পুনর্জন্ম

পুনর্জন্ম বা জন্মান্তরবাদ বলতে জীবের মৃত্যুর পর পুনরায় কোনো দেহে জন্ম হওয়াকে বোঝায়। এটি একটি ধর্মীয় মতবাদ যা প্রধাণত হিন্দুধর্ম, জৈনধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, শিখধর্ম সহ রসিক্রুশিয়ান, থিওসফিস্ট, স্পিরিটিস্টগণ এবং উইক্কানদের বিশ্বাস ব্যবস্থায় প্রচলিত। এছাড়া কাব্বালিস্টিক ইহুদি ধর্মেও পুনর্জন্মকে গিলগুল নেশামত (আত্মার পুনর্জন্ম) নামে একটি বিশ্বাস হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[1] মোক্ষ বা মুক্তি বা ঈশ্বরের সাক্ষাত অর্জনের পূর্ব পর্যন্ত পুনর্জন্মের এই ধারা চলতে থাকে এবং মোক্ষ প্রাপ্তির মাধ্যমে এই জন্মান্তরের সমাপ্তি ঘটে। জন্মান্তরবাদ বিশ্বাসের আরেকটি দিক হচ্ছে, এই বিশ্বাস অনুযায়ী প্রতিটি জীবন একই সাথে একটি পরকাল এবং পূর্বকাল। এই বিশ্বাস মতে, বর্তমান জীবন হল পূর্বজন্ম বা কর্মের ফল। এই বিশ্বাস অনুযায়ী আত্মার কখনো সৃষ্টি বা ধ্বংশ হয় না। আত্মাকে একটি নিত্য সত্তা হিসাবে দেখা হয়।

বিভিন্ন সময়ে নানা দার্শনিক এবং গবেষকগণ গবেষণা করলেও বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোনো প্রমাণ আবিষ্কৃত হয়নি। তবে সারা পৃথিবীতে যুগযুগ ধরে পুনর্জন্মের নানা কাহিনি প্রচলিত আছে। রসিক্রুশিয়ানগণ,[2] মৃত্যু-পূর্ব অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মতই লাইফ রিভিউ পর্যায়ের কথা বলেন, যা মৃত্যুর ঠিক পরপরই কিন্তু নতুন জীবন শুরু এবং স্বর্গীয় বিচারের পূর্বে ঘটে। এই ঘটনাটি অনেকটা জীবনের চূড়ান্ত পর্যালোচনা বা চূড়ান্ত রিপোর্ট এর মত।[3]

ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি

হিন্দুধর্ম

হিন্দুধর্মানুসারে জীবের মৃত‍্যু শুধু দেহের হয়, আত্মার নয়। আত্মা চিরস্থায়ী ও অবিনশ্বর।[4] সমস্ত প্রাণীর একটি যোগ রয়েছে এবং তারা সর্বদাই জীবন চক্রাকারে আবর্তিত হয়।[5] অর্থাৎ একবার মৃত্যুবরণ করলে আবার পুনর্জন্মগ্রহণ করে পৃথিবীতে আসে। এই চক্রের সমাপ্তিকে মুক্তি বা মোক্ষ বলা হয় যেখানে এই আত্মা ঈশ্বরের সাথে মিশে যায়।

শ্রীমদভগবদ্গীতায় এই সমন্ধে উল্লেখিত শ্লোক:

জীর্ণ বস্ত্র সকল পরিত্যাগ করিয়া মানব যে প্রকার অন্য নুতন বস্ত্র সকল পরিধান করে, জীর্ণ দেহ সকল পরিত্যাগ করিয়া জীবও সেই প্রকার নুতন দেহ সকল অঙ্গীকার করে।।

শ্রীমদভগবদ্গীতা: অধ্যায় ২, শ্লোক ২২

পূর্বজন্মের কৃতকর্মের ফল অনুযায়ী কোনো জীবাত্মা মানুষ অথবা অন্য কোনো শরীরে জন্মগ্রহণ করেন। এভাবে বারবার জন্মমৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবাত্মা সংসার চক্রে আবর্তিত থাকে। মোক্ষলাভ মাধ্যমে সংসার চক্র থেকে আত্মার মুক্তি ঘটে। সনাতন ধর্মানুসারে মোক্ষলাভ প্রাপ্তের পর ব্যক্তির আর পুনর্জন্ম হয় না। পুনর্জন্মের এই কাহিনী হিন্দু শাস্ত্রে পাওয়া যায় এবং প্রাচীন কাহিনীগুলিতে যা সংরক্ষিত রয়েছে। মহাভারত রামায়ণ এবং পুরানে পুনর্জন্ম সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়।

