নাসির উদ্দিন সরকার

ইংরেজ শাসনামলে মহাত্মা গান্ধীর স্বদেশি মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিল সারা ভারতবর্ষের মানুষ। গান্ধীর স্বদেশি চেতনাকে ধারণ করে গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে গেছেন জামালপুর মহকুমার কংগ্রেসের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন সরকার । তিনি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কাপাশহাটিয়ায় গড়ে তুলেছিলেন গান্ধী আশ্রম। সে সময় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের নানা কর্মপরিকল্পনা করা ছাড়াও চরকায় সুতা তৈরি, গ্রামের নারীদের হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ, লেখাপড়াসহ গ্রামের মানুষকে নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। নাসির উদ্দিন সরকার ১৮৯২ সালে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের কাপাশহাটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি  ১৯৩১ সালে জামালপুর মহকুমার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এর সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৩০ সালে তিনি আইন অমান্য করে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারনে কারাবরণ করেন। তিনি গণতন্ত্রীদল ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ছিলেন। ১৯৩৫ সালে ঝাউগড়া ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন। নাসির উদ্দিন সরকার ১৯৭৭ সালে ৭ নভেম্বর নিজ বাড়িতেই ৮৪ বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

নাসির উদ্দিন সরকার
জন্ম১৮৯২
মেলান্দহ, জামালপুর
মৃত্যু৭ নভেম্বর, ১৯৭৭
মেলান্দহ, জামালপুর
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত বাংলাদেশ)
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
সন্তানরাজিয়া খাতুন, মোয়াজ্জেম সরকার

গান্ধী আশ্রম

মহাত্মা গান্ধীর ডাকে উজ্জীবিত হয়ে সারা ভারতবর্ষে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের যে জোয়ার এসেছিলো তাতে সাড়া দিয়ে ১৯৩৪ সালে নাসির উদ্দিন সরকার গান্ধী আশ্রমটি গড়ে তোলেন। এটি মেলান্দহ উপজেলা সদর হতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত। বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করেছিলেন আশ্রমটি। এ আশ্রমটিতে সেই সময় গ্রামের সাধারণ মানুষকে স্বদেশি চেতনায় উজ্জীবিত করে চরকায় সুতা তৈরি, গ্রাম্য নারীদের হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া ও শরীরচর্চা কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

রাজনৈতিক কার্যক্রম

পূর্ব বাংলার বিরাট একটি অংশের মানুষের সমর্থন যখন মুসলীম লীগের দিকে ছিলো, তখন স্রোতের বিপরীতে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর অহিংসার পথ বেছে নেন নাসির উদ্দিন সরকার । বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক বৈঠক করতে তার কাছে এসেছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, কমরেড মণি সিংহ, বারীন দত্ত, খোকা রায়, অনিল মুখার্জি, কমরেড আশুতোষ দত্ত, আন্দামানফেরত কমরেড রবি নিয়োগী, বিধূভূষণ সেন, প্রফেসর শান্তিময় রায়, নগেন মোদক, সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ, মনোরঞ্জন ধর, রণেশ দাশগুপ্ত, সত্যেন সেন, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, মন্মথনাথ দে, কৃষক নেতা হাতেম আলী খান, খন্দকার আবদুল বাকীসহ অনেক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ।

তথ্যসূত্র

    [1]

    [2]

    1. "জামালপুরের নিভৃত পল্লিতে গান্ধী আশ্রম ও জাদুঘর"প্রিয়.কম (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৮-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২১
    2. "বিপ্লবী রাজিয়া খাতুন জামালপুরের সন্তান | Purboposhchimbd"Purboposchim। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২১
    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.