দয়াময়ী দেবী মন্দির

দয়াময়ী দেবী মন্দির হল পটুয়াখালি জেলার গলাচিপা উপজেলা থেকে ২১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সুতাবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত দুইশ বছরের পুরানো দয়াময়ীদেবীর মন্দির। ১২০৮ বঙ্গাব্দে জমিদার ভবানী শঙ্কর সেন মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন।[1]

দয়াময়ী দেবী মন্দির
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাপটুয়াখালী জেলা
অবস্থান
অবস্থানসুতাবাড়িয়া, গলাচিপা উপজেলা
দেশবাংলাদেশ
স্থাপত্য
প্রতিষ্ঠাতাজমিদার ভবানী শঙ্কর সেন
প্রতিষ্ঠার তারিখ১২০৮ বঙ্গাব্দ
স্থানের এলাকা১৫ একর

ইতিহাস

জনশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় ২০০ বছর পূর্বে একটি প্রাচীন বেল গাছের তলায় রাতের অন্ধকারে মাড়ি ফুঁড়ে দয়াময়ী দেবীর মূর্তি আবির্ভূত হয়। ঐ রাতেই জমিদার ভবানী শঙ্কর সেন স্বপ্নের মধ্যে দেবী মূর্তির আবাসস্থলে মন্দির প্রতিষ্ঠার আদেশ পান।[1][2]

অপর এক জনশ্রুতি অনুযায়ী স্বপ্নে আদেশ পেয়ে জমিদান ভবানী পাশ্ববর্তী নদীতে সূর্যস্নান করতে গিয়ে ভাসমান অবস্থায় পাথরের তৈরি দয়াময়ী দেবীর মূর্তি খুঁজে পান। পরবর্তীতে ঐ মূর্তি উদ্ধার করে এনে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। মন্দিরের নাম দেওয়া হয় দয়াময়ী দেবী মন্দির।[1]

এক সময় দয়াময়ীদেবী মন্দিরের মহিমায় আকৃষ্ট হয়ে দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তবৃন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে ছুটে আসতেন। প্রতি বছর মাঘ মাসে পুরো এক মাস মেলা বসত মন্দির এলাকায়। এ মেলা দয়াময়ী মেলা নামে পরিচিত। হাজার হাজার লোক সমবেত হতো দয়াময়ী মেলায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধু-সন্নাসীরা এসে ভীড় জমাত। সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন বই পত্রে দয়াময়ী দেবী মন্দির এবং দয়াময়ী মেলার বিবরণ রয়েছে। সময়ের ব্যবধানে ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মেলা এখন মাত্র এক দিন অনুষ্ঠিত হয়; মাঘী সপ্তমীতে। মন্দিরের অনেক অংশই তেতুঁলিয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং হতে যাচ্ছে।[1]

আকার

প্রায় তিন একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত দয়াময়ীদেবী মন্দির। মূল মন্দিরের মেঝের ক্ষেত্রফল প্রায় ৩০০ বর্গফুট। মন্দিরের সামনেই ছাদ দেওয়া অবস্থায় বেশ বড় একটি ভবন রয়েছে, যা বিভিন্ন উৎসব এবং আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হত।[2]

এর পশ্চিম পাশে রয়েছে পৃথক একটি শিব মন্দির। শিব মন্দিরের উপরিভাগ গম্বুজাকৃতির। দেবীমন্দিরের প্রধান ফটকের কাছেই রয়েছে প্রহরীদের থাকার জন্য নির্মিত আলাদা দুটি কক্ষ। মন্দিরের পূর্ব দিকে বড় একটি দীঘি রয়েছে। মন্দির স্থাপনের পর প্রতিষ্ঠাতা জমিদার ভবানী শঙ্কর সেন এ মন্দিরের নামে ১৫ একর জমি রেকর্ড করেছিলেন। সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এ সম্পত্তির অধিকাংশ অনেক আগেই বেদখল হয়ে গেছে বলে জানাগেছে। এমনকি মন্দিরের বিশাল ভবনের ইট, পাথর, দরজা-জানালার মূল্যবান কাঠও লুটপাট হয়ে গেছে।[2]

তথ্যসূত্র

  1. "নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম গলাচিপার দয়াময়ী দেবী মন্দির"দৈনিক সমকাল। ১০ মে ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৬
  2. "ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গলাচিপার দয়াময়ী মন্দির"বাংলানিউজ২৪.কম। ৩১ মে ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৬
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.