নাথুরাম গডসে

নাথুরাম বিনায়ক গডসে (Marathi: नथूराम विनायक गोडसे, ১৯ মে ১৯১০ - ১৫ নভেম্বর ১৯৪৯) যিনি ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারী নয়াদিল্লীতে গান্ধীর বুকে তিনবার গুলি চালিয়েছিলেন। [1] মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে আসা হিন্দু জাতীয়তাবাদের আইনজীবী গডসে বলেছিলেন যে, গান্ধী ভারত বিভাগের সময় ভারতের মুসলমানদের রাজনৈতিক দাবির পক্ষে ছিলেন এবং স্বাধীনতার আগে ও পরের দাঙ্গায় মুসলিম লীগের দ্বারা অনান্য ধর্মের প্রতি নৃশংসতাকে প্রশ্রয় দেন। তিনি নারায়ণ আপ্তে এবং আরও ছয় জনের মিলে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান বিচারের পরে, ১৯৪৯ সালের ৮ নভেম্বর গডসেকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর আম্বালা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল। [2]

নাথুরাম গোডসে
नथूराम गोडसे
জন্ম(১৯১০-০৫-১৯)১৯ মে ১৯১০
বড়মতি, পুনে জেলা, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যুনভেম্বর ১৫, ১৯৪৯(1949-11-15) (বয়স ৩৯)
আম্বালা কারাগার, হরিয়ানা, ভারত
মৃত্যুর কারণফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
জাতীয়তাভারতীয়
প্রতিষ্ঠানরাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ
হিন্দু মহাসভা
অপরাধের অভিযোগহত্যা (মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকাণ্ড)
অপরাধের শাস্তিমৃত্যু
নাথুরাম বিনায়ক গডসে
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিহোয়াই আই কিলড গান্ধী
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তরা : শঙ্কর কিস্তায়িয়া, গোপাল গডসে, মদনলাল পাওয়া,দিগম্বর রামচন্দ্র বেঁজ, নারায়ণ আপ্তে, বিনায়ক দামোদর সাভাকর, নাথুরাম গডসে,বিষ্ণু রামকৃষ্ণ কারকারে

জীবনের প্রথমার্ধ

নাথুরাম বিনায়কক গডসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মহারাষ্ট্রীয় চিত্পবন ব্রাহ্মণ পরিবারে। [3] তাঁর পিতা বিনায়ক বামনরাও গোডসে ডাক কর্মচারী ছিলেন; তাঁর মা ছিলেন লক্ষ্মী। জন্মের সময় তাঁর নাম হয় রামচন্দ্র। [4] দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার কারণে তাঁর নাম দেওয়া হয়েছিল নাথুরাম। তাঁর জন্মের আগে তাঁর মা-বাবার তিন ছেলে ও এক মেয়ে ছিল, তিনটি ছেলেই শৈশবে মারা গিয়েছিল। এই অভিশাপের ভয়ে রামচন্দ্রের জীবনের প্রথম কয়েক বছর ধরে মেয়ে হিসাবে বড় করা হয়েছিল, যার মধ্যে তার নাক ফোঁড়ানো এবং নাকের গয়না (মারাঠি ভাষায় নাথ ) পরানো হয়েছিল। তারপরেই তিনি "নাথুরাম" ডাকনাম অর্জন করেছিলেন। তার ছোট ভাইয়ের জন্মের পরে, তারা তাকে বালক হিসাবে দেখতে শুরু করেছিল। [5]

গডসে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বারামতির স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন, তারপরে তাঁকে পুনেতে এক পিসিরর কাছে পাঠানো হয়েছিল যাতে তিনি একটি ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করতে পারেন। স্কুলের সময়ে তিনি গান্ধীকে অত্যন্ত সম্মান করতেন। [6][7]

