প্রতাপচন্দ্র রায়
প্রতাপচন্দ্র রায় সি.আই.ই (ইংরেজি: Pratapchandra Roy. C.I.E.) ( ১৫ মার্চ, ১৮৪১ - ১৩ জানুয়ারি, ১৮৯৫) ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যসেবী। রামায়ণ, শ্রীমদ্ভগবতগীতা প্রভৃতি পুরাণ গ্রন্থের বঙ্গানুবাদক ও মহাভারতের ইংরাজী অনুবাদক। [1]
সংক্ষিপ্ত জীবনী
প্রতাপচন্দ্র রায়ের জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার সাঁকো গ্রামের হতদরিদ্র উগ্রক্ষত্রিয় পরিবারে । তার পিতার নাম রামজয় রায় এবং মাতা দ্রবময়ী দেবী। জন্মের দুই মাস পরেই তার মায়ের মৃত্যু হয়। তিনি কৃষ্ণমণি নামক এক বিধবার দ্বারা প্রতিপালিত হন। [2] পিতার সংসারে অভাব-অনটন থাকার জন্য তার পিতা তাঁকে জনৈক ব্রাহ্মণের বাড়িতে পাঁচ বৎসর বয়সে রাখালি করতে পাঠান। ওই ব্রাহ্মণ প্রতাপের শিক্ষালাভের আগ্রহ দেখে তার শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। ষোল বৎসর বয়সে তিনি কলকাতায় এসে কালীপ্রসন্ন সিংহের কাছে চাকরি নেন। কালীপ্রসন্ন তার অনূদিত মহাভারত বিনামূল্যে তার বাড়ি থেকে বিতরণ করেছেন। কেউ পেয়েছেন, কেউ পান নি। কিন্তু না-পাওয়া অনুরাগীদের হতাশ চেহারা প্রতাপ লক্ষ্য করেছেন। প্রতাপ কলকাতার চিৎপুরে নর্মাল স্কুলের গায়ে একটি বইয়ের দোকান খোলেন। সাত বছর পরিশ্রম করে মহাভারতের বঙ্গানুবাদ করেন। তার অনূদিত গ্রন্থের দুই হাজার খণ্ড বিক্রয়ের পর এক হাজার খণ্ড বিনামূল্যে বিতরণ করেন। এই সময়ে তিনি একটি ছাপাখানাও করেছিলেন। রামায়ণ, শ্রীমদ্ভগবতগীতা প্রভৃতি বহু পুরাণ গ্রন্থেরও তিনি বঙ্গানুবাদক। এরপর তিনি মহাভারতের মূলানুযায়ী ইংরাজী অনুবাদ করেন এবং এই অনুবাদই তার জীবনের প্রধানতম কীর্তি। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ই মে প্রথম খণ্ড টি প্রকাশিত হয় এবং তার জীবদ্দশায় ৯৪ টি খণ্ড প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তী ছয়টি খণ্ড তার দ্বিতীয় পত্নী সুন্দরী বালা প্রকাশ করেন এবং শততম খণ্ডটি প্রকাশিত হয় ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে। [3]
তৎকালীন বৃটিশ সরকার ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে সি.আই.ই উপাধিতে ভূষিত করে।
১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই জানুয়ারি তিনি পরলোক গমন করেন।