দীপক শোধন

রোশন হর্ষদলাল দীপক শোধন (গুজরাটি: દીપક શોધન; এই শব্দ সম্পর্কেউচ্চারণ ; জন্ম: ১৮ অক্টোবর, ১৯২৮ - মৃত্যু: ১৬ মে, ২০১৬) গুজরাতের আহমদাবাদে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটার ছিলেন।[1] ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে গুজরাত ও বরোদার প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ব্যাটসম্যান ছিলেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়েও পারদর্শীতা দেখিয়েছেন দীপক শোধন

দীপক শোধন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরোশন হর্ষদলাল শোধন
জন্ম(১৯২৮-১০-১৮)১৮ অক্টোবর ১৯২৮
আহমেদাবাদ, গুজরাত
মৃত্যু১৬ মে ২০১৬(2016-05-16) (বয়স ৮৭)
আহমেদাবাদ, গুজরাত, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬৮)
১২ ডিসেম্বর ১৯৫২ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট২৮ মার্চ ১৯৫৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৪৬/৪৭১৯৬১/৬২গুজরাত
১৯৫৭/৫৮১৯৫৯/৬০বরোদা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৩
রানের সংখ্যা ১৮১ ১৮০২
ব্যাটিং গড় ৬০.৩৩ ৩১.৬১
১০০/৫০ ১/০ ৪/৭
সর্বোচ্চ রান ১১০ ২৬১
বল করেছে ৬০ ৫,৩৫৮
উইকেট ৭৩
বোলিং গড় ৩৪.০৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৪৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৭
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

খেলোয়াড়ী জীবন

শোধন বামহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন ও মাঝে-মধ্যে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। লালা অমরনাথের পর দ্বিতীয় ভারতীয় ব্যাটসম্যানরূপে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন। সফরের শুরুতে পাকিস্তান একাদশের বিপক্ষে পশ্চিম অঞ্চলের সদস্যরূপে অপরাজিত ৮৯* রান তোলার প্রেক্ষিতে দলের সদস্য মনোনীত হন। ১৯৫২ সালের কলকাতা টেস্টে তাকে দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে রাখা হয়। কিন্তু খেলতে অক্ষম বিজয় হাজারের পরিবর্তে ফিল্ডিং করতে নামানো হয়।[1] কলকাতায় প্রত্যেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের কোটায় রান তুলেন। তন্মধ্যে ৮ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে শোধন ১১০ রানের মনোজ্ঞ ইনিংস উপহার দেন। পরবর্তীতে তার এ শতক সম্পর্কে এক স্বাক্ষাৎকারে বলেন যে, ‘আমি নিজেকে আক্রমণাত্মক খেলোয়াড় হিসেবে জানি। আমি টের পেয়েছিলাম যে পাকিস্তান আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়েছে। নবম উইকেট পতনের পরও আমি পরপর দুইটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১০০ রানে পৌঁছি।’ শেষ উইকেটে গুলাম আহমেদের সাথে মূল্যবান ৪০ রানের জুটি গড়েন।

এরপর পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ৪৫ ও ১১ তুলেন। পরবর্তী তিন টেস্টে অংশ নেননি। সিরিজের শেষ টেস্টে তাকে নেয়া হলেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে গুরুত্বপূর্ণ অপরাজিত ১৫* রান তুলেন। এটিই তার শেষ টেস্ট ছিল। এরপর আর কখনো তাকে ভারতের পক্ষে খেলতে দেখা যায়নি।

দীপক শোধনের ৬০.৩৩ গড়ে রান সংগ্রহ ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সম্পূর্ণ খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করা ক্রিকেটারদের মধ্যে অদ্যাবধি সর্বোচ্চ গড়রূপে বিবেচিত। রঞ্জী ট্রফিতে গুজরাতের পক্ষেই অধিকাংশ সময় খেলেছেন। এরপর তিনি বরোদায় স্থানান্তরিত হন।

তরুণ অবস্থায় তিনি ভালোমানের হকি খেলোয়াড় ছিলেন। বামহাতি হওয়ায় তার বামহাতে খেলার উপযোগী হকিস্টিকের প্রয়োজন পড়তো।.

বিতর্ক

ভারতীয় দলে তার অনুপস্থিতির বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। ধারণা করা হয় যে, তিনি দল নির্বাচকমণ্ডলীর উপেক্ষার পাত্র ছিলেন। ২০০৪ সালে ‘দ্য কভার্স আর অফ’ শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। রাজন বালা বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে স্বাক্ষাৎকার নিয়ে জেনেছেন যে, দীপক শোধন ও বিনু মানকড়ের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধের কারণেই তার খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হয়ে যায়। দলের জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়রূপে মানকড়ের সাথে অধিনায়ক বিজয় হাজারের সুসম্পর্ক ছিল না। প্রচলিত রয়েছে যে, এ সময় মানকড় তাকে তার সাথে অথবা হাজারেকে বেঁছে নিতে বললে সূধন ভারতীয় দলে অবস্থানের কথা বলেন। মানকড় তাকে দল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে হাজারেকে দল থেকে বের করে দেয়া হয় ও মানকড়কে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।

দেহাবসান

১৬ মে, ২০১৬ তারিখে আহমদাবাদের নিজ বাড়ীতে ৮৭ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে। তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সালে তার এ রোগ ধরা পড়ে। মৃত্যুকালীন তিনিই ভারতের বয়োঃজ্যেষ্ঠ সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ছিলেন।[2][3]

তথ্যসূত্র

  1. "Old-world Shodhan's trip down memory lane"। Wisden India। ১৩ নভেম্বর ২০১২। ৪ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  2. Former India cricketer Deepak Shodhan dies aged 87
  3. When I met India's oldest living Test cricketer

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.