তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ

তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ (পশতু ভাষা : د افغان-انګرېز درېمه جګړه), তৃতীয় আফগান যুদ্ধ নামেও পরিচিত, যুদ্ধ শুরু হয় ৬ই মে ১৯১৯ সালে এবং শেষ হয় ৮ই আগস্ট ১৯১৯ সালে একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে। ব্রিটিশ লেখক মাইকেল বারথোর্প এর ভাষ্য অনুযায়ী, এটি একটি ছোট যুদ্ধকৌশলী জয় ছিল ব্রিটিশদের জন্য কারণ আফগানিস্তান আমিরাত এবং ব্রিটিশ ভারত এর মধ্যে ডুরান্ড সীমা রাজনৈতিকভাবে পুর্ননিশ্চিত হয়েছিল এবং আফগানরা রাজী হয়েছিল ব্রিটিশ খণ্ডে আর যুদ্ধে না যাবার। আফগানরা সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের পররাষ্ট্র নীতি পুনরায় শুরু করে।

তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ
মূল যুদ্ধ: দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়
তারিখ৬ই মে – ৮ই আগস্ট ১৯১৯
অবস্থান
ব্রিটিশ ভারত সাম্রাজ্যের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এবং আফগানিস্তান
ফলাফল

রাওয়ালপিন্ডি চুক্তি

  • আফগানের কূটনৈতিক জয়[1]
  • সিদ্ধান্তহীন সামরিক অভিযান[2]
  • ডুরান্ড লাইন পুনরায় নিশ্চিতকরণ
  • আন্তর্জাতিক মন্ডলে আফগানের পুরোপুরি সার্বভৌম স্বাধীনতা
বিবাদমান পক্ষ
টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Emirate of Afghanistan

 যুক্তরাজ্য

  • টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত ব্রিটিশ রাজ
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
  • টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Emirate of Afghanistan Amanullah Khan
  • টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Emirate of Afghanistan Nadir Khan
  • Sir Arthur Barrett
  • Reginald Dyer
  • Alexander Eustace
শক্তি
50,000-man standing army supported by up to 80,000 tribesmen 8 divisions, 5 independent brigades and 3 cavalry brigades, plus a number of modern aircraft, armoured cars and artillery
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
approx. 1,000 killed[3] 236 killed in action, 1,516 wounded or died of disease.[4]

পটভূমি

তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের ভিত্তি স্থাপিত শুরু হয়েছিল মূল যুদ্ধ সংঘটনের বহু বছর পুর্বেই। ভারতে অবস্থানরত ব্রিটিশদের চোখে, আফগানিস্তান অনেক আগে থেকেই হুমকির সম্ভাব্য উৎস। একটা লম্বা সময় ধরে রাশিয়ানদের উদ্দেশ্য নিয়ে ব্রিটিশরা চিন্তিত ছিল, "স্তারিস্ত" নামক বাহিনী দ্বারা আফগানিস্তান হয়ে ভারত আক্রমণ এর উদ্বিগ্নতা কাজ করছিল।[9] এই সময়কালকে মহা খেলা বা দি গ্রেট গেম নামেও আখ্যায়িত করা হয়। এই হুমকি নিরসনে, ব্রিটিশরা অনেকবার তাদের পরিকল্পনা কাবুলের উপর স্থাপনেরও চেষ্টা চালিয়েছিল এবং ১৯ শতাব্দী নাগাদ দুই বার যুদ্ধও সংঘটিত হয়ঃ প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ (১৮৩৯-৪২) এবং দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ (১৮৭৮-৮০)। [5][6]

দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের শেষে ১৮৮০ সাল থেকে ৪০ বছরের সুসম্পর্কের শুরু ধরা হয়, ব্রিটেন এবং আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন দুই নেতা আবদুর রাহমান খান এবং হাবিবুল্লাহ খান এর মধ্যে। এই সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ উপঢৌকনের মাধ্যমে ব্রিটেন আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র নীতিতে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। আপাতদৃষ্টিতে দেশটি স্বাধীন থাকে, তত্সত্ত্বেত্ত ১৮৭৯ সালের গান্দামাক এর চুক্তি অনুসারে মেনে নেয়া হয়েছিল যে, বাইরে বিষয়গুলোর মধ্যে" … ভারত ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোন দিকে খোলা ব্যবস্থা থাকবে না"।[১২]

