নোয়াখালী জিলা স্কুল
নোয়াখালী জিলা স্কুল বাংলাদেশের নোয়াখালীর জেলার মাইজদী কোর্ট শহরে অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জন্মলগ্ন থেকেই এটি সরকারি স্কুল। তখন এটি গঠনে আয়ারল্যান্ডের ইংরেজ কর্মকর্তা মি.জোনসের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি ছিল। ১৮৫০ সালে ইংরেজ সরকার ভারতীয় উপমহাদেশে ১৭টি জেলায় ১টি করে জিলা স্কুল গঠন করে। তবে বিভাগীয় পর্যায়ে যেসব স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন সেগুলো কলেজিয়েট নামে পরিচিত হয়েছে। [2] তার মধ্যে বাংলাদেশের জিলা স্কুল ছিলো ১৪টি, পশ্চিমবঙ্গের জিলা স্কুল ছিলো ৩টি। তম্মধ্যে বাংলাদেশের একটি জিলা স্কুল নোয়াখালী জিলা স্কুল।[2]
নোয়াখালী জিলা স্কুল | |
---|---|
![]() | |
![]() | |
অবস্থান | |
![]() | |
তথ্য | |
ধরন | সরকারী |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৫০ |
প্রধান শিক্ষক | জনাব নূর উদ্দিন মোঃ জাহাঙ্গীর[1] |
অনুষদ | ৪০ |
শ্রেণী | ৫ম - ১০ম |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ১৫০০ |
ওয়েবসাইট | www |
ইতিহাস
বিদ্যালয়টি পুরাতন নোয়াখালী শহরে ১৮৫০ সালে জোনস, আয়ারল্যান্ডের একজন বিটিশ কর্মকর্তা বেসরকারি ভাবে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।[2] পরবর্তীতে প্রায় তিন বছর পর একটি হাই স্কুল (আরকে হাই স্কুল) রুপে সরকারি ভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯২০ সালে বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়, ফলে ১৯২১ সালে মহববতপুর গ্রামের পূর্ব প্রান্তে মন্তিয়ার ঘোনায় বিদ্যালয়টিকে স্থানান্তরিত হয়। বিদ্যালয়টি আবারো নদী ভাঙ্গনের শিকার হলে ১৯২৩ সালের ১ জানুয়ারি আর.কে জুবিলী বিদ্যালয়ে এটিকে স্থানান্তর করা হয় ও বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় আর.কে জিলা স্কুল। ১৯৩১ সালে বিদ্যালয়টি আবার নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে, ফলে বিদ্যালয়কে আহম্মদিয়া মাদ্রাসায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে এটির প্রভাতী শাখা চালু হয়। বিদ্যালয়টি আবারও নদী ভাঙ্গনে পড়লে বঙ্গ বিদ্যালয়ে ও ১৯৪৮ সালে তা বঙ্গবিদ্যালয় থেকে কারামতিয়া মাদ্রাসায় আনা হয়। ১৯৫৩ সালে কারামতিয়া মাদ্রাসা থেকে এটি বর্তমান মাইজদী সদরে প্রধান সড়কের পাশে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৫৮ ও ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়, পরে এটিকে পুনঃনির্মাণ করা হয়।[2]
অবকাঠামো
বিদ্যালয়টি ৮ একর ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে এখানে ৩টি বড় ভবন, ছাত্রদের জন্য ২ টি আবাসিক হোস্টেল রয়েছে। বিদ্যালয়ের আঙিনায় একটি বড় মাঠ রয়েছে। বিদ্যালয়ে বড় মিলনায়তন, ক্যান্টিন, শাহীদ মিনার রয়েছে। বিদ্যালয়ে সমৃদ্ধ বিজ্ঞান গবেষণাগার রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকালে সমাবেশ, বার্ষিক ক্রীড়া এবং গেমস, বার্ষিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করে।[2]
সুবিধাসমূহ
বিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ের আলাদা আলাদা বিজ্ঞানাগার রয়েছে। এছাড়াও একটি স্কাউট, বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট,সাইন্স ক্লাব এবং ডিবেটিং ক্লাবসহ আরও বিভিন্ন ধরনের ক্লাব আছে।
শিক্ষার্থীদের পোশাক
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাক হল সাদা প্যান্ট, সাদা হাফ শার্ট/শীতকালে ফুল শার্ট (এক পকেট বিশিষ্ট), সাদা কেডস, নেভি ব্লু সোয়েটার (শীতকালে), কালো বেল্ট (দেড় ইঞ্চি চওড়া)
অতিরিক্ত ক্রিয়াকলাপ
- বিএনসিসি
- স্কাউটিং
- রেড ক্রিসেন্ট
- ক্রীড়া (ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন)
- বিজ্ঞান ক্লাব
- বিতর্ক
- বিজ্ঞান মেলা
- সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কর্মসূচি
- শিক্ষা সফর
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন ছাত্র
যে সব খ্যাতনামা ব্যক্তি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হল:
- মোজাফফর আহমদ, অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ
- জহুরুল হক, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ও শহীদ ব্যক্তিত্ব
- আবদুল মান্নান, রাজনীতিবিদ, শিল্পোদ্যক্তা
- মুজফ্ফর আহ্মেদ, রাজনীতিবিদ
- আহমদ নজীর, সাবেক সংসদ সদস্য, সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক
- মোহাম্মদ ফজলুল আজিম, বাংলাদেশী শিল্পপতি, ব্যবসায়িক উদ্যোক্তা ও রাজনীতিবিদ।
- সা’দত হুসাইন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
আরো দেখুন
- নোয়াখালী জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
তথ্যসূত্র
- শিক্ষক-শিক্ষিকা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে। নোয়াখালী জিলা স্কুল
- "নোয়াখালী জিলা স্কুল"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০২০।