively large body of slowly moving or standing water that occupies an inland basin of appreciable size. Definitions that precisely distinguish lakes, ponds, swamps, and even rivers and other bodies of nonoceanic water are not established. It may be said, however, that rivers and streams are relatively fast moving; marshes and swamps contain relatively large quantities of grasses, trees, or shrubs; and ponds are relatively small in comparison to lakes. Geologically defined, lakes are temporary bodies of water.
  10. "Dictionary.com definition"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-২৫a body of fresh or salt water of considerable size, surrounded by land.
  11. Goudie, Andrew (২০০০)। The Human Impact on the Natural Environment। Cambridge, Massachusetts: This MIT Press। পৃষ্ঠা 203–239আইএসবিএন 0-262-57138-2।
  12. NGDC – NOAA। "Volcanic Lightning"। National Geophysical Data Center – NOAA। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২১, ২০০৭
  13. Joe Buchdahl। "Atmosphere, Climate & Environment Information Programme"। Ace.mmu.ac.uk। ২০১০-১০-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-০৯
  14. ডার্টি ডজন, এস. এম হুমায়ূন কবির, বাংলাপিডিয়া 2.0.0, সিডি সংস্করণ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত। প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৯; সংগ্রহের তারিখ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
  15. পরিবেশ দূষণ, এস রিজওয়ানা হাসান, বাংলাপিডিয়া 2.0.0, সিডি সংস্করণ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত। প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৯; সংগ্রহের তারিখ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.