ননী ভৌমিক

ননী ভৌমিক (১৯২১ — ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৬) একজন বাঙালি বামপন্থী সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও অনুবাদক ছিলেন।

ননী ভৌমিক
জন্ম১৯২১
মৃত্যু১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৬
পেশাসাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক
পরিচিতির কারণধুলোমাটি উপন্যাস
রাশিয়ান সাহিত্যের অনুবাদ
আন্দোলনবামপন্থী
পুরস্কারবঙ্কিম পুরস্কার
বিদ্যাসাগর পুরস্কার

প্রারম্ভিক জীবন

ননী ভৌমিকের বাড়ি বর্তমান বাংলাদেশের রংপুর। রংপুর শহরে স্কুলে পড়তেন। রংপুর কলেজে থেকে আই.এসসি ও পাবনা সরকারি কলেজ থেকে বি.এসসি পাস করেন। অর্থাভাবে এম.এসসি পড়তে পারেননি। পরে বীরভূম জেলার সিউড়ি তে চলে আসেন। বীরভূম ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী বিপ্লবী নিত্যনারায়ণ ভৌমিক তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা।[1]

কমিউনিস্ট পার্টিতে

ননী ভৌমিক তরুণ বয়েসেই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন এবং স্বাধীনতা পত্রিকায় সাংবাদিকের কাজ করতে শুরু করেন। ৪৬ সালের ভয়াবহ দাঙ্গার ভেতরেও নির্ভীকভাবে সংবাদ সংগ্রহ করে গেছেন তিনি। পরে তেভাগা আন্দোলনের খবর জোগাড় করেছেন গ্রামে গ্রামে গিয়ে যা স্বাধীনতা পত্রিকায় প্রকাশিত হত। তার এই অভিজ্ঞতা ভিত্তিক ছোটগল্প সংকলন 'ধানকানা' বের হয়। অরণি পত্রিকায় নিজের সাহিত্যচর্চা শুরু হয়। চৈত্রদিন তার অপর গ্রন্থ। ফ্যাসিবিরোধী প্রগতি লেখক সংঘ ও ভারত-সোভিয়েত মৈত্রী সমিতির সদস্য ছিলেন। পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন কিছুকাল। তার বিখ্যাত উপন্যাস ধুলোমাটি ধারাবাহিকভাবে পরিচয়ে বের হয়। ১৯৪৮ সালে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হলে তিনি গ্রেপ্তার হন ও প্রেসিডেন্সি, বক্সা ইত্যাদি জেলে আটক থাকেন।[2]

অনুবাদ সাহিত্য

১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারি তিনি মস্কোর প্রগতি প্রকাশনের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে অনুবাদকের কাজ নিয়ে সোভিয়েত রাশিয়া যান। রুশ মহিলা স্বেতলানা'কে বিয়ে করে সে দেশেই থেকে যান। বহু রুশ সাহিত্যের অসামান্য বাংলা অনুবাদ তার হাত দিয়ে বেরিয়েছে। রাজনৈতিক সাহিত্য ছাড়াও অজস্র শিশু কিশোরদের গল্প, উপন্যাস অনুবাদ করেছেন। ফিওদোর দস্তয়েভ্‌স্কির বঞ্চিত লাঞ্ছিত, জন রীডেদুনিয়া কাঁপানো দশদিন, ল্যেভ তল্‌স্তোয়ের আনা কারেনিনা ইত্যাদি ছাড়াও বাংলা- রুশ- বাংলা অভিধান, ইউক্রেনের গল্প, সোনার চাবি, উভচর মানব ইত্যাদি। তবে অনুবাদের কাজ করতে গিয়ে নিজের মৌলিক লেখার কাজ ব্যাহত হয়।[2][3] সোভিয়েত মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ করে রিপোর্টাজ ধর্মী 'মরু ও মঞ্জরী' গ্রন্থটি লেখেন সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে।

সম্মান

তার সাহিত্যকর্মের জন্যে বঙ্কিম পুরস্কার ও ১৯৮৮ সালে বিদ্যাসাগর-স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয় তাকে।

মৃত্যু

ননী ভৌমিকের শেষ জীবন অবহেলা আর আর্থিক সমস্যায় কাটে। পুত্রের মৃত্যুতে মানসিক আঘাত ও স্মৃতিভ্রংশে ভুগতেন। ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৬ সালে তিনি রাশিয়াতেই পথ দুর্ঘটনায় মারা যান।[1]

তথ্যসূত্র

  1. সুস্নাত দাশ সম্পাদিত (২০০৪)। তেভাগার গল্প। কলকাতা: প্রতিভাস। পৃষ্ঠা ৩১২।
  2. দ্বিতীয় খন্ড, অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ১৪৭। আইএসবিএন 81-86806-99-7।
  3. "Lost glor and a lost childhood"। Russian Writer News। সংগ্রহের তারিখ 28.01.17 এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.