পুনর্ভবা নদী
পুনর্ভবা বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী।[1] এটি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিনাজপুর জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২২৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১০২ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক পুনর্ভবা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৭২।[2]
পুনর্ভবা নদী Punarbhaba River | |
কাঞ্চন রেলওয়ে স্টেশনের নিকটে রেলসেতুর উপর থেকে তোলা পুনর্ভবা নদীর দৃশ্য। | |
দেশসমূহ | বাংলাদেশ, ভারত |
---|---|
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
অঞ্চল | রংপুর বিভাগ |
জেলাসমূহ | দিনাজপুর জেলা, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা |
উৎস | শিবরামপুর ইউনিয়নের বিলাঞ্চল |
মোহনা | মহানন্দা নদী |
দৈর্ঘ্য | ২২৩ কিলোমিটার (১৩৯ মাইল) |
ব্যুৎপত্তি
পুনর্ভবা নদী উত্তরবঙ্গে প্রবাহিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এটির বর্তমান উৎপত্তিস্থল হচ্ছে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়নের বিলাঞ্চল। পতিত হয়েছে মহানন্দা নদীতে।[2]
ইতিহাস
পুনর্ভবা নদীর প্রাচীন উৎস ব্রাহ্মণপুর বরেন্দভূমি। ১৭৮৭ খ্রীষ্টাব্দে হিমালয়ের বন্যায় প্রচণ্ড ভূমিধ্বসে সানুর নিকট এ নদীর পার্বত্য উৎসমুখ বন্ধ হয়ে যায়।[3]
প্রবাহ পথ
দিনাজপুর শহর এ নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। বর্তমানে মৃত ঘাঘরা, গাবুরা, কাঁচাই প্রভৃতি নদী এক সময় পুনর্ভবারই উপনদী ছিল। নদীর গতিপথ উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত। আত্রাই থেকে কয়েক কিলোমিটার পশ্চিমে পুনর্ভবার উচ্চতর গতিপথ। দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হওয়ার পর পুনর্ভবা ঢেপা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে, যা করতোয়া নদীর একটি শাখা নদী। দিনাজপুর শহরের ঠিক দক্ষিণে নদীটি পশ্চিম এবং পশ্চিম-কেন্দ্রীয় বরেন্দ্রভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর নদীবিস্তৃত ভূমির প্রশস্ততা ৩ থেকে ৮ কিলোমিটার। চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার রহনপুরের ঠিক দক্ষিণ দিকটি মহানন্দা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। টাঙ্গন নদীর রয়েছে একটি সুরক্ষিত নদীবিস্তৃত ভৃমি, যা পর্বত পাদদেশীয় সমভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত। কুলিক নদীর তীরবর্তী ভৃমি লক্ষণীয়ভাবে তরঙ্গায়িত। নাগর নদী দিনাজপুর জেলার পশ্চিম সীমানার বহু কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি পুনরায় ভোলাহাটের কাছে বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন হয়ে প্রবাহিত হয়েছে ; অতঃপর নবাবগঞ্জ জেলার মধ্য দিয়ে নবাবগঞ্জ শহরের দক্ষিণে পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে। নদীটি জোয়ার ভাটা প্রভাবিত নয়।[4]
অন্যান্য তথ্য
পুনর্ভবা নদীটি জোয়ার-ভাটা প্রভাবিত নয়। পুনর্ভবা নদীর চারটি উপনদী রয়েছে, সেগুলো হলো ঢেপা নদী, টাঙ্গন নদী, কুলিক নদী এবং নাগর নদী।[3]
তথ্যসূত্র
- মাসুদ হাসান চৌধুরী (২০১২)। "আন্তঃসীমান্ত নদী"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ১৩৫-১৩৬। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
- ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ২৫৫-২৫৬।
- মাসুদ হাসান চৌধুরী (২০১২)। "পুনর্ভবা নদী"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।