নেপালি রন্ধনশৈলী

নেপালি রন্ধনশৈলী নেপালের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে নৃতাত্ত্বিক, মাটি এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। ডালভাত তরকারী (নেপালি: दाल भात तरकारी) সমগ্র নেপাল জুড়েই খাওয়া হয়। সাধারণত গরম ভাতের উপর মশলা দিয়ে রান্না করা মসুর ডাল পরিবেশন করা হয়। অনেকসময় সব্জি তরকারী পরিবেশিত হয় যা নেপালে তরকারী নামেই পরিচিত। প্রচুর মশলাযুক্ত আচার (अचार) খাবারের আনুষঙ্গিক অংশ[1]। লেবুর টুকরো সাথে কাঁচা মরিচ পরিবেশন করা হয়। ধিন্ডো (ढिंडो) নেপালের ঐতিহ্যবাহী খাবার। নেপালী রন্ধনশৈলীর উপর এশীয় রান্নার প্রভাব রয়েছে। এদের খাবার সমূহ তিব্বত, ভারতীয় ও থাই উৎস থেকে এসেছে। তিব্বতীয় খাবারে নেপালী মশলা দিয়ে তৈরী মম নেপালের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। প্রথমদিকে এর মধ্যে মহিষের মাংসের পুর দেয়া হতো। তবে বর্তমানে ছাগল, মুরগির পাশাপাশি শাকসবজির পুরও দেওয়া হয়। তিহারের মত উৎসবের সময়ে সেল রোটি এবং পাত্রে খাওয়া হয়। চীনা নুডলসের উপর ভিত্তি করে তৈরি চাওমিন আধুনিক নেপালে খুবই জনপ্রিয়।

নেপালি ডাল ভাত তরকারী
থালাভরা মম, নেপাল

প্রকারভেদ

নেপালী ধারার চউমিন

খাস ও পাহাড়ি রন্ধনশৈলী

নেপালীরা প্রতিদিন দুইবেলা ডাল ভাত তরকারি খেয়ে থাকে। যদিও সেচের মাধ্যমে চাষ করা জমি থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ আসেনা। রোটি অথবা চাপাতি তৈরীতে গম, মকাই তৈরীতে ভুট্টা, জাউ তৈরীতে বার্লি ব্যবহৃত হয়। তরকারি হিসেবে সবুজ শাক ও শুটকি শাক, মুলা, আলু, টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টিকুমড়ো ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

ঐতিহ্যগতভাগে পাহাড়ে ফল চাষ করা হয়। এর মধ্যে আছে কমলা লেবু, কাফির লেবু (কাগতি), লেবু, নাশপাতি ইত্যাদি। ৮০০ মিটার উচ্চতায় আম চাষ হয়।

দই ও মাংসের তরকারি (মাসু) বা মাছ সহযোগী খাবার হিসেবে পরিবেশন করা হয় যখন এটা সহজপ্রাপ্য হয়। মুরগি (কুকুড়া) এবং মাছ সাধারণত সকল নেপালীরা খায় তবে খাস ব্রাহ্মণ জাতের লোক (বাহুন) নিরামিষভোজী হয়।

কট্টর হিন্দুরা কখনো গোমাংস (গাইকো মাসু) খায় না। তারা গরুর মত হওয়ার কারণে মহিষ এবং চামরী গরুর মাংসও পরিহার করে। ঐতিহ্যগতভাবে গৃহপালিত শূকর (শুংগোরকো মাসু) শুধুমাত্র আদিবাসিরা খেয়ে থাকে। অনুদিকে ঐতিহ্যগতভাবে মাগারগণ বন্য শূকর শিকার করে ও খায়। বন্য শূকর বন্দী করে প্রতিপালনের মাধ্যমে একটি প্রকরণের সৃষ্টি হয়েছে যার মাংস পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীর মধ্যে জনপ্রিয়।

হিমালয়ান রন্ধনশৈলী

হিমালয়ান রন্ধনশৈলী সাংস্কৃতিক ভাবে তিব্বতি প্রভাবে প্রভাবিত এবং হিমালয় ও ট্রান্স-হিমালয় অঞ্চলের নৃগোষ্ঠীর সংগে সম্পর্কিত। বার্লি, জোয়ার, রাই ইত্যাদি শীত সহ্যকারী দানা প্রায়শই নুডলস বা সম্পা তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। চায়ের সংগে ঘি এবং লবণ মিশিয়ে ঘি চা তৈরি করা হয়। ভ্রমনের সময়ে সম্পা ময়দার দিয়ে তৈরি খাবার এবং এই চা খাওয়া হয়। শস্য থেকে মদ্যজাতীয় পানীয়ও প্রস্তুত করা হয়। এই অঞ্চলে আলু আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান শস্যখাদ্য। নিম্নভূমি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি করা হয়। চমরীগাইয়ের মাংসদুধ খাওয়া হয়। মম তৈরীতে প্রায়শই মাংস ব্যবহৃত হয়।

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

  1. "Pickle - Achar - Chutney"। Food-nepal.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১০
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.