মহাত্মা গান্ধীর হত্যা

১৯৪৮ সালের ৩০ শে জানুয়ারী, গান্ধী নয়া দিল্লির বিড়লা হাউজ থেকে বেরিয়ে হাউজের পিছনে একটি প্রার্থনা সভায় যাচ্ছিলেন উঁচু লন ধরে, গান্ধীর মঞ্চে ওঠার আগেই গডসে ভিড় ঠেলে বেরিয়ে তাঁর সামনে দাঁড়ায়। তিনি গান্ধীর বুকে তিনটি গুলি চালিয়েছিলেন। [8] গান্ধী তৎক্ষনাত পড়ে যান, সেখানে উপস্থিত জনতা প্রচন্ড ধাক্কা খায়। [8] [8][9][10][11]গান্ধীকে পুনরায় বিড়লা হাউসে তাঁর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। [12]

বিচার ও ফাঁসি কার্যকর

গডসেকে সিমলার পিটারহফের পাঞ্জাব হাইকোর্টে বিচারের জন্য রাখা হয়েছিল। ১৯৪৮ সালের ৮ নভেম্বর, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি এজলাসে সকলের সম্মুখে বলেন যে, তিনি কেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী কে গুলি করে হত্যা করেন ? তিনি বলেন, মুসলিম লীগের সভাপতি মহম্মদ আলি জিন্নার ডাকা "ডাইরেক্ট একশন ডে"এর ফলে যত হত্যাকাণ্ড বাংলা এবং পাঞ্জাবে হচ্ছিল, তখন কোনো প্রতিবাদ গান্ধী করেননি কেন ? এবং স্বাধীনতার পরবর্তীকালে যখন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পাকিস্তানকে ৪৩ কোটি টাকা দিতে প্রত্যাখ্যান করেন তখন গান্ধী আমরণ অনশনের হুমকি দিয়ে বল্লভ ভাই প্যাটেলকে টাকা দিতে বাধ্য করেন। যদিও শাস্তি লঘুকরণের আবেদন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, উপ-প্রধানমন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেল এবং গভর্নর-জেনারেল চক্রবর্তী রাজাগোপালচারী [13] প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর আম্বালা কারাগারে গডসের ফাঁসি হয়েছিল। [14]

মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তরা

তথ্যসূত্র

  1. Noorani, A.G. (৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "The BJP and Nathuram Godse"। Frontline। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৭
  2. Bandyopadhyay, Sekhar (২০০৯), Decolonization in South Asia: Meanings of Freedom in Post-independence West Bengal, 1947–52, Routledge, পৃষ্ঠা 146, আইএসবিএন 978-1-134-01824-6
  3. Devare, Aparna (৩ এপ্রিল ২০১৩)। History and the Making of a Modern Hindu Selfআইএসবিএন 9781136197086। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৯-০৯
  4. "Early life | Nathuram Godse"। Nathuram.com। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৪
  5. Jeffrey, Robin (১৯৯০)। India, Rebellion to Republic: Selected Writings, 1857–1990। Sterling Publishers। পৃষ্ঠা 105।
  6. Time (14 February 2000) "His Principle of Peace Was Bogus".
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০২০
  8. Pronko, N. H.; Bowles, J. W. (২০১৩), Empirical Foundations Of Psychology, Taylor & Francis, পৃষ্ঠা 343, আইএসবিএন 978-1-136-32708-7
  9. Obituary, May 26 (মে ২৬, ২০০০), "Herbert Reiner Jr.; Captured Gandhi's killer", Los Angeles Times, সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ২৭, ২০১৭
  10. Obituary, May 21 (২১ মে ২০০০), "Herbert Reiner Jr., Diplomat, 83; Captured Gandhi's killer in 1948", The Boston Globe
  11. Trumbull, Robert (জানুয়ারি ৩১, ১৯৪৮), "Gandhi is killed by a Hindu; India shaken; World mourns; 15 die in rioting in Bombay", The New York Times
  12. "Controversy over "Hey Ram""। Archived from the original on ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১০-০৯
  13. Gandhi, Rajmohan (২০০৬), Gandhi: The Man, His People, and the Empire, University of California Press, পৃষ্ঠা 660, আইএসবিএন 978-0-520-25570-8
  14. Bandyopadhyay, Sekhar (২০০৯), Decolonization in South Asia: Meanings of Freedom in Post-independence West Bengal, 1947–52, Routledge, পৃষ্ঠা 146, আইএসবিএন 978-1-134-01824-6

আরও পড়া

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.