নাভি

নাভি মানব দেহের বহিরাঙ্গের একটি বিশেষ স্থান। মাতৃগর্ভে থাকা কালে মানব ভ্রূণে যে নাড়ির মাধ্যমে মায়ের শরীর থেকে খাদ্য সংবাহিত হয় শিশুর জন্মকালে তা কেটে ফেলা হয় এবং একটি প্যাঁচ দিয়ে কাটা মুখ বন্ধ করা হয়। এই সুস্পষ্ট অংশটি মানবদেহের তলপেটের ঠিক ওপরে চিরকাল দৃশ্যমান থাকে এবং নাভি নামে আখ্যায়িত। চিকিৎসা শাস্ত্রে একে বলা হয় আম্বিলিকাস। সকল স্তন্যপায়ী প্রাণী যাদের জন্ম মাতৃ জরায়ুতে তাদের নাভী থাকে।

নাভি
মানবদেহে সম্মুখভাবে মাঝ বরাবর তলপেটের ‍ঠিক ওপরভাগে ‘নাভি’ অবস্থিত।
বিস্তারিত
পূর্বভ্রূণনাভিরজ্জু
ডক্টাস ভেনোসাস
ধমনীআম্বিলিক্যাল ধমনী
শিরাআম্বিলিক্যাল ভেইন
শনাক্তকারী
লাতিনআম্বিলিকাস
মে-এসএইচD014472
টিএ৯৮A01.2.04.005
টিএ২261
এফএমএFMA:61584
শারীরস্থান পরিভাষা

কাঠামো

আপাতত ইংরেজি আর্টিকেল টি ব্যবহার করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই অনুবাদ দেওয়া হবে।

গঠন

চিকিৎসাশাস্ত্রীয় তাৎপর্য

নাভীসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সমস্যা

নাভিতে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং নাভিমূলে পুঁজ দেখা দিতে পারে। এই সমস্যাকে চিকিৎসাশাস্ক্রীয় ভাষায় বলা হয় ওমফ্যালাইটিস। এর প্রতিকার হিসাবে ডাক্তাররা রোগীকে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন।

সমাজ ও সংস্কৃতি

নাভির নিচে শাড়ী

প্রাচীন চিত্রকলায় দৃশ্যমান নাভি সহ অনাবৃত পেটের নারীদেহ প্রায়শঃ দেখা যায়। তবে ভারতীয় সংস্কৃতিতে নারীরা শাড়ী সাধারণতঃ এমনভাবে পরে যেন নাভি ঢেকে থাকে। তবে বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের শুরুর দিকে নাভির নিচে শাড়ী পরার ফ্যাশন চালু হয়। ধনী পরিবারের কিছু মেয়ে, অভিনেত্রী ও মডেলদের মধ্যে শুরু হলেও নাভির নিচে শাড়ী পরা বিস্তার লাভ করে। এটা শুধু নাভিকে অনাবৃত করার জন্য নয়, পেটের যতটা সম্ভব দৃশ্যমান রাখার জন্যও অনেকে শাড়ী অনেক নামিয়ে পরতে শুরু করে।

যৌন তাৎপর্য

নাভির প্রতি যৌনাকর্ষণ এক প্রকারের বস্তুকাম হিসেবে পরিগণিত। তবে পর্যবেক্ষণ বিজ্ঞানী ডেসমণ্ড মরিস-এর মতে অনেক পুরুষের কাছে নাভি নারীর যোনীর প্রতীক। আর তাই নাভির যৌনাকর্ষণ রয়েছে।

তান্ত্রিক সাধনা ও নাভি

তন্ত্র সাধনায় বিশ্বাস করা হয় যে, মানুষের মধ্যে জীবাত্মা ঘুমন্ত থাকে এবং সাধানার মাধ্যমে তাকে জাগাতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় নাভিমূলের ভূমিকা রয়েছে। শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, ‘‘যখন সংসারে মন থাকে, তখন, লিঙ্গ, গুহ্য ও নাভি মনের বাসস্থান, মনের চতুর্থ ভূমি হৃদয়, তখন প্রথম চৈতন্য হয়েছে। তখন আর নিচের দিকে মন যায় না। মনের পঞ্চম ভূমি কণ্ঠ। মন যার কণ্ঠে উঠেছে, তার ঈশ্বরীয় কথা বই অন্য কোনও কথা শুনতে বা বলতে ভাল লাগে না। মনের ষষ্ঠ ভূমি কপাল। সেখানে অহর্নিশি ঈশ্বরীয় রূপ দর্শন হয়। শিরোদেশে সপ্তম ভূমি। সেখানে মন গেলে ব্রহ্মের প্রত্যক্ষ দর্শন মেলে।’’ তন্ত্র-সাধনার উদ্দেশ্য হলো মানব মনকে নাভি সহ প্রথমোক্ত তিন অধিষ্ঠান থেকে মুক্ত করা। এর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন মনঃসংযম । তন্ত্র সাধনায় নাভি-চক্রকে মনিপুর বলা হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র

    গ্রন্থপঞ্জি

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.