দ্য স্ট্রেইট স্টোরি

দ্য স্ট্রেইট স্টোরি (ইংরেজি ভাষায়: The Straight Story) চলচ্চিত্রটি সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মীত। পরিচালনা করেছেন বিখ্যাত মার্কিন পরিচালক ডেভিড লিঞ্চ, মুক্তি পেয়েছে ১৯৯৯ সালে। আইওয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যালভিন স্ট্রেইট তার লনমোয়ারে (জমি চাষের এক ধরনের ট্রাক্টর) করে আইওয়া থেকে উইসকনসিন গিয়েছিলেন তার অসুস্থ ভাই লায়েল স্ট্রেইটকে দেখতে। এই ভ্রমণ নিয়েই ছবির কাহিনী রচিত হয়েছে। লিঞ্চের অনেকদিনের সঙ্গী ও সহকর্মী মেরি সুইনির প্রযোজনা ও সম্পাদনায় নির্মীত এই ছবির রচয়িতা হলেন জন ই রোচ

দ্য স্ট্রেইট স্টোরির পোস্টার

ছবির নাম দ্বারা অ্যালভিন স্ট্রেইটকে নির্দেশ করা হচ্ছে। কিন্তু এর একটি ভিন্ন তাৎপর্যও আছে। ডেভিড লিঞ্চের সব ছবির কাহিনীই সাধারণত প্যাঁচালো হয়ে থাকে, মনোযোগ দিয়ে না দেখলে এবং লিঞ্চ সম্বন্ধে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে বোঝা যায় না। কিন্তু এই ছবির কাহিনীতে কোন ঘোরপ্যাঁচ নেই। এ কারণেই একে স্ট্রেইট তথা সোজাসাপ্টা বলা যেতে পারে।

কাহিনী সূত্র

অ্যালভিন স্ট্রেইটের বয়স ৭৩ বছর। সে চোখে কম দেখে এবং দুইটি লাঠিতে ভর করে হাটে। চোখে কম দেখার কারণে তার কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এমন সময় তার ভাই লায়েলের হার্ট স্ট্রোকের সংবাদ আসে। লায়েলের সাথে গত ১০ বছর সে কথা বলেনি, মনোমালিন্যের কারণে। কিন্তু শেষ সময়ে ভাইকে দেখার জন্য অ্যালভিন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তার সাথে তার মেয়ে থাকে যে তাকে উইসকনসিনে ভাইয়ের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে না, তাকে একাই যেতে হবে। সে গাড়ি চালাতে পারবে না, অন্য কেউ তাকি গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এটা ভাবতেও তার ভাল লাগে না। তাই নিজের লনমোয়ার বের করে রওয়ানা হয়।

লনমোয়ার জমি চাষের এক ধরনের ট্রাক্টর যার গতি খুব কম। আইওয়ার লরেন্স থেকে তাকে উইসকনসিনের মাউন্ট জায়োনে যেতে হবে। এই দুই স্থানের দূরত্ব প্রায় ২৪০ মাইল। এই দূরত্ব পাড়ি দিতে তার কয়েক মাস লেগে যায়। বিচিত্র এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই সিনেমার কাহিনী এগিয়ে যায়।

চরিত্রসমূহ

  • রিচার্ড ফার্ন্সওয়ার্থ - অ্যালভিন স্ট্রেইট
  • সিসি স্পেক - রোজ স্ট্রেইট
  • জেইন গ্যালোওয়ে হাইট্‌স - ডরোথি
  • জোসেফ কার্পেন্টার - বাড
  • কেভিন ফার্লি - হ্যারাল্ড ওলসেন
  • জন লরড্যান - ধর্মপ্রচারক
  • এভারেট ম্যাকগিল - টম
  • হ্যারি ডিন স্ট্যান্টন - লায়েল স্ট্রেইট

প্রতিক্রিয়া

সমালোচকরা দ্য স্ট্রেইট স্টোরির প্রশংসা করেছেন। এর অনন্য বৈশিষ্ট্যময়তা বিশেষ প্রশংসা কুড়িয়েছে। রটেন টম্যাটোস রেটিং ৯৫% এবং আইএমডিবি রেটিং ৮.০।

পুরস্কার ও সম্মাননা

দ্য স্ট্রেইট স্টোরি সর্বমোট ১২টি পুরস্কার ও ২৯টি মনোনয়ন লাভ করেছে। রিচার্ড ফার্ন্সওয়ার্থ সেরা অভিনেতা হিসেবে একাডেমি পুরস্কার মনোনয়ন লাভ করেন। উল্লেখ্য, তিনিই সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি যিনি এই মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া ডেভিড লিঞ্চ গোল্ডেন পাম মনোনয়ন লাভ করেন।

ডেভিড লিঞ্চের অন্যান্য ছবির সাথে মিল

বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে ডেভিড লিঞ্চ তার নির্মাণ কৌশল স্পষ্ট করেছেন। সে হিসেবে তার অন্যান্য ছবির সাথে এর বেশ কিছু মিল লক্ষ্যণীয়। যেমন:

  • ছবির শুরুতে এক বৃদ্ধ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু তৎক্ষণাৎ তার পরিবার বা প্রতিবেশের কেউ তা জানতে পারে না। কিছুক্ষণ পর সবাই জানতে পারে এবং তাকা হাসপাতালে পাঠানো হয়। লিঞ্চের ব্লু ভেলভেট ছবির শুরুটাও এমন।
  • ছবির শেষে তারা ভরা আকাশ দেখানো হয়। এর মাধ্যমে কি দিয়ে মানুষ গঠিত হয় এবং তার সম্ভাব্যতার প্রকার বিষয়ক চিরন্তন উভয় সংকটকে তুলে ধরা হয়। লিঞ্চের দি এলিফ্যান্ট ম্যান এর শেষটাও এমন।
  • ছবিতে বেশ কিছু ট্রেডমার্ক দেখা যায়। এখানে ট্রেডমার্ক বলতে এমন কিছুকে বোঝানো হচ্ছে যা লিঞ্চ সবসময়ই ব্যবহার করেন। স্ট্রেইট স্টোরির এ ধরনের ট্রেডমার্কের মধ্যে আছে চলমান ক্যামেরা দিয়ে রাস্তার ক্লোজ-আপ, পরোক্ষভাবে কফি, কাঠ ও আগুন দেখানো ইত্যাদি।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.