পোল্যান্ড পুনর্দখলকালে ধর্ষণ

পোল্যান্ড পুনর্দখলকালে ধর্ষণ বলতে ১৯৪৪ সালে নাৎসি জার্মানির দখলদারিত্ব থেকে পোল্যান্ডকে মুক্ত করার পর সোভিয়েত সৈন্যরা পোলিশ নারীদের ওপর যে ধর্ষণযজ্ঞ চালিয়েছিল সেটিকে নির্দেশ করা হয়। ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিন বছরে প্রায় ১ লক্ষাধিক পোলিশ নারী সোভিয়েত সৈন্যদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন বলে ধারণা করা হয়।

সোভিয়েত বাহিনীর পোল্যান্ড পুনর্দখল

পশ্চিমমুখী সোভিয়েত আক্রমণের পর পোল্যান্ডের দখলকৃত অঞ্চলসমূহ

১৯৪৪ সালে জার্মানদের কাছ থেকে পোল্যান্ড পুনর্দখল করার পরপরই সোভিয়েত সৈন্যরা পোলিশ নারীদের নির্বিচারে ধর্ষণ করতে আরম্ভ করে দেয়। প্রতিটি শহরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সোভিয়েত সৈন্যরা ধর্ষণ ও লুটতরাজ শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ- ক্রাকোভ শহরে প্রবেশের পরপরই সোভিয়েত সৈন্যরা শহরের বহু নারী ও যুবতীকে ধর্ষণ করে এবং ব্যাপক হারে লুটতরাজ শুরু করে। শহরবাসীর ওপর সোভিয়েত সৈন্যদের অত্যাচার এত মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে যে, সোভিয়েতদের দ্বারা ক্ষমতায় বসানো শহরটির কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষ স্বয়ং জোসেফ স্ট্যালিনের কাছে এর প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠায়। এদিকে শহরটির নিরুপায় অধিবাসীরা গির্জায় গিয়ে সোভিয়েত সৈন্যদের প্রত্যাহারের জন্য প্রার্থনা করতে থাকে[1]

সাইলেশিয়ায় জার্মান নারীদের পাশাপাশি পোলিশ নারীরাও সোভিয়েত সৈন্যদের ধর্ষণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন[2][3]। ১৯৪৫ সালের প্রথম ৬ মাসে দেবস্কা কুজনিয়া শহরে ২৬৮ জন পোলিশ নারী সোভিয়েত সৈন্যদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। ১৯৪৫ সালের মার্চে রাসিবোর্জের কাছের একটি লিনেন কারখানা থেকে সোভিয়েত সৈন্যরা ৩০ জন নারীকে বন্দি করে এবং মাকোভোয় একটি বাড়িতে বহুদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে। যে নারী পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তাঁকে ৪ জন সৈন্য ধর্ষণ করেছিল। কাতোভিজ, জাবর্জ এবং কোরজোভে মাতাল সোভিয়েত সৈন্যরা রাস্তায় জার্মান ও পোলিশ নারীদের আক্রমণ করে এবং সাধারণত প্রকাশ্যেই তাদের গণধর্ষণ করে[2]

ভার্মিয়ামাসুরিয়ার পোলিশ ও জার্মান নারীরাও একইরূপ দুর্ভাগ্যের সম্মুখীন হন[2]। ১৯৪৫ সালের মার্চে সোভিয়েত সৈন্যরা ওলসজতিন শহরের প্রায় প্রতিটি নারীকেই ধর্ষণ করে। এসব ধর্ষিতা নারীদের বয়স ছিল ৮ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে এবং কখনো কখনো একই পরিবারের দাদি, মা ও নাতনি একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার হন। বহু নারী কমপক্ষে কয়েক ডজন সৈন্যের হাতে গণধর্ষণের শিকার হন। ১৯৪৫ সালের ১৭ এপ্রিলে গদানস্কের সোভিয়েত সেনানিবাসের আশেপাশে কাজ করতেন এমন একজন পোলিশ নারী একটি চিঠিতে বর্ণনা করেন: অধিকাংশ ভুক্তভোগীকেই ১৫ বারেরও বেশি ধর্ষণ করা হয়েছে। আমাকে ৭ বার ধর্ষণ করা হয়েছে। এটি ছিল ভয়ঙ্কর। এক সপ্তাহ পরে গদিনিয়া থেকে লেখা একটি চিঠিতে বলা হয়েছিল যে, কেবল সারাদিন ঘরের বেসমেন্টে লুকিয়ে থাকাই মেয়েদের বাঁচার একমাত্র উপায় ছিল[4]

তথ্যসূত্র

  1. Rita Pagacz-Moczarska (২০০৪)। "Okupowany Kraków - z prorektorem Andrzejem Chwalbą rozmawia Rita Pagacz-Moczarska" [Prof. Andrzej Chwalba talks about the Soviet-occupied Kraków]Alma Mater, No 4 (Polish ভাষায়)। Jagiellonian University। মে ২৪, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৫, ২০১৪An interview with Andrzej Chwalba, Professor of history at the Jagiellonian University (and its prorector), conducted in Kraków by Rita Pagacz-Moczarska, and published by an online version of the Jagiellonian University's Bulletin Alma Mater. The article concerning World War II history of the city ("Occupied Krakow"), makes references to the fifth volume of History of Krakow entitled "Kraków in the years 1939-1945," see bibliogroup:"Dzieje Krakowa: Kraków w latach 1945-1989" in Google Books (আইএসবিএন ৮৩-০৮-০৩২৮৯-৩) written by Chwalba from a historical perspective, also cited in Google scholar.
  2. Daniel Johnson (২৪ জানুয়ারি ২০০২)। "Red Army troops raped even Russian women as they freed them from camps"World: Europe। Telegraph Media Group। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৫The rapes had begun as soon as the Red Army entered East Prussia and Silesia in 1944.
  3. Ostrowska, Zaremba: "Kobieca gehenna". Krytyka Polityczna, 4 March 2009. Source: Polityka nr 10/2009 (2695).
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.