বৌদ্ধধর্ম

বৌদ্ধরা মনে করে যে মৃত্যুর পরে তাদের পুনর্জন্ম হবে তাদের কর্মফল অনুযায়ী[6] পুনর্জন্মের ধরন কী হবে তা ব্যক্তির কৃতকার্যের (কম্ম বা কর্ম) উপর নির্ভর করবে। যেমন ব্যক্তি যদি দেহ, বাক্য ও মনের দ্বারা লোভ, ঘৃণা ও বিভ্রমের কারণে ক্ষতিকর কাজ করে, তাহলে তারা নিম্ন জগতে বা নরক জগতে থাকবেন যার অর্থ হল একটি পশু বা ভূত হয়ে জন্মানো। অন্যদিকে যদি ব্যক্তি উদারতা, ভালবাসা, দয়া, সহানুভূতি ও জ্ঞানের দ্বারা ভাল কাজ করেন তাহলে তিনি সুখের জগতে বা স্বর্গীয় জগতে জন্মাবেন যার অর্থ হল মানুষ হয়ে জন্মানো।

পুনর্জন্মের পদ্ধতি পুর্ব থেকেই ঠিক করা নয়। এটা বিভিন্ন মাত্রার কম্মের উপর নির্ভর করে। ব্যক্তি কোন অবস্থায় পুনর্জন্ম লাভ করবে তা ঠিক হবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হল শেষ চিন্তার সময়। এই সময়ের অনুযায়ী ভারী কম্ম ফলবে (heavy kamma), সেটা না হলে মৃত্যু নিকট কম্ম (near death kamma) কাজ করবে, যদি তা না হয় তাহলে অভ্যাসগত কম্ম (habitual kamma) কাজ করবে, আর শেষে তাও যদি না হয় তাহলে অবশিষ্ট কম্ম (residual kamma) কাজ করবে যা এর পূর্বের কৃতকার্যের উপর নির্ভর করে। থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম অনুসারে একজন মানুষ পুনর্জন্ম লাভ করতে পারে এমন ৩১টি অস্তিত্বের জগতের কথা বলা হয়েছে।

মহাযান বিশ্বাসের পিওর ল্যান্ড বৌদ্ধধর্ম এই ৩১টি জগৎ ছাড়াও আরেকটি বিশেষ স্থানের কথায় বিশ্বাস করে যাকে পিওর ল্যান্ড বা পবিত্র ভূমি বলা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, প্রত্যেক বুদ্ধেরই তাদের নিজস্ব পবিত্র ভূমি থাকে যা তাদের যোগ্যতা বা সদগুণ দিয়ে সচেতন ব্যক্তির হিতার্থে তৈরি হয়েছে। সচেতন ব্যক্তি সমনোযোগে বুদ্ধদেরকে স্মরণ করলে এই পবিত্র ভূমিতে পুনর্জন্ম লাভ করেন এবং একজন বুদ্ধ হবার জন্য প্রশিক্ষিত হন। তাই পিওর ল্যান্ড বৌদ্ধধর্মের প্রধান চর্চা হল বুদ্ধের নাম ভজন করা।

তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মের টিবেটান বুক অব ডেড -এ মৃত্যু এবং পুনর্জন্মের মধ্যে একটি মধ্যবর্তী অবস্থার কথা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মৃতব্যক্তিগণ জ্ঞানের উজ্জ্বল আলো খুঁজে পাবেন যা ঊর্ধ্বে যাবার একটি সোজা রাস্তা দেখাবে এবং এর সাহায্যে ব্যক্তি পুনর্জন্মের চক্র ত্যাগ করতে সক্ষম হবেন। অনেক কারণেই মৃত ব্যক্তি সেই আলো অনুসরণ করে না, অনেকে জীবদ্দশায় কখনও এই মধ্যবর্তী অবস্থা ও আলোর ব্যাপারে শোনেও নি, অনেকে পশুদের মত কেবল মৌলিক প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, আবার অনেকের ভয়ও থাকতে পারে যা জীবদ্দশায় থাকা খারাপ কাজ অথবা অহংকারের কারণে তাদের মাঝে সৃষ্টি হতে পারে। এই মধ্যবর্তী অবস্থায় সচেতনতা খুবই নমনীয়, তাই ধার্মিক হওয়া, ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করা এবং নেতিবাচক ধারণাগুলো এড়িয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে অবচেতন থেকে আসা ধারণাগুলো প্রচণ্ড মেজাজ এবং ভীতিকর দৃশ্যের সৃষ্টি করতে পারে। এই অবস্থায় মৃতকে বুঝতে হবে যে, এই প্রদর্শনগুলো কেবলই মনের ভেতরের চিন্তার প্রতিফলন। কেউই তাদেরকে আঘাত করতে বা ক্ষতি করতে পারবে না, কারণ তাদের কোন বস্তুগত শরীর নেই। মৃত ব্যক্তি বিভিন্ন বুদ্ধের কাছ থেকে সাহায্য লাভ করে যারা তাদেরকে উজ্জ্বল আলোর পথ দেখান। যারা শেষ পর্যন্ত এই পথ অনুসরণ করেন না, তারা উন্নততর পুনর্জন্ম লাভের জন্য সংকেত পান। গত জন্মের যেসব ব্যক্তি ও বস্তুর মায়া তিনি এখনও বয়ে চলেছেন সেগুলোকে তাকে ত্যাগ করতে হয়। তাদেরকে প্রস্তাব করা হয় যাতে তারা একটি পরিবার গ্রহণ করেন যেখানে পিতামাতা ধর্মে বিশ্বাসী হবেন, যাতে তিনি সকল জীবের প্রতি ভালবাসার ইচ্ছা নিয়ে পুনর্জন্ম লাভ করতে পারেন।

বৌদ্ধধর্ম অনুসারে, জীবন হল মহাবিশ্বের একটি মহাজাগতিক শক্তি এবং মৃত্যুর পর এটা মহাবিশ্বের সাথে আবার জুড়ে যায়। আর যখন সেই জীবনের জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজে পাওয়ার সময় হয় তখন এটি জন্ম লাভ করে। যেকোন জীবনের দশটি জীবনাবস্থা রয়েছে, এগুলো হল: নরক, ক্ষুধা, রাগ, পশুবৃত্তি, পরমানন্দ, মানবিকতা, শিক্ষণ, বোধগম্যতা, বোধিসত্ত্ব এবং বুদ্ধত্ব। এগুলোর মধ্যে জীবন যে অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে, জীবন পুনরায় সেই অবস্থাতেই আবার জন্মলাভ করে।"

শিখ ধর্ম

শিখধর্মে পরকাল সম্পর্কিত খুব শক্তিশালী ধারণা রয়েছে। শিখরা বিশ্বাস করে যে আত্মারা আধ্যাত্মিক জগতের অংশভূক্ত যার উৎপত্তি ঈশ্বরের থেকে হয়েছে। যাই হোক, শিখদের মধ্যে পরকাল নিয়ে একটি বড় বিতর্ক রয়েছে। অনেকে বিশ্বাস করেন, অনেকে বিশ্বাস করেন যে শিখধর্মের পরকালে তাদের ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থ সাহিবের স্তবক অনুযায়ী পুরস্কার এবং শাস্তির ব্যবস্থা আছে। কিন্তু একটি বিশাল সংখ্যার শিখগণ অন্যরকম বিশ্বাস করেন এবং মনে করেন যে সেইসব স্তবকগুলো রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

কিন্তু কেউ শিখ ধর্মগ্রন্থগুলোকে বিচক্ষণতার সহিত বিশ্লেষণ করলে দেখতে পারেন যে গুরু গ্রন্থ সাহিব এবং দশম গ্রন্থে পরকালের অনেক ঘটনায় স্বর্গ ও নরকের অস্তিত্বের কথা সূক্ষ্মভাবে বলা আছে। সুতরাং সেখান থেকে বলা যায় শিখধর্ম স্বর্গ ও নরকের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। যাইহোক, স্বর্গ ও নরক ব্যক্তিকে কেবল পুরষ্কৃত করতে ও শাস্তি দিতে তৈরি করা হয়েছে, পুরস্কার বা শাস্তি লাভ শেষ হলে ব্যক্তিকে আবার জন্ম নিতে হবে। ঈশ্বরের সাথে যুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে এই জন্মমৃত্যুর চক্রের মধ্যেই থাকতে হবে। শিখ ধর্মগ্রন্থগুলো অনুসারে মানবিক আকার হল ঈশ্বরের সবচেয়ে নিকটবর্তী আকার এবং ঈশ্বরের সাথে পুনরায় যুক্ত হবার জন্য সবচাইতে ভাল সুযোগ। শিখ গুরুরা বলেন যে, কিছুই মরে না, কিছুই জন্মায় না, সবকিছুই চিরকাল বর্তমান থাকে, এরা শুধু নিজেদের আকৃতি বদল করে। এটা একটি উচ্চতর দর্শন। এটা অনেকটা একটি পোশাকের আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে থাকার মত, আপনি একটি পোশাক গ্রহণ করবেন, একে পড়বেন এবং এরপর একে ত্যাগ করবেন, তারপর আরেকটা পড়বেন। আপনি কেবল একটি আকার থেকে আরেকটি আকারে পরিবর্তিত হচ্ছেন। আসলে, আপনার আত্মা কখনই জন্মলাভ বা মৃত্যুবরণ করে না। আপনার আত্মা ঈশ্বরের একটি অংশ এবং তাই তা চিরকাল জীবিত থাকে।[7]

