নলিনী জয়বন্ত

নলিনী জয়বন্ত (১৮ই ফেব্রুয়ারি ১৯২৬[1] – ২০শে ডিসেম্বর ২০১০) ১৯৪০ এবং ১৯৫০ এর দশকে হিন্দি ছবির একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ছিলেন।

নলিনী জয়বন্ত
১৯৫৮ সালে মিলন' ছবিতে জয়বন্ত
জন্ম(১৯২৬-০২-১৮)১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২৬
মৃত্যু২০ ডিসেম্বর ২০১০(2010-12-20) (বয়স ৮৪)
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯৪১ – ১৯৬৫, ১৯৮৩
দাম্পত্য সঙ্গী
  • বীরেন্দ্র দেসাই
    (বি. ১৯৪৫; বিচ্ছেদ. ১৯৪৮)
  • প্রভু দয়াল
    (বি. ১৯৬০; মৃ. ২০০১)
আত্মীয়দেখুন সমর্থ পরিবার

ব্যক্তিগত জীবন এবং পটভূমি

নলিনী জয়বন্ত ১৯২৬ সালে বোম্বাইতে (বর্তমানে মুম্বই) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি অভিনেত্রী শোভনা সমর্থের মাসতুতো বোন ছিলেন।[2] ১৯৮৩ সাল থেকে, তিনি বেশিরভাগ সময় একান্ত জীবন যাপন করেছিলেন।[3]

১৯৪০-এর দশকে পরিচালক বীরেন্দ্র দেসাইয়ের সাথে তার বিবাহ হয়। ১৯৪৮ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরে, তিনি তার দ্বিতীয় স্বামী অভিনেতা প্রভু দয়ালকে বিবাহ করেছিলেন, এঁর সাথে তিনি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[4]

অভিনেত্রী জীবন

কৈশোর বয়সে তিনি মেহবুব খানের বহেন (১৯৪১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন, এটি বোনের প্রতি একজন ভাইয়ের অত্যধিক ভালবাসা সম্পর্কে একটি চলচ্চিত্র ছিল। আনোখা প্যার (১৯৪৮) ছবির চিত্রগ্রহণের আগে তিনি আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৫০ সালে অশোক কুমারের বিপরীতে সমাধি এবং সংগ্রাম চলচ্চিত্রে তার অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন এবং একজন শীর্ষ তারকা হয়ে ওঠেন।। সমাধি ছবিটি সুভাষচন্দ্র বসু এবং তার আজাদ হিন্দ ফৌজ সম্পর্কিত একটি দেশপ্রেম মূলক চলচ্চিত্র ছিল। যদিও সে সময়ের শীর্ষস্থানীয় চলচ্চিত্র পত্রিকা, ফিল্ম ইন্ডিয়া এটিকে "রাজনৈতিকভাবে অচল" বলে অভিহিত করেছিল, এটি বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছিল। সংগ্রাম একটি অপরাধবিষয়ক নাটক ছিল যেখানে নলিনী বিরোধী নায়কের চরিত্রটির আমূল সংস্কার করে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। তিনি শাম্মী কাপুরের সাথে প্রথম শ্রেণীর রোমান্টিক ছবি মেহবুবা (১৯৫৪) এবং প্রহসন মূলক ছবি হাম সব চোর হ্যায় (১৯৫৬) তে কাজ করেছিলেন। তিনি এবং অশোক কুমার জলপরি (১৯৫২), কাফিলা (১৯৫২), নও বাহার (১৯৫২), সালোনি (১৯৫২), লকীরেঁ (১৯৫৪), নাজ (১৯৫৪), মি. এক্স (১৯৫৭), শেরু (১৯৫৭) এবং তুফান মে প্যায়ার কাঁহা (১৯৬৩) ইত্যাদি অন্যান্য ছবিতে একসাথে অভিনয় করেছিলেন।

১৯৫০-এর দশকের মধ্যভাগ জুড়ে নলিনী একজন গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী হিসাবে অভিনয় করেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি রাহি (১৯৫৩), শিকস্ত (১৯৫৩), রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম (১৯৫৫), নাস্তিক (১৯৫৪), মুনিমজি (১৯৫৫) এবং হাম সব চোর হ্যায় (১৯৫৬) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৫৮ সালে নির্মিত রাজ খোসলা পরিচালিত চলচ্চিত্র কালা পানি নলিনীর শেষ সফল ছবি ছিল। এই ছবির জন্য তিনি সেরা সহায়ক অভিনেত্রী ফিল্মফেয়ার জন্য পুরস্কার জিতেছিলেন। অবসর নেওয়ার আগে তার শেষ চলচ্চিত্র ছিল বম্বে রেসকোর্স (১৯৬৫)। ১৮ বছর পরে, তিনি নাস্তিক ছবিতে একটি চরিত্র অভিনেত্রী হিসাবে ফিরে এসেছিলেন, যা ছিল তার শেষ অভিনীত ছবি।