১৯০১ সালে আমির আবদুর রাহমান খান এর মৃত্যুর মাধ্যমে ১৮ বছর পরের যুদ্ধের প্রথম আভাস আসে। তার উত্তরাধিকারী হোন হাবিবুল্লাহ, যিনি ছিলেন একজন বাস্তবমুখী নেতা। তিনি আফগানিস্তানের সার্থে কখনও ব্রিটেন অথবা রাশিয়া এর সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছিলেন।[১৩][১৪] ১৯০৭ সালের ইঙ্গ-রাশিয়ান কনভেনশন( সেইন্ট পিটার্সবার্গের কনভেনশন) উপর আলোচনা না হওয়ার উপর অনেক বিরক্তিভাব সত্ত্বেও আফগানিস্তান প্রথম বিশ্বযুদ্ধে(১৯১৪-১৯১৮ সাল) নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে। এই সময় ওটোমান সাম্রাজ্য থেকে লক্ষণসূচক চাপ আসে এবং ওটোমান সাম্রাজ্য সার্বভৌম জার্মানি এর পক্ষে যুদ্ধে নামে এবং সুলতানও(নামমাত্র ইসলামের নেতা) মিত্রশক্তি এর বিরুদ্ধে ধর্ম যুদ্ধ ঘোষণা করেন।[১৫]

লড়াইয়ে নিরপেক্ষ থাকা সত্তেও, হাবিবুল্লাহ চুক্তি দ্বারা সর্বোচ্চ  লাভবান হওয়ার লক্ষ্যে উভয় পক্ষের সাথেই কাজ করেন এবং কাবুলে একটি তুর্কি-জার্মান মিশনে রাজী হোন এবং কেন্দ্রীয় শক্তি থেকে সামরিক সহায়তাও গ্রহণ করেন। [7] Despite considerable resentment over not being consulted over the Anglo-Russian Convention of 1907 (Convention of St. Petersburg), Afghanistan remained neutral during the First World War (1914–1918), resisting considerable pressure from the Ottoman Empire, which entered the conflict on the side of the Central Powers; the Ottoman Sultan (as titular leader of Islam) called for a holy war against the Allies.[8][9] সাহায্যের জন্য অসংখ্যবার ডাক আসলেও তিনি নিয়মিতভাবে সেই সব কৌশলে পরিহার করে চলেন, তত্সত্ত্বেত্ত উতপেতে উপজাতীয় নেতাদের সাথে তিনি যোগাযোগ রাখতে পারছিলেন না, যারা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের উৎখাতের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিল, এর মধ্যে তুর্কি এজেন্টরাও সীমান্ত বরাবর ঝামেলা প্ররোচিত করে আসছিল। [8] বিশালসংখ্যক ব্রিটিশ ভারতীয় সৈন্য বাহিরে গমন এবং তুর্কিদের কাছে ব্রিটিশ ভারতীয় বাহিনীর হারের সংবাদ তুর্কি গুপ্তচরদের বিদ্রোহ গড়ে তোলায় সাহায্য করে এবং ১৯১৫সালে মুহমেন্দ এবং মাহসুদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা হয়। এইসকল সঙ্ঘটন সত্তেও, ব্রিটিশদের এই সময় এই সব ছোট সমস্যা নিরসন এর জন্য কষ্টজনক সময় হলেও   সীমানা অনড় থাকে। [8]

তুর্কি-জার্মান একটি মিশন ১৯১৬ সালে কাবুলে ত্যাগ করে। এই সময়ের মধ্যেই বিষয়গুলো ভালোবাবে হাবিবুল্লাহ এর কাছে ধারণা দেয় যে, আফগানিস্তান একটি স্বাধীন দেশ এবং দেশটি কারো কব্জায় অনুধীন থাকবে না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষের পর, হাবিবুল্লাহ ব্রিটিশ সরকারের নিকট যুদ্ধে তার সাহায্যের জন্য পুরস্কার চান। আফগানিস্তানের স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতিতে ব্রিটিশ  স্বীকৃতি চাওয়া হয়, তিনি ১৯১৯ সালের ভার্সাই শান্তি সম্মেলনে আসনও অনুরোধ করেন। ভাইসর‍্য ফ্রেডেরিক থেসিগার, ১ম ভিসকাউন্ট কেল্মসফোর্ড এই অনুরোধ প্রত্যাখান করেন, কেননা সম্মেলনটি শুধুমাত্র যুদ্ধে উপস্থিত দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কথা ছিল। পরবর্তি আলোচনা এর কথা থাকলেও তা আর হয়ে উঠেনি কারণ ১৯১৯ সালের ১৯ই ফেব্রুয়ারি হাবিবুল্লাহ কে গুপ্তহত্যা করা হয়। [10]

এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, হাবিবুল্লাহ এর ভাই নাসরুল্লাহ খান নিজেকে হাবিবুল্লাহ এর উত্তরাধিকারী দাবী করেন অন্যদিকে কাবুলে আমানুল্লাহ- হাবিবুল্লাহ এর তৃতীয় ছেলে নিজেকে আমির (নেতা) হিসেবে ঘোষণা করেন। ততসত্তেও, আফগান সৈন্যরা আমানুল্লাহ কে সন্দেহ করে তার পিতার গুপ্তহত্যায় সাহায্যের জন্য। তার ক্ষমতা দৃঢ় করার লক্ষ্যে ১৯১৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর পর তিনি নিজেকে গাণতান্ত্রিক আর্দশে প্রকাশ করেন, নতুনভাবে সরকারি অবকাঠামো গঠনের  অঙ্গীকার করেন। তিনি প্রস্তাব করেন যে জোরপূর্বক শ্রম আদায় করা যাবে না, স্বৈরশাসন বা নিপীড়ন চলবে না এবং আফগানিস্তান হবে মুক্ত ও স্বাধীন এবং গান্দামাক এর চুক্তি এর দ্বারা আর আবদ্ধ থাকবে না।

ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই আমানুল্লাহ তার চাচা নাসরুল্লাহ কে তার পিতার হত্যার জন্য গ্রেপ্তার করেন এবং শাস্তিস্বরূপ যাবজ্জীবন জেল প্রদান করান। নাসরুল্লাহ দীর্ঘকাল আফগান রক্ষনশীল চিন্তা-চেতনাবিদ ও দল্গুলোর নেতা ছিলেন এবং তার প্রতি এই আচরনে পরিস্থিতি কিছুটা খারাপ এর দিকে এগুচ্ছিলো। এপ্রিল ১৯১৯ নাগাদ, আমানুল্লাহ বুঝতে পারেন যে রক্ষনশীলদের শান্ত করা না গেলে তিনি ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না। আভ্যন্তরীন আফগান আদালতে গন্ডগোল থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এবং  অমৃতসর হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান নাগরিক অশান্তি এর সুযোগ ব্যবহার করে [11] আমানুল্লাহ ব্রিটিশ ভারত আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।[12][13]

প্রতিবাদী বাহিনী

১৯১৯ সালে আফগান নিয়মিত বাহিনী কোন সুসজ্জিত ভয়ঙ্কর বাহিনী ছিল না, বাহিনীতে ছিল শুধুমাত্র ৫০,০০০ সৈন্য। এই বাহিনী সংগঠিত ছিল ২১টি অশ্বারোহী সৈন্যদল এবং ৭৫টি পদাতিক স্থলবাহিনী, যাদের ছিল ২৮০টি আধুনিক কামান ৭০টি ব্যাটারিতে সজ্জিত সাহায্যের জন্য।[14] এছাড়াও সেনাবাহিনীর সাহায্যার্থে আফগান আরো আজ্ঞা করতে পারতো ৮০,০০০ এরও বেশি বিভিন্ন গোত্রের আদিবাসিদের এবং অসংখ্য সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে আসা ব্রিটিশ ভারতের সৈন্যরাও এতে যোগদান করতো। বাস্তবমতে, আফগান নিয়মিত বাহিনী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল না, কারণ বিগত কয়েক বছরে অনেক অফিসার লাশ হয়েছিলেন রাজনৈতিক জটিলতার চক্রান্তে। লেফট্যানেন্ট জেনারেল জর্জ মোলসঅর্থ তার অভিযানের বইয়ে এভাবে আমিরের সেনাবাহিনীকে এভাবে নিরূপণ করেনঃ 

"আফগান নিয়মিত সেনাবাহিনী ছিল ...অপ্রতুল্য ভাবে প্রশিক্ষিত, কম বেতনভুক্ত এবং খুব সম্ভবত দুর্বল। অশ্বারোহী বাহিনী পদাতিক বাহিনী থেকে কিছুটা এগিয়ে ছিল সমান শক্তির ঘোড়ার আরোহণের কারণে। জার্মান- তুর্কি এবং ব্রিটিশ বিভিন্ন ধরনের রাইফেল ছিল, এছাড়া অপ্রচলিত মার্টিনি এবং স্নাইডার ছিল। কিছু পদাতিক সৈন্য এর বেয়নেট ছিল। কামান ছিলা ঘোড়ায় টানা অথবা আবদ্ধ করা এবং ক্রুপ ১০ মিমি হাওয়াইটজার, ৭৫মিমি ক্রুপ পাহাড়ি বন্দুক এবং ৭ পাউন্ডের আদিম হামানদিস্তাও ছিল। সেখানে আরো কিছু অনেক অনেক পুরোনো চার ব্যারেলের গার্ডিনিয়ের এর মেশিন গান ছিল। গোলাবারুদ ছিল অপ্রতুল্য এবং তা বিতরণ ছিল কষ্টসাধ্য। কামানের জন্য অনেক বেশি কালো পাউডার ব্যবহার হতো, ছড়ানো এবং বিস্ফোরণের খোলস হিসেবে। কাবুলের অস্ত্রাগার নির্মানশালা ছিল একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের এবং চালিত হতো শিখ কারিগর দ্বারা, যেখানে অকপটাতা থাকলে প্রয়োজনীয় দক্ষতা ছিল না। সংগঠিত পরিবহন অনুপস্থিত এবং জোগানের ব্যবস্থাও ছিল অপূর্ণাঙ্গ ।"[15]

নিয়মিত সেনাবাহিনীর সাহায্যে, আফগান কমান্ড বিভিন্ন গোত্রে আহবার করতে যাচ্ছিল, এতে প্রায় ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ যোদ্ধা আসত শুধুমাত্র খাইবার এলাকা থেকেই। নিয়মের বিপরীতে লস্কর এলাকার কাছে ছিল সবচেয়ে ভালো সৈন্যবাহিনী, তাদের যুদ্ধ কৌশল অনেক ভালো ছিল, উন্নত অস্ত্র সস্ত্রে তারা অনেক বেশি সজ্জিত ছিল যেগুলো তারা নিজেরা তৈরী করেছিল অথবা প্রচুর পরিমাণ গোলা বারুদ বিভিন্ন গ্যারিসন থেকে পুর্বে লুটেছিল। .[16]

এই হুমকি মুখোমুখি করতে, ব্রিটিশরা অনেক বড় বাহিনী আনতে পারত। মে ১৯১৯ সালে, সীমান্ত বাহিনী বাদে, ব্রিটিশ, ব্রিটিশ ভারব সৈন্য বাহিনী এর ছিল মোট আটটি ডিভিশন, পাঁচটি স্বাধীন ব্রিগেড পদাতিক বাহিনীর এবং তিনটি অশ্বারোহী বাহিনী। এই বাহিনীর মধ্যে উত্তর-পশ্চিমে ছিল তিনটি পদাতিক ডিভিশন এবং ২টি অশ্বারোহী ব্রীগেড এছাড়া জিএইচকিউ ভারত মূল এর কাছে অতিরিক্ত সংরক্ষিত একটি পদাতিক ডিভিশন ও একটি অশ্বারোহী ব্রিগেড ছিল। এই থেকে দুইটি পদাতিক ডিভিশন ও দুইটি অশ্বারোহী ব্রিগেড দিয়ে তারা একটি আক্রমণাত্মক কৌশল করে কাইবার সম্মুখে যেটা তোছি ও কুররাম এলাকা তে ব্যবহারের পরিকল্পনা থাকে। একটি পদাতিক ডিভিশন ও তথা কথিত অশ্বারোহী বাহিনী রাখা হয় বেলুচিস্তান-ঝোব সম্মুখের জন্য। [17] সেখানে আরও তিনটি সীমানা ব্রিগেড ছিল যাদের সাথে আরো বহুসংখ্যক  স্থানিক বাহিনী এবং অনিয়মিত বাহিনী উপস্থিত ছিল।[18]

কামানের গোলা এর যোগান কম ছিল, এবং তিন পদাতিক ডিভিশনের প্রত্যেকের একটি করে ১৮ পাউন্ডের ২ ব্যাটারি সংবলিত  রয়েল ফিল্ড কামান ও ১ ব্যাটারী এর ৪.৫ইঞ্চি হাওয়াইটযার ব্রিটিশ ফিল্ড কামান ব্রিগেড ছিল এবং একটি ইন্ডিয়ান পাহাড়ি ব্রিগেড ছিল যার সাথে ছিল ২.৭৫ ইঞ্চি এর পাহাড়ি গান। সেখানে আরো ছিল ২ ব্যাটারী সংবলিত ট্র্যাক্টর চালিত ৬ ইছি হাওয়াইটযার এবং রয়েল গ্যারিসন কামানের ২টি ব্রিটিস পাহাড়ি ব্যাটারী যার সাথে ৩.৭ ইঞ্ছি পাহাড়ি হাওয়াটযার সংযুক্ত ছিল। তদসত্তেও, অধিকাংশ ব্যাটারীর ই ছিল ৪টি করে গান এবং পরিশেষে সেখানে ১৫ পাউন্ডের সম্মুখবর্তী কামান ছিল।  [19]

একটি রয়েল এয়ার ফর্সের হান্ডলে পেজ টাইপ ও

খাইবার ফ্রন্টের মেশিন গুলো ছিলো অনেক পুরোনো .৩০৩ ম্যাক্সিমস। মোটর পরিবহন ও তারহীন যোগাযোগের মাধ্যমে  ব্রিটিশরা যুদ্ধে নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে ছিল। এছাড়া সাঁজোয়াযুক্ত গাড়ি এবং আরএএফ বিচ্ছিন্নতার কারণে আগ্নেয়াস্ত্র এর পৌঁছানোর সক্ষমতা আসে, আধুনিক এইসবই আফগানদের দেখানো হয় কাবুলে বোমাবর্ষণ চলাকালীন। তারা ৬০ পাউন্ডার গান দ্বারা গুলিবর্ষনেও সক্ষম ছিল।  আরএএফ দলের অংশ হিসেবে যুদ্ধে এসেছিল নং ৩১ স্কোয়াড্রন এবং নং ১১৪ স্কোয়াড্রন [20]

কিন্তু ব্রিটিস দের জন্য মূল সমস্যা ছিল নিজ সেনাবাহিনী তে অসন্তোষ। ভারত এর সেনারা তখন ততোটা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল না যতটা তাদেরকে প্রথমে নেয়া হয়েছিল।[21] অন্যান্য ব্রিটিশ বাহিনী এর মতো তারাও ধরে নিয়েছিল যুদ্ধ শেষ এবং সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য অনেক প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল এবং এতে অনেক পরিমাণ সৈন্য নিহত হয়। এর মধ্যে অনেক ইউনিট বাইরে থেকে ফিরেও আসেনি, আর যারা এসেছিল তারা অব্যাহতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছিল এবং এতে অনেক রেজিমেন্ট তাদের অনেক অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ লোক হারায়।[20] অনুরুপভাবে, ভারতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকেও অনেক ফেলনা সাথে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।  ১৯১৪ সালের পূর্ব পর্যন্ত ৬১টি রেজিমেন্ট ছিল ব্রিটিশ তত্তাবধানে।  . ততসত্তেও এর মধ্যে ১০টি( ২টি অশ্বারোহী বাহিনী আর ৮টি পদাতিক বাহিনী) কে নেয়া হয়েছিল ইউরোপ ও মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন অংশে যুদ্ধের জন্যে।  এদের স্থানে কিছু দেশরক্ষায় নিযুক্ত বাহিনী, ভাড়াটে সৈন্য দ্বারাই দেশের প্রতিরক্ষা হয়েছিল কিন্তু এর থেকেও অনেককে পরবর্তিতে পাঠানো হয় ফ্রান্সে যারা আর যুদ্ধ করতে পারছিল না তাদের পরিবর্তন হিসেবে। . চার বছর গ্যারিসনে কাজ কর্মের পর আর পরিবার ছাড়া থাকার পর অনেকেই এতে অনাসক্ত হয়ে পড়ে, এদের মধ্যে অধিকাংশই চাচ্ছিল অব্যাহতি নিয়ে ব্রