পাণিনি

পাণিনি (সংস্কৃত: সংস্কৃত: पाणिनि, আইপিএ: [pɑːɳin̪i], পারিবারিক নাম, অর্থ "পাণির বংশধর") ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় লৌহযুগের সংস্কৃত ব্যাকরণবিদ । তিনি খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে গান্ধার রাজ্যের পুষ্কলাবতী নগরীতে বিদ্যমান ছিলেন ।[1][2]

পাণিনি
জন্মখ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দী
বর্তমান পাকিস্তানের লাহোর শহরের নিকট শালাতুর গ্রাম
মৃত্যুত্রয়োদশী তিথি
পেশাব্যাকরণবিদ ও কবি
জাতীয়তাভারতীয়
ধরনসংস্কৃত ব্যাকরণ নিয়মাবলীর স্রষ্টা
বিষয়অষ্টাধ্যায়ী, লিঙ্গানুশাসনম্, জাম্বুবতীবিজয়ম্
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিঅষ্টাধ্যায়ী
সঙ্গীদাক্ষী (মাতা), পণিন (শালঙ্কি) (পিতা)
কাশ্মীরে প্রাপ্ত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ধর্মকীর্তি কর্তৃক ১৬৬৩ সালে প্রতিলিপিকৃত পাণিনির সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থের উপর ভিত্তি করে বার্চ গাছের ছালে লিখিত পাণ্ডুলিপি।

জন্ম ও শৈশব

যতদূর জানা গেছে পাণিনি বর্তমান পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি অঞ্চলের (প্রাচীন ভারতবর্ষের অন্তর্গত) আটকের নিকট শালাতুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । তিনি দাক্ষীর পুত্র । পাণিনির যুগ বা কাল নিয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায় নি । ড. আহমদ শরীফের মতে তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ৭ম শতকে বর্তমান ছিলেন । পাশ্চাত্যের গো সু স্টুকারের মতে তার কাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৮ম শতাব্দী । জার্মান পণ্ডিত ম্যাক্সমুলার এবং অয়েবার মনে করেন পাণিনির সময়কাল খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দী । কথাসরিৎসাগর অনুসারে পাণিনি বর্ষ নামক আচার্যের নিকট থেকে ব্যাকরণ শিক্ষা গ্রহণ করেন । ইন্দ্রদত্ত এবং ব্যাদি ছিলেন তার সামসময়িক সহপাঠী । [3]

অষ্টাধ্যায়ী

তিনি তার অষ্টাধ্যায়ী নামক সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থের জন্য বিখ্যাত । এই গ্রন্থে তিনি সংস্কৃত রূপমূলতত্ত্বের ৩,৯৫৯টি নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করেন ।[2] এই গ্রন্থটি বৈদিক ধর্মের প্রামাণ্য সহায়ক গ্রন্থ বেদাঙ্গের ব্যাকরণ শাখার মূল গ্রন্থ । এই গ্রন্থের অধ্যায় সংখ্যা ৮ এবং সূত্রসংখ্যা ৩৮৬৩টি । গ্রন্থটি অাট অধ্যায়ে বিভক্ত ব'লে এর নাম অষ্টাধ্যায়ী । প্রতি অধ্যায়ে চারটি পাদ বা পর্ব আছে । এই গ্রন্থে সন্ধি , সুবন্ত , কৃদন্ত , উণাদি , আখ্যাত , নিপাত , উপসংখ্যান , স্বরবিধি , শিক্ষা , তদ্ধিত প্রভৃতি ব্যাকরণিক বিষয় স্থান পেয়েছে । [4]

অষ্টাধ্যায়ী সংস্কৃত ভাষার প্রাচীনতম ব্যাকরণগুলির অন্যতম । যদিও পাণিনি উনাদিসূত্র, ধাতুপাঠ, গণপাঠ প্রভৃতি তার পূর্বসূরিদের কয়েকটি ব্যাকরণগ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন ।[2] পাণিনির ব্যাকরণ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানসৃষ্টিশীল ভাষাবিজ্ঞানের প্রাচীনতম গ্রন্থ । নিরুক্ত , নিঘণ্টুপ্রাতিশাখ্য গ্রন্থগুলির সঙ্গে পাণিনির ব্যাকরণ ভাষাবিজ্ঞানের ইতিহাসের সূচনা ঘটায় ।

পাণিনির জ্ঞানগর্ভ ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাকরণ তত্ত্ব বৈদিক সংস্কৃতের অন্তকাল ও ধ্রুপদি সংস্কৃতের সূচনাকালের সন্ধিক্ষণ রূপে পরিগণিত হয় ।

পাণিনির সমালোচনা করে বার্ত্তিককার কাত্যায়ন যা লিখেছিলেন এবং কাত্যায়নকে সমালোচনা করে পতঞ্জলি যা লিখেছিলেন সবগুলোই শেষ পর্য্যন্ত পাণিনির অস্টাধ্যায়ী ব্যাকরণেরই অঙ্গ হয়ে উঠল। সেই জন্য পাণিনির অস্টাধ্যায়ী ব্যাকরণকে ত্রিমুনি ব্যাকরণ বলা হয়।

পাদটীকা

  1. Frits Staal, Euclid and Pāṇini, Philosophy East and West, 1965; R. A. Jairazbhoy, On Mundkur on Diffusion, Current Anthropology (1979).
  2. Sanskrit Literature The Imperial Gazetteer of India, v. 2, p. 263.
  3. বৈদিক ব্যাকরণ, ধীরেন্দ্রনাথ তরফদার, বাংলা একাডেমি
  4. সিদ্ধান্তকৌমুদীর আলোকে কৃৎ প্রত্যয় বিচার, দিলীপ কুমার ভট্টাচার্যয়, বাংলা একাডেমি

তথ্যসূত্র

  • Pāṇini. Ashtādhyāyī. Book 4. Translated by Chandra Vasu. Benares, 1896. (সংস্কৃত)(ইংরেজি)
  • ও'কনর, জন জে.; রবার্টসন, এডমুন্ড এফ., "পাণিনি", ম্যাকটিউটর গণিতের ইতিহাস আর্কাইভ, সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয় 2000.
  • Prince, Alan and Paul Smolensky (2004): Optimality Theory: Constraint Interaction in Generative Grammar. Oxford: Blackwell.
  • Kadvany, John (2007). Positional Value and Linguistic Recursion. Journal of Indian Philosophy December 2007.
  • T.R.N. Rao. Panini-backus form of languages. 1998.

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.