মৃত্যু

২০১০ সালের ২০শে ডিসেম্বর, ভারতের মুম্বাইয়ের চেম্বুরে, তার ইউনিয়নের পার্কের ৬০ বছরের বাংলোয়, ৮৪ বছর বয়সী নলিনী জয়বন্ত নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর ৩ দিন পর অ্যাম্বুলেন্স এসে মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যাবার পর সবাই তার মৃত্যুর কথা জানতে পারে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছিলেন যে, তিনি সমাজ থেকে নিজেকে আলাদা করে নিয়েছিলেন এবং স্বামীর মৃত্যুর পরে আর কারো সাথে দেখা করতেন না। তার আত্মীয়দেরও দীর্ঘদিন ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিলনা।[5]

তার অভিনীত নির্বাচিত চলচ্চিত্র সমূহ

  • বোম্বে রেস কোর্স (১৯৬৫)
  • তুফান মেঁ প্যার কাহাঁ (১৯৬৩)
  • গার্লস' হস্টেল (1963)
  • জিন্দেগী অঔর হাম (১৯৬২)
  • সেনাপতি (১৯৬১)
  • অমর রহে য়ে প্যার (১৯৬১)
  • মুক্তি (১৯৬০)
  • মা কে আঁশু(১৯৫৯)
  • কালা পানি (১৯৫৮)
  • মিলন (১৯৫৮)
  • শেরু (১৯৫৭)
  • মিস্টার এক্স (১৯৫৭)
  • নীলমণি (১৯৫৭)
  • মিস বোম্বে (১৯৫৭)
  • কিতনা বদল গ্যায়া ইন্সান (১৯৫৭)
  • হাম সব চোর হ্যায় (১৯৫৬)
  • দুর্গেশ নন্দিনী (১৯৫৬)
  • আওয়াজ (১৯৫৬)
  • ইন্সাফ (১৯৫৬)
  • ফিফটি ফিফটি (১৯৫৬)
  • আন বান (১৯৫৬)
  • ২৬ জানুয়ারী ১৯৫০ (১৯৫৬)
  • রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম (১৯৫৫)
  • মুনিমজি (১৯৫৫)
  • রাজকন্যা (১৯৫৫)
  • চিঙ্গারি (১৯৫৫)
  • নাস্তিক (১৯৫৪)
  • কবি (১৯৫৪)
  • বাপ বেটি (১৯৫৪)
  • নাজ (১৯৫৪)
  • লকীরেঁ (১৯৫৪)
  • মেহবুবা (১৯৫৪)
  • শিকস্ত (১৯৫৩)
  • রাহি (১৯৫২)
  • জলপরী (১৯৫২)
  • সালোনি (১৯৫২)
  • কাফিলা (১৯৫২)
  • নউবাহার (১৯৫২)
  • দো রাহ (১৯৫২)
  • নওজওয়ান (১৯৫১)
  • জাদু (১৯৫১)
  • এক নজর (১৯৫১)
  • নন্দকিশোর (১৯৫১)
  • সংগ্রাম (১৯৫০)
  • সমাধি (১৯৫০)
  • মুকদ্দর (১৯৫০)
  • আখেঁ (১৯৫০)
  • আনোখা প্যার (১৯৪৮)
  • গুঞ্জন (১৯৪৮)
  • ফির ভি আপনা হ্যায় (১৯৪৬)
  • আদাব আরজ (১৯৪৩)
  • আঁখ মিচৌলি (১৯৪২)
  • রাধিকা (১৯৪১)
  • নির্দোষ (১৯৪১)
  • বহেন (১৯৪১)
  • রাধিকা (১৯৪১)

পুরস্কার সমূহ

  • ১৯৫৯: সেরা সহায়ক অভিনেত্রীর জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার  কালা পানি
  • ২০০৫: দাদাসাহেব ফালকে একাডেমী আজীবন অর্জন পুরস্কার[6]

তথ্যসূত্র

  1. "Nalini Jaywant"Upperstall। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-১৮
  2. Rediff On The NeT, Movies: Down memory lane with Shobhana Samarth
  3. "Nalini Jaywant profile"। ৫ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০২০
  4. The Tribune, Chandigarh, India - Ludhiana Stories
  5. "Actress Nalini Jaywant's 'death' shrouded in mystery"

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.