নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক
নজরুল ইসলাম (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[1]
নজরুল ইসলাম | |
---|---|
জন্ম | ১৪ নভেম্বর, ১৯৪৭ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ![]() ![]() |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
নজরুল ইসলামের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বাংগরা গ্রামে। তার বাবার নাম মুন্সি ওয়ালী মিয়া এবং মায়ের নাম রোকেয়া বেগম। তার স্ত্রীর নাম রেনু আরা বেগম। তাদের দুই ছেলে দুই মেয়ে। [2]
কর্মজীবন
নজরুল ইসলাম ইপিআরে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন লালমনিরহাট জেলার মোগলহাট বিওপিতে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধ যুদ্ধ শেষে ভারতে যান। পরে যুদ্ধ করেন ৬ নম্বর সেক্টরের সাহেবগঞ্জ সাবসেক্টরে। ফুলবাড়ী, অনন্তপুর, গঙ্গারহাট, শিমুলবাড়িসহ আরও কয়েক স্থানে যুদ্ধ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে কুড়িগ্রাম জেলা সদরের সর্ব উত্তরে ভূরুঙ্গামারী এলাকায় গুলির শব্দে চারদিকের নিস্তব্ধতা থেমে গেল। এলাকাটি ছিলো ভারতের আসাম রাজ্যের সীমানায়। প্রচণ্ড গোলাগুলিতে গোটা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। নজরুল ইসলাম ও তার সহযোদ্ধারা অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানে। পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগীরা বসে থাকল না। তারাও পাল্টা আক্রমণ শুরু করল। তুমুল যুদ্ধের একপর্যায়ে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগীরা অবস্থান ছেড়ে পিছু হটতে থাকল। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভূরুঙ্গামারীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিরক্ষা অবস্থান গড়ে তোলে। পুলিশের পাশাপাশি থানায় সেখানে ছিল কিছু পাকিস্তানি সেনা। এ ছাড়া সহযোগী হিসেবে ছিল একদল ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্স ও রাজাকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে এই আক্রমণে অংশ নেন। দুটি দল আক্রমণকারী ও একটি কাট অফ পার্টি হিসেবে। তারা ছিলেন ৪০ জন। নজরুল ইসলাম ছিলেন আক্রমণকারী দলে। নজরুল ইসলামসহ কয়েকজন গুলি করতে করতে থানার মধ্যে ঢুকে পড়েন। পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগীরা গ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে নজরুল ইসলামদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। তবে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগীরা দিশাহারা হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তারা অবস্থান ছেড়ে পিছু হটতে শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারা সাময়িকের জন্য থানা দখল করেন। তাদের হস্তগত হয় বিপুলসংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ। একটি বাংকার থেকে তারা উদ্ধার করেন ১১ জন নির্যাতিত নারীকে। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে একজন আহত হন। মুক্তিযোদ্ধারা থানা দখল করতে সক্ষম হলেও তা ধরে রাখার ক্ষমতা তাদের ছিল না। কারণ, আশপাশেই ছিল পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থান। [3]
পুরস্কার ও সম্মাননা
তথ্যসূত্র
- দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২৬-০২-২০১২
- একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৬৯। আইএসবিএন 9789843351449।
- একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা পৃ ২৪৪। আইএসবিএন 9789849025375।
পাদটীকা
- এই নিবন্ধে দৈনিক প্রথম আলোতে ১৩-০২-২০১২ তারিখে প্রকাশিত তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না প্রতিবেদন থেকে লেখা অনুলিপি করা হয়েছে। যা দৈনিক প্রথম আলো ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার-এলাইক ৩.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সে উইকিপিডিয়ায় অবমুক্ত করেছে (অনুমতিপত্র)। প্রতিবেদনগুলি দৈনিক প্রথম আলোর মুক্তিযুদ্ধ ট্রাস্টের পক্ষে গ্রন্থনা করেছেন রাশেদুর রহমান (যিনি তারা রহমান নামেও পরিচিত)।