খ্রিস্টান ধর্ম

খ্রিস্ট ধর্মের বিভিন্ন আখ্যা পুনর্জন্মকে অস্বীকার করে। কিন্তু তবুও পৃথিবীতে অনেক খ্রিস্টান এটিতে বিশ্বাস করে। ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত একটি পিউ ফোরাম জরিপ অনুযায়ী আমেরিকার খ্রিস্টানদের ২৪% পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে।[8] এছাড়াও ১৯৮১ সালে ইউরোপে একটি জরিপে দেখা যায় যে সেখানকার ৩১% লোক পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে।[9]

সুফিবাদ

হিন্দুধর্মের মতো সুফিগণও পুনর্জন্মকে তানাসুখ নামে সমর্থন করে থাকে। আল বিরুনি তার তাহক্বীক মা লিলহিন্দ মিন মাকুলাত মাকুলাত ফী আলিয়াক্বল'আম মারযুলা (ভারতের বক্তব্য নিয়ে সমালোচক গবেষণাঃ যৌক্তিকভাবে গ্রহণীয় নাকি বর্জনীয়) বইয়ে হিন্দুধর্মের কয়েকটি বিষয়ের সঙ্গে সুফিবাদের মিল দেখিয়েছেন, আত্মার সাথে রুহ, তানাসুখের সাথে পুনর্জন্ম, ফানাফিল্লাহর সঙ্গে মোক্ষ, ইত্তিহাদের সাথে জীবাত্মায় পরমাত্মায় মিলন, হুলুলের সাথে নির্বাণ, ওয়াহদাতুল উজুদের সাথে বেদান্ত, সাধনার সঙ্গে মুজাহাদা।

আহ্‌মদীয়া

আহমাদি মুসলিমরা বিশ্বাস করেন যে পরকাল কোন বস্তুগত বিষয় নয়, বরং এর প্রকৃতি আধ্যাত্মিক। ইসলামের আহ্‌মদীয়া ধারার প্রবর্তক মিরজা গুলাম আহমেদের মতে, আত্মা আরেকটি বিরল অস্তিত্বের জন্ম দেবে। এই অস্তিত্বটি এমনভাবে পৃথিবীর জীবনের মত হবে যে, আত্মা পৃথিবীতে মানব অস্তিত্বের সাথে যেরকম সম্পর্ক রাখ, এই অস্তিত্বও আত্মার সাথে ঠিক সেরকম সম্পর্ক রাখবে। পৃথিবীতে যদি একজন ব্যক্তি সৎ জীবন যাপন করেন এবং নিজেকে ঈশ্বরর ইচ্ছায় স্থাপন করেন, তাহলে তার স্বাদ এমন হয়ে যায় যাতে তিনি পার্থিব লোভ লালসার বিরুদ্ধে গিয়ে আধ্যাত্মিক সুখ লাভ করতে পারেন। এর মাদ্যমে একটি "ভ্রূণীয় আত্মা" গঠিত হতে থাকে। তখন ব্যক্তির উপভোগের স্বাদ বদলে যায়। যেমন, তখন তিনি অন্যের সুখের জন্য নিজ স্বার্থত্যাগ করায় উপভোগ করেন। আহ্‌মদীয়া বিশ্বাস অনুযায়ী এই অবস্থায় ব্যক্তি তার হৃদয়ে পরিতৃপ্তি এবং শান্তি খুঁজে পান। এসময় আত্মার ভেতরের আত্মা তার আকৃতি লাভ করতে থাকে।[10]

পশ্চিমা বিশ্বে

পুনর্জন্মের গবেষণা

বিভিন্ন সময় পুনর্জন্ম নিয়ে অনেকে গবেষণা করেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন মনোবিজ্ঞানী ইয়ান স্টিভেনসন। স্টিভেনসন তার গবেষণার জন্য পুনর্জন্মের পরামর্শদাতা বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তার এই ধারণা যে, আবেগ, স্মৃতি এবং এমনকি শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলি এক জীবন থেকে অন্য জীবনে স্থানান্তরিত হতে পারে।[11] আন্তর্জাতিক ফিল্ডওয়ার্কে চল্লিশ বছর ধরে তিনি ৩,০০০টি শিশু নিয়ে কাজ করেছেন যারা অতীতের জীবন স্মরণ রাখার দাবি করেছে।[12] তিনি পুনর্জন্মের উপর প্রায় ৩০০টি গবেষণাপত্র এবং ১৪টি বইয়ের লিখেছিলেন, যার মধ্যে Twenty Cases Suggestive of Reincarnation (১৯৬৬), Cases of the Reincarnation Type (৪ খণ্ড, ১৯৭৫-১৯৮৩) এবং European Cases of the Reincarnation Type(২০০৩)। তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি ছিল ২,২৬৮-পৃষ্ঠা, দুই-খণ্ডের Reincarnation and Biology: A Contribution to the Etiology of Birthmarks and Birth Defects(১৯৯৭)। এতে এমন দুইশটি ক্ষেত্রে রিপোর্ট করেছে যেখানে জন্মচিহ্ন এবং জন্মগত ত্রুটিগুলো মৃত ব্যক্তির উপর একটি ক্ষতের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে হয়েছিল যার জীবন শিশুটি স্মরণ করেছিল। তিনি সাধারণ পাঠকের জন্য একই গবেষণার একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ লিখেছেন, Where Reincarnation and Biology Intersect (১৯৯৭)[13]

এছাড়াও আটলান্টার ইয়ার্কস ন্যাশনাল প্রাইমেট রিসার্চ প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করা দুই গবেষক ব্রায়ান জি. ডায়াস এবং কেরি রেসলার পুনর্জন্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন। জার্মান থেরাপিস্ট ট্রুটজ হার্ডোর এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি তার রচিত চিলড্রেন হু হ্যাভ লিভড বিফোর: রিইনকারণেশন টুডে বইতে জানান ড্রুজ আদিবাসীদলের একটি ছেলের কথা উল্লেখ করেছেন যে পুর্বজন্মের কথা বলতে পারতো। এছাড়াও পুনর্জন্ম নিয়ে গবেষণাকালে জিম টাকার একজন শিশুর খোঁজ পান যে তার পুর্বজন্মের কথা বলেছিল। তিনি এরকম আরও অনেকের সাথে দেখা করেছেন যাদের বয়স ২ থেকে ৬ বছরের মধ্য এবং তার পুর্বজন্মের কথা বলতে পারতো।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Gilgul Neshamot - Reincarnation of Souls"। Projectmind.org। ২০১৫-০৫-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৩-০৮
  2. Max Heindel, The Rosicrucian Christianity Lectures (The Riddle of Life and Death), 1908, আইএসবিএন ০-৯১১২৭৪-৮৪-৭
  3. Max Heindel, Death and Life in PurgatoryLife and Activity in Heaven
  4. Mark Juergensmeyer ও Wade Clark Roof ২০১১, পৃ. ২৭২।
  5. Jeaneane D. Fowler ১৯৯৭, পৃ. ১০।
  6. Becker, Carl B. (১৯৯৩)। Breaking the circle: death and the afterlife in Buddhism। Carbondale: Southern Illinois University Press। পৃষ্ঠা viii। আইএসবিএন 0-585-03949-6। Buddhists believe in karma and rebirth, and yet they deny the existence of permanent souls.
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২২
  8. বিশ্লেষণ ডিসেম্বর ৯, ২০০৯ (ডিসেম্বর ০৬, ২০০৯)। "pewforam.org" এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  9. "spritual-wholeness.org"। spritual-wholeness.org। ২৩ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৭
  10. Mirza Tahir Ahmad। An Elementary Study of Islam। Islam International Publications। পৃষ্ঠা 50। আইএসবিএন 1-85372-562-5।
  11. Hopkins Tanne (British Medical Journal), April 2, 2007.
  12. Woodhouse 1996, pp. 143–144.
  13. For his having been on the founding committee of the Society for Scientific Exploration, see "Stevenson 2006" (পিডিএফ)। জুলাই ২১, ২০০৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১, ২০১৬, p. 19.

টেমপ্লেট:Reincarnation research

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.