দুঃসাহসী টিনটিন
দুঃসাহসী টিনটিন (ফরাসি: Les Aventures de Tintin [lez‿avɑ̃tyʁ də tɛ̃tɛ̃]; ইংরেজি: The Adventures of Tintin) বেলজীয় শিল্পী জর্জ রেমি (১৯০৭–১৯৮৩) রচিত একটি কমিক স্ট্রিপ সিরিজ। রেমি অ্যার্জে (বাংলায় হার্জ নামে পরিচিত) ছদ্মনামে এই কমিক সিরিজটি রচনা করেন। ১৯২৯ সালের ১০ জানুয়ারি ল্য ভাঁতিয়েম সিয়েক্ল (Le Vingtième Siècle) নামক একটি বেলজিয়ান সংবাদপত্রের ল্য প্যতি ভাঁতিয়েম[1] (Le Petit Vingtième) নামক শিশুদের ক্রোড়পত্রে ফরাসি ভাষায় সর্বপ্রথম এই সিরিজের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ধারাবাহিকভাবে মোট চব্বিশটি অ্যালবামে প্রকাশিত এই সিরিজটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। টিনটিনকে নিয়ে একটি সফল পত্রিকা প্রকাশিত হয়। টিনটিনের গল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্র ও নাটকও নির্মিত হয়। সিরিজটি বিংশ শতাব্দীর সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ইউরোপীয় কমিকসগুলির অন্যতম। মোট ৫০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত এই সিরিজের বইয়ের কপি বিক্রির সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।[2]
দুঃসাহসী টিনটিন | |
---|---|
নির্মাতা | অ্যার্জে |
প্রকাশনার তথ্য | |
প্রকাশক |
|
প্রকরণ | Original material for the series has been published as a strip in the comics anthology(s)
|
আসল ভাষা | ফরাসি |
ধরণ | Action/adventure |
প্রকাশনার তারিখ | ১৯২৯ – ১৯৭৬ |
প্রধান চরিত্র(সমূহ) | |
সৃজনশীল দল | |
লেখক(সমূহ) | অ্যার্জে |
চিত্রকর(s) |
|
রঙশিল্পী(সমূহ) |
|
উদ্ভাবক(সমূহ) | অ্যার্জে |
টিনটিন সিরিজের পটভূমি প্রধানত বাস্তব বিংশ শতাব্দীর দুনিয়া। সিরিজের নায়ক টিনটিন (ফরাসি সংস্করণে: Tintin [ত্যাঁত্যাঁ]) একজন বেলজীয় সাংবাদিক। প্রথম থেকেই বিভিন্ন অভিযানে তার সর্বক্ষণের সঙ্গী বিশ্বস্ত পোষা ফক্স টেরিয়ার কুকুর কুট্টুস (ফরাসি: Milou [মিলু]; ইংরেজি: Snowy [স্নোয়ি])। পরবর্তীকালে তার অভিযানের সঙ্গী হন উদ্ধত, উন্নাসিক ও খিটখিটে নাবিক ক্যাপ্টেন হ্যাডক; প্রতিভাবান অথচ কানে খাটো প্রফেসর ক্যালকুলাস (ফরাসি সংস্করণে: Professeur Tournesol প্রোফেস্যর্ তুর্ন্যসল্) এবং অপদার্থ গোয়েন্দা জনসন ও রনসনের (ফরাসি সংস্করণে: Dupond et Dupont দুপোঁ এ দুপোঁ; ইংরেজি সংস্করণে: Thomson and Thompson টম্সন্ অ্যান্ড্ টম্সন্) মতো বেশ কিছু পার্শ্বচরিত্র। কোনো কোনো কমিক্সে এর্জে স্বয়ং উপস্থিত থেকেছেন অপ্রধান চরিত্র হিসেবে; আবার কখনও কখনও তার সহকর্মীদের সেই সকল চরিত্রে অঙ্কন করেছেন।
এর্জে এই কমিক স্ট্রিপ সিরিজটি আঁকতে লিন ক্লেয়ার (ligne claire) নামের শৈলী ব্যবহার করেন। পরিচ্ছন্ন ও অভিব্যক্তিমূলক অঙ্কনের জন্য সিরিজটি বহুকাল ধরে প্রশংসিত হয়ে আসছে।[3][4][5][6] আকর্ষণীয়[7] ও বহুচর্চিত[7][8][9] এই সিরিজের প্লটকে একাধিক বর্গের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। যেমন: ফ্যান্টাসির উপাদানসহ ডাকাবুকো অ্যাডভেঞ্চার গল্প, রহস্য, রাজনৈতিক থ্রিলার, কল্পবিজ্ঞান, ইত্যাদি। আগাগোড়াই টিনটিন সিরিজের বৈশিষ্ট্য হল এর নির্মল হাস্যরস; পরবর্তীকালে তার সঙ্গে যুক্ত হয় পরিশীলিত শ্লেষ এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভাষ্য।
