পাটগ্রাম উপজেলা
পাটগ্রাম বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
পাটগ্রাম | |
---|---|
উপজেলা | |
পাটগ্রাম পাটগ্রাম | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°২১′ উত্তর ৮৯°১′ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | লালমনিরহাট জেলা |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | রুহুল আমিন বাবুল (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) |
আয়তন | |
• মোট | ২৬১.৫৯ বর্গকিমি (১০১.০০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• মোট | ১,৯৩,১৮৫ |
• জনঘনত্ব | ৭৪০/বর্গকিমি (১,৯০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ৫২ ৭০ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
লালমনিরহাট জেলা সদর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এই উপজেলার অবস্থান। এই উপজেলার স্থানাঙ্ক ২৬°২১′ উত্তর ৮৯°০১′ পূর্ব। এই উপজেলাটির উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে হাতীবান্ধা উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অংশ।
প্রশাসনিক এলাকা
এই উপজেলায় একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এগুলো হলো-
ইতিহাস
পাটগ্রামের ইতিহাসের অন্যতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান আর্মি এখানে প্রবেশ করতে পারেনি পাটগ্রামের বীরজনতার বীরত্বের কারণে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাটগ্রাম উপজেলা ছিল মুক্তাঞ্চল। এখানে কোন যুদ্ধ হয়নি। সারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের অভয়ারণ্য ছিল পাটগ্রাম উপজেলা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এখানে অনেকবার এসেছিলেন। অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ মুক্তাঞ্চল পাটগ্রাম এলে এক জনসভার আয়োজন করা হয়। উক্ত জনসভায় উপস্থাপনা করেছিলেন মরহুম আনোয়ারুল ইসলাম নাজু। এই সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আবেদ আলী।
এই উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের হাসরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল স্বাধীনতাযুদ্ধের ০৬নং সেক্টরের হেডকোয়ার্টার, এর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন এম. কে বাসার।
জনসংখ্যার উপাত্ত
এই উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৮৯,০৭৭ জন। এদের মধ্যে ৫১.৪৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৮.৫৫শতাংশ মহিলা।
শিক্ষা
- উচ্চ বিদ্যালয়
- বুড়িমারী হাশর উদ্দিন দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
- ইসলামী আদর্শ বিদ্যা নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়
- পাটগ্রাম হুজুরউদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- ধবলসতী উচ্চ বিদ্যালয়
- পাটগ্রাম তারক নাথ (টিএন) স্কুল এন্ড কলেজ
- পাটগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
- বাউরা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়
- জগতবেড় উচ্চ বিদ্যালয়
- পাটগ্রাম এপি সিনিয়র মাদ্রাসা
- বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- মির্জারকোট উচ্চ বিদ্যালয়
- ধবলগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়
- আমানতুল্যা প্রধান মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- আলিমুদ্দিন ছুবুরউদ্দিন গালর্স উচ্চ বিদ্যালয়
- জোংড়া ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয়
- কাউয়ামারী আপ্তার উদ্দিন প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়।
- রসুলপুর আব্দাল হোসেন বসুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
- মহাবিদ্যালয়
- সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গনি কলেজ
- পাটগ্রাম আদর্শ ডিগ্রি কলেজ
- পৌর টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ
- বি এম কলেজ
- পাটগ্রাম টেকনিক্যাল এন্ড বি এম কলেজ।
- পাটগ্রাম মহিলা ডিগ্রি কলেজ।
- নাসিরউদ্দিন কলেজ
অর্থনীতি
বালু ও নুড়ি পাথরের জন্য বিখ্যাত এই উপজেলা, তামাক উৎপাদনেও শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার। আবাদ যোগ্য ২৪,৭০৫ হেক্টর জমির মধ্যে ২১,৩৫২ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। মোট আবাদী জমির ১১.৩৫% জমি তে-ফসলী, ৬২.৬২% জমি দো-ফসলী এবং ২৩% জমি এক-ফসলী। জনপ্রতি মোট জমির পরিমাণ ০.১৩ হেক্টর আর মোট জমির ৪৭% জমিতে ইরি ধান আবাদ করা হয়ে থাকে। এখন প্রধান অর্থকারী ফসলের মধ্যে ভুট্টা প্রথমে রয়েছে। এই উপজেলার অর্থনীতির পট পরিবর্তন করে দিয়েছে একমাত্র ভুট্টা। নিশ্চিত ভাবে একমাত্র লাভবান হওয়া ফসলের নাম বলতে ভুট্টা বোঝানো হয়। এ উপজেলার উৎপাদিত ভুট্টার এক তৃতীয়াংশ ভুট্টার আবাদ হয় পাটগ্রাম শহরের দক্ষিণ- পূর্বের,ধরলা নদীর উপত্যকায় অবস্থিত ধবলগুড়ি গ্রামে।
যোগাযোগ
এই উপজেলার বুড়িমারীর সাথে ভারতের চেংরাবান্ধা সীমান্তে একটি স্থলবন্ধর রয়েছে।
সাংস্কৃতিক
পাটগ্রাম উপজেলা ঐতিহাসিক ভাবে একটি সাংস্কৃতিক ভাবে সমৃদ্ধ অঞ্চল। সারা উপজেলায় প্রায় পঞ্চাশটির মতো সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রাণের-৭১, পাটগ্রাম নৃত্যকলা একাডেমি, রংতুলি একাডেমি, করডর থিয়েটার, স্পৃহা, ধরলা সংগীত নিকেতন, ভোটার উৎসাহ টিম, টিম ৭১ উল্লেখযোগ্য। উপজেলার সব সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে পাটগ্রাম উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
নদ-নদী
- ধরলা
- সানিয়াজান
- চেনাকাটা
- সিংগিমারী নদী
তথ্যসূত্র
- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে পাটগ্রাম"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪।