নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাড়ি

নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইল জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এটি বাঙালি ঔপন্যাসিক নীহাররঞ্জন গুপ্তের পৈতৃক বাড়ি। লোহাগড়া উপজেলা থেকে বাড়িটির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার।[1] ২০০৩ সালে বাসভবনটিকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[2]

নীহাররঞ্জন গুপ্তের
ধরনপ্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
অবস্থানলোহাগড়া উপজেলা
অঞ্চলনড়াইল জেলা
মৌলিক ব্যবহারবাসভবন
পুনর্নির্মিত২০০৩
স্থাপত্যশৈলীব্রিটিশ
মালিকবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
সূত্র নংBD-C-35-65

অবস্থান

লোহাগড়া সদর থেকে ৫.৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ইতনা গ্রামে অবস্থিত। ইতনা বাজারের পশ্চিমে ইতনা বালিকা বিদ্যালয়গামী ইটের রাস্তা ধরে আধা কিলোমিটার পূর্বে বেঁকে গেছে। এ রাস্তা ধরে ২০০ মিটার উত্তরে কাঁচা রাস্তার সামনে বাড়িটির অবস্থান।

ইতিহাস

নীহাররঞ্জন গুপ্ত ১৯১১ সালের ৬ জুন তার বাবার কর্মস্থল ভারতের কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার পৈতৃক বাড়ি ছিল বাংলাদেশের নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে।[3] নীহাররঞ্জন গুপ্ত ১৯৮৬ সালের ২০ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কোলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।[4] ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এখানে ইতনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু ছিল। ১৯৯৩ সালের ২৪ নভেম্বর ইতনার চিত্রশিল্পী আলী আজগর রাজা ও শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস এই বাড়িতে 'শিশু স্বর্গ-২' গড়ে তুলে। এটি উদ্বোধন করেন বাঙালি চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান[5]

অবকাঠামো

বাড়িটি প্রায় সত্তর শতক জমির উপর অবস্থিত। এখানে রয়েছে একটি দ্বিতল ভবন, পুকুর ও গাছগাছালি। বাড়ির উত্তরের অংশটি দোতলা এবং দক্ষিণের অংশটি একতলা। বাড়ির দুই দিকে রয়েছে দুটি প্রবেশপথ।[3] ভবনটির নিচ তলায় ৭টি কক্ষ এবং সামনে সরু বারান্দা রয়েছে। যে সকল বারান্দা থেকে অভ্যন্তরের কক্ষে প্রবেশ করবার একাধিক প্রবেশপথ রয়েছে। বারান্দার সামনে রয়েছে নকশাকুত সেগমেন্টাল খিলানযুক্ত স্তম্ভ। উত্তর-পূর্ব কোণে ভবনটির দোতলায় উঠবার একমাত্র সিঁড়ি। উত্তরের দোতলা অংশে পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা বারান্দাসহ তিনটি কক্ষ রয়েছে। বারান্দার সামনে রয়েছে সেগমেন্টাল খিলানযুক্ত স্তম্ভ। উভয়তলার প্রায় প্রতিটি কক্ষে রয়েছে একাধিক কুলঙ্গী ও দেয়াল আলমারি। ভবনের দরজা, জানালার কপাটে ফুল-লতাপাতার অলংকরণ, এবং দেয়াল আলমারিতে কাঠের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। নিচ তলার সামনে বারান্দার দেয়ালে বাংলায় 'আনন্দ কুটির' নাম উৎকীর্ণ রয়েছে। দোতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রবেশ পথের বামে রয়েছে একটি মন্দির। ব্রিটিশ অমলে নির্মিত বাড়িটির নির্মাণশৈলী সাধারণ। ভবন তৈরীতে ইট, চুন-সুরকি এবং ছাদে কাঠের বর্গার ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ছাদ বরাবর রয়েছে বাহুভাজ নকশাবিশিষ্ট কার্নিস।[2]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "ইতনার বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক নীহাররঞ্জন গুপ্তের পৈতৃক নিবাস"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৬
  2. ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়ি (প্রতিবেদন)। আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়, খুলনা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০১৮।
  3. "প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ডা. নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈতৃক বাড়িটির বেহালদশা"দৈনিক জনতা। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। ১৪ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৬
  4. "নড়াইলের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ডাঃ নীহার রঞ্জন গুপ্তের পৈতৃক বাড়িটি বেহাল দশা"কারেন্টনিউজ ডটকমডটবিডি। এপ্রিল ২৬, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৬
  5. "বিলুপ্তির পথে ঔপন্যাসিক, নাট্যকার নীহাররঞ্জন গুপ্ত'র পৈতৃক নিবাস"বাংলা ট্রিবিউন। মার্চ ২৭, ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.