নান্‌বোকু-চোও যুগ

নান্‌বোকু চোও যুগ (南北朝時代?, নান্‌বোকু চোও জিদাই) বা "উত্তর ও দক্ষিণ রাজসভার যুগ" বলতে জাপানের ইতিহাসে ১৩৩৪ থেকে ১৩৯২ খ্রিঃ পর্যন্ত সময়কালকে বোঝায়। এই যুগটি মুরোমাচি যুগের প্রাথমিক পর্যায়।

কামাকুরা১১৮৫১৩৩৩
কেন্‌মু পুনর্গঠন১৩৩৩১৩৩৬
১৩৩৬১৫৭৩
আজুচি-মোমোইয়ামা
১৫৬৮১৬০৩
এদো (তোকুগাওয়া)
  • বাকুমাৎসু
১৬০৩১৮৬৮
১৮৬৮১৯১২
তাইশো
  • প্রথম বিশ্বযুদ্ধ
১৯১২১৯২৬
শোওয়া ১৯২৬১৯৮৯
হেইসেই
  • ভ্রান্ত দশক
১৯৮৯২০১৯
রেইওয়া

এই যুগে জাপানে দুটি রাজসভার অস্তিত্ব ছিল: কিয়োতোয় ছিল আশিকাগা তাকাউজির প্রতিষ্ঠিত উত্তর সাম্রাজ্য রাজসভা এবং য়োশিনোয় ছিল সম্রাট গো-দাইগো প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ সাম্রাজ্য রাজসভা।

দুই রাজসভা পঞ্চাশ বছর আদর্শগত সংঘর্ষে লিপ্ত থাকে, এবং ১৩৯২ এ দক্ষিণ রাজসভা উত্তরের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নেয়। কিন্তু উত্তর রাজসভা প্রকৃতপক্ষে আশিকাগা শোগুনতন্ত্রের অধীন ছিল এবং বাস্তবিক এর কোনও ক্ষমতা ছিল না।

যে সমস্ত সংঘাতের ফলে সমসাময়িক জাপানে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয় সেগুলো ছিল ১২৭৪ ও ১২৮১ খ্রিষ্টাব্দের মোঙ্গল আক্রমণের সময় জাপানের হোওজোও পরিবার ও অন্যান্য যোদ্ধা পরিবারের ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক তিক্ততা এবং কেন্‌মু পুনর্গঠনের ব্যর্থতা। এই সমস্ত ধারাবাহিক সংকটের ফলে জমে ওঠা অসন্তোষ থেকে সম্রাটের অনুগত শাসকগোষ্ঠী ও আশিকাগা পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ উপস্থিত হয়।

১৩৩৩ খ্রিঃ কামাকুরা শোগুনতন্ত্রের পতন ও ১৩৩৬ খ্রিঃ কেন্‌মু পুনর্গঠনের ব্যর্থতায় নতুন শোগুনতন্ত্রের এক বৈধতার সংকট উপস্থিত হয়। উপরন্তু, ইতঃপূর্বে অভিজাত ও যোদ্ধা শ্রেণীর স্বার্থকেন্দ্রিক স্থাবর সম্পত্তির বণ্টন ব্যবস্থা (শোওয়েন) আমূল পরিবর্তিত হওয়ার ফলে সমগ্র সমাজব্যবস্থায় আলোড়ন ওঠে। শেষমেষ নান্‌বোকু চোও যুগের নানা অস্থিরতার মধ্য থেকে উঠে আসে এক নতুন অর্থব্যবস্থা যাতে যোদ্ধাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটলেও পূর্বতন অভিজাতদের প্রভাব বহুলাংশে হ্রাস পায়।

উনবিংশ শতাব্দী থেকে দক্ষিণ রাজসভার শাসকরা জাপানের বৈধ সম্রাট হিসেবে গণ্য হয়ে আসছিলেন। এর অপ্রত্যক্ষ কারণ হিসেবে বলা যায় এই পরিবারই বরাবর জাপানের রাজকীয় চিহ্নাদি বংশানুক্রমিকভাবে বহন করে এসেছেন, এবং প্রভাবশালী উপদেষ্টা কিতাবাতাকে চিকাফুসা (১২৯৩-১৩৫৪ খ্রিঃ) তার ঐতিহাসিক গ্রন্থ জিন্‌নোও শোওতোকি-তে দক্ষিণ রাজসভার পরাজয় সত্ত্বেও জাপানের সিংহাসনে তাদের দাবিকেই স্বীকৃতি দেন।

এই যুগের ঘটনাবলী আধুনিক জাপানেও সম্রাটের শাসন (তেন্‌নোও সেইকা) সম্পর্কে সাধারণ ধারণাকে প্রভাবিত করে চলেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত শিন্তো ধর্মানুযায়ী ১৯১১ এর ৩রা মার্চে প্রকাশিত এক অধ্যাদেশে দক্ষিণ রাজবংশের উত্তরাধিকারীদেরকেই জাপানের বৈধ শাসক হিসেবে মান্যতা দেওয়া হয়।[1] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কুমাযাওয়া হিরোমিচি প্রমুখ একাধিক ব্যক্তি নিজেদেরকে দক্ষিণ রাজসভার বংশধর হিসেবে দাবি করে দেশের সিংহাসনে কর্তৃত্ব কায়েম করতে চেষ্টা করেছেন এবং অধুনা ক্ষমতাসীন সম্রাটের পরিবারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, বর্তমান সম্রাটের পরিবার উত্তর রাজসভার বংশধর।[2]

তথ্যসূত্র

  1. Mehl 1997: 140–147.
  2. Lauterbach 1946: 33.
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.