পরাগ
পরাগ মিচিং জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য কৃষিভিত্তিক উৎসব, এই উৎসব ৫ দিন ধরে উদযাপন করা হয়। সাধারণত চাষ শুরু করার পর এই উৎসব শুরু হয়[1]। সৃষ্টিকর্তা, মাতা পৃথিবী তথা পূর্বপুরুষদের তুষ্ট করার উদ্দেশ্য এই উৎসব পালন করা হয়। এই উৎসব গ্রামের ডেকা-গাভরুদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় বলে রং-আনন্দের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। আলি আঃ লৃগাঙের মতো এই উৎসবেও প্রচুর গীতি-মাত, নৃত্য ইত্যাদির আয়োজন হয়। এই উত্সবের অন্য একটি নাম হচ্ছে "নরসিংহ বিহু"।
পরাগ | |
---|---|
ধরন | লোক উৎসব |
পুনরাবৃত্তি | বার্ষিক |
অবস্থান (সমূহ) | আসাম, ভারত |
পৃষ্ঠপোষক(গণ) | মিচিং জনগোষ্ঠী |
বিবরণ
প্রথম দিনের সকল আয়োজন শেষ করার পর রাতে 'মিবু'র সাদরে 'মিবু-দাগনাম' অনুষ্ঠান শুরু হয়। এই অনুষ্ঠানে মিবুর সঙ্গে সমস্ত ডেকা-গাভরু সারি-সারিতে নৃত্য করে। এই নৃত্যে 'আঃবাঃ' গীতি গাওয়া হয়। এই গানগুলির মাধ্যমে মানব সৃষ্টিকর্তা 'চেদীবাঃবু' এবং 'মেঃলং-নাঃনী'কে স্মরণ করা হয়। এমন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানগুলিতে মিবুর সঙ্গে গ্রামের বয়োবৃদ্ধরা বধ করা গাহরি-এর আগমঙহে 'আচিন-তাগির' বা মঙ্গল চায়। দ্বিতীয়দিন নিমন্ত্রিত অতিথি 'মিনম'দের আদর শুশ্র্ষা করা হয়। পরাগ উৎসবে চুবুরীয়া গ্রাম ছাড়াও দূর-দূরান্তের গ্রামকেও নিমন্ত্রণ করা হয়। পরাগ উৎসবে গ্রামের মুরংঘর অনুষ্ঠিত করা হয়। মুরংঘর গ্রামের মধ্যে নয় এমন কোনো একমাথার উন্মুক্ত স্থানে পূর্ব-পশ্চিমে বানানো হয়। একে বাঁশ, কাঠ এবং খড় দিয়ে নির্মাণ করা হয়। মুরংঘরে বেড়া থাকে না; এটি একটি মুকুলি চাংঘর। এর দুমাথায় চাঙে ওঠা-নামা করতে জখলা লাগানো থাকে। পঃরাগের কেউনিশা গ্রামের ডেক-গাভরু এবং মিনমরা এক সাথে মুরংঘরে শোয়। এটি মিচিংদের পরম্পরাগত রীতি। পঃরাগ উৎসবের অন্যতম অনুষ্ঠান হল- 'পঃবর্-কাতনাম্' এবং 'এঃগ-মাননাম'। 'পঃবর' বাঁশ-বেতের সাজানো চুপি আকৃতির এক সাজ, একে আপাং চাকিবে ব্যবহার করা হয়। 'এঃগ-মাননাম' বা গাহরি বধ করা অনুষ্ঠান। এইমতো তিনদিন, তিন রাত রং-আনন্দ, ভোজভাত এবং পূজা-অর্চনার পর পঃরাগ উৎসবের সামরে মরা হয়।
মুরং ঘর
মুরং ঘর মিচিং সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্রস্বরূপ। মুরংঘরের প্রকাণ্ড খুঁটি এবং চ'তিগুলিতে বি রকম কারু-কার্য খচিত থাকে। তদুপরি এইগুলিতে দঃঞি (সূর্য্য), পঃল (চন্দ্র), তাকার (নক্ষত্র)-এর চিত্র ছাড়াও বিভিন্ন জীব-জন্তু, পশু-পক্ষী ইত্যাদির নানারঙের চিত্র অংকিত থাকে। এইগুলিতে জেঠি, গাহরি, বাঘ, হাতী এবং নানা ধরনের পাখি, বাঁদর ইত্যাদির ভাস্কর্য্য ব্যবহার করে। গ্রামের সকল লোক মিলে সামূহিকভাবে মুরং নির্মাণ করে। একটি মিচিং সাংস্কৃতির জীবনের রঙ্গমঞ্চ[2]।
তথ্যসূত্র
- "Porag"। India9। জুন ১৫, ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯।
- গ্রন্থ: মিচিং সমাজ এবং সংস্কৃতি, লেখক: ইন্দ্রেশ্বর পেগু, পৃষ্ঠা: ৬ - ৮