নারায়ন চন্দ্র চন্দ

নারায়ন চন্দ্র চন্দ (জন্ম: ১২ মার্চ, ১৯৪৫) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী।[2]

নারায়ন চন্দ্র চন্দ
Narayan Chandra Chanda
খুলনা-৫ আসনের
সংসদ সদস্য
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২৫ জানুয়ারি ২০০৯
পূর্বসূরীমিয়া গোলাম পরওয়ার
কাজের মেয়াদ
২০০০  ১৩ জুলাই ২০০১
পূর্বসূরীসালাহ উদ্দিন ইউসুফ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২ জানুয়ারি ২০১৮[1]  ৭ জানুয়ারি ২০১৯
পূর্বসূরীমোহাম্মদ ছায়েদুল হক
উত্তরসূরীশ ম রেজাউল করিম
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৫ জানুয়ারি ২০১৪  ২ জানুয়ারি ২০১৮
উত্তরসূরীআশরাফ আলী খান খসরু
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1945-03-12) ১২ মার্চ ১৯৪৫
ডুমুরিয়া,খুলনা
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পেশারাজনীতিবিদ
ধর্মহিন্দু

প্রাথমিক জীবন

নারায়ন চন্দ্র চন্দ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তার মাতার নাম রেণুকা বালা চন্দ ও পিতার নাম কালীপদ চন্দ।

শিক্ষাজীবন

উলাগ্রামের পাঠশালায় তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। বান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৬১ সালে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক্যুলেশন পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে দৌলতপুর বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ সালে একই বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেন। চাকুরীকরাকালীন সময়ে ১৯৭২ সালে তিনি বিএড পাশ করেন।

পারিবারিক জীবন

স্ত্রী ঊষা রানী চন্দ স্কুল শিক্ষক। নারায়ন চন্দ্র চন্দ তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক। বড় ছেলে ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য,বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অবৈতনিক সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধ্যাপক ও ডীন। মেঝ ছেলে সত্যজিত চন্দ্র চন্দ ব্যবসায়ী ও ছোট ছেলে প্রয়াত অভিজিত চন্দ্র চন্দ খুলনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলেন। একমাত্র মেয়ে জয়ন্তী দত্ত গৃহিনী। জামাতা বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিএম। তার বড় ভাই দীন বন্ধু চন্দ্র চন্দ শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

কর্মজীবন

মাস্টার্সের ফল প্রকাশের পুর্বেই নারায়ন চন্দ্র চন্দ ডুমুরিয়ার সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৮ সালে এই স্কুল থেকে সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পায়। ১৯৭৩ সালের ৭ মে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৪ সালে তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ডুমুরিয়ায় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র চালু হয়। এর আগে খুলনা শহরে শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা দিতে হত। চাকুরীকরাকালীন সময়ে ১৯৭২ সালে তিনি বিএড পাশ করেন। তিনি ২০০৫সালের ১১ মার্চ চাকরি থেকে অবসর নেন।

শিক্ষক নেতা ও সংগঠক

১৯৬৮ সালে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠা করেন থানা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তিনি প্রতিষ্ঠাকালিন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৮৭ সালে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবন

বঙ্গবন্ধুর আশির্বাদ পাওয়া নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি ১৯৬৭ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে থানা কমিটির সাঙ্গঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৮৪ সালে তিনি ডুমুরিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে গঠিত কমিটিতেও তিনি সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখার সদস্য। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় আহবায়ক ছিলেন।

জনপ্রতিনিধিত্ব

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ডুমুরিয়া উপজেলার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। ছয় বার তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তৎকালিন স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও পরে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সালাহউদ্দিন ইউসুফের মৃত্যুর পর ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে নারায়ন চন্দ্র চন্দ ডুমুরিয়া-ফুলতলা আসনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে তিনি চারদলীয় জোট প্রার্থী অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ারের নিকট পরাজিত হন। এরপর নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবং সরকারের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন সর্বশেষ ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Cabinet gets 3 new ministers, one state minister"Dhaka Tribune। ২০১৮-০১-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৪
  2. "নারায়ন চন্দ্র চন্দ পূর্ণ মন্ত্রী হওয়ায় নগর ও জেলা আ'লীগের অভিনন্দন"দৈনিক প্রবাহ। ৬ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৮
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.