গ্রন্থতালিকা
এই তালিকাটি টিনটিন সিরিজের বইগুলির বাংলা নামের তালিকা। প্রকাশনার তারিখটি অবশ্য মূল ফরাসি সংস্করণের। ১৯৪০-এর দশকে ২য় থেকে ১০ম খণ্ডগুলির ফিক্সড ৬২-পাতার রঙিন পুনর্মুদ্রণ করা হয়। ১১শ বইটি প্রথম মৌলিক রঙিন বই। স্তুদিও এর্জে ১৬শ থেকে ২৩তম খণ্ড এবং ২য়, ৪র্থ, ৬ম ও ১৫শ খণ্ডটির সংশোধিত পুনর্মুদ্রন প্রকাশ করে।
|
|
এছাড়াও Tintin et le lac aux requins নামক ফরাসি চলচ্চিত্র অবলম্বনে একখানি কমিক প্রকাশিত হয়।
- হাঙরহ্রদের বিভীষিকা (১৯৭২)
ইতিহাস
টিনটিন একজন সাংবাদিক। যে যুগের প্রেক্ষাপটে এর্জে টিনটিনের এই পরিচয়টি তার একাধিক অভিযানের বর্ণনায় ব্যবহার করেছেন, সেই যুগটি ছিল রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লব ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুগ। এমনকি বাস্তবে চন্দ্রাভিযানের বহু আগেই তিনি তার কল্পনায় চাঁদে টিনটিনের অভিযানের গল্প শুনিয়েছেন। এর্জে টিনটিনের একটি পৃথক জগৎ সৃষ্টি করেছিলেন। এই জগৎ ছিল আমাদের বাস্তব জগতের একটি সরলীকৃত অথচ সুস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। আর এই প্রতিচ্ছবি অঙ্কণে এর্জেকে সাহায্য করেছিল তার সুসংরক্ষিত ছবির একটি সংগ্রহ।[10]
টিনটিনের গল্পগুলি রহস্যের এক একটি ছকে-বাঁধা উপস্থাপনা। এই রহস্যের সমাধান করাও হয়েছে যুক্তিগ্রাহ্য পন্থায়। তবে তার সঙ্গে এর্জে মিশিয়ে দিয়েছেন তার নিজস্ব কৌতুকরসবোধ।[10] তিনি এমন সব পার্শ্বচরিত্র সৃষ্টি করেছেন যাদের হাবভাবের গতিপ্রকৃতি আগে থেকে আন্দাজ করা গেলেও তাদের নিজস্ব চমৎকারিত্ব পাঠকে আকর্ষিত করে। ছকটি বেশ কোমল। হাস্যরসের পূর্বনিশ্চয়তা কতকটা পিনাটস বা দ্য থ্রি স্টুজেস সিরিজের চরিত্রগুলির মতো।[11] কমিক স্ট্রিপের কলাকৌশল সম্পর্কে এর্জের ধারণা ছিল দক্ষ শিল্পীর মতোই। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য পান্না কোথায় গল্পে পদচারণার এক অপূর্ব ব্যঞ্জনাময় প্রয়োগ, যার মধ্যে তিনি এমন এক উদ্বেগের অভিপ্রকাশ ঘটান, যেখানে আদপেও উদ্বেগজনক কিছু ঘটেনি।[9]
আরও পড়ুন
- Jessel, Stephen (1998-11-29)। "Crazy for Tintin"। BBC News। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "Tintin on trial"। BBC News। 1999-02-04। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "Tintin conquers China"। BBC News। 2001-05-23। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Dowling, Stephen (2004-01-09)। "Boy reporter still a global hero"। BBC News। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Pandey, Geeta (2005-09-28)। "Tintin ventures into India's rural markets"। BBC News। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "Bid to ban 'racist' Tintin book"। BBC News। 2007-07-12। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - "Book chain moves 'racist' Tintin"। BBC News। 2007-07-17। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Joly, Dom (2007-07-30)। "How do you tell a six-year-old that Tintin was a bit dodgy?"। Dom Joly। ২০০৮-০৫-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Joly, Dom (2007-10-29)। "Mad about the boy : Dom Joly's obsesssion with Tintin"। The Independent। ২০০৯-০১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-০৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)
পাদটীকা
- আনন্দবাজার প্রকাশনীর প্রকাশিত টিনটিনের বাংলা সংস্করণে ল্য পেতি ভাঁতিয়েম লেখা হয়েছে।
- Kennedy, Maev (২০০৩-১১-১৯)। "Museum aims to draw crowds with cartoon boy wonder aged 75"। The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৯-১২।
- "Tintin and the enigma of academic obsession" The Daily Telegraph (London); 1 July 2006; Toby Clements; p. 006
- "Tintin at the top" The Times (London); 9 December 2006; Erica Wagner; p. 33
- "Tintin's big art adventure; An exhibition in Paris puts the creator of the blank-faced boy reporter and his clever dog alongside the 20th artists. John Lichfield gets drawn in" The Independent (London); 27 December 2006; John Lichfield; p. 1
- "Blistering barnacles! Tintin is a Pop Art idol" The Times (London); 29 December 2006; Ben Macintyre; p. 17
- Thompson, Kim (২০০৩)। "Hergé His Life and Work"। The Comics Journal। 1 (250): 176–179। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - Gravett, Paul (২০০৫)। Graphic Novels: Stories to Change Your Life। Aurum। আইএসবিএন 1-84513-068-5।
- Mills, T.F. (১৯৮৩)। "America Discovers Tintin"। The Comics Journal। 1 (86): 60–68। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - Farr, Michael (২০০৪)। "Thundering Typhoons"। History Today। 54 (3): 62। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - Rebecca Bengal (২০০৬)। "Phoebe Glockner On Cartooning"। Tintin and I। ২০০৬-০৭-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৮-২১।
তথ্যসূত্র
- Anders Høgsbro Østergaard, Tintin and I (2003)
- Benoit Peeters (1983) Le Monde d’Hergé, Casterman.
- Benoît Peeters (1984) Les Bijoux ravis, une lecture moderne de Tintin. Magic-Strip.
- Michael Farr Tintin: The Complete Companion, John Murray (2001) আইএসবিএন ০-৭১৯৫-৫৫২২-১
- "Faces of the week" by Andrew Walker, BBC Magazine, 16 December 2005, retrieved 27 January 2005
বহিঃসংযোগ
- প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
- Tintinologist.org, টিনটিনের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে পুরাতন ইংরেজি ভাষার ফ্যানসাইট
- The History Of The Newspaper "Le Vingtième Siècle", যে পত্রিকায় টিনটিন প্রথমবার প্রকাশিত হয়।
- Tintin Books A discussion of Tintin
- Fictional flags in the Tintin stories
- Intertintin : Tintin - Kuifje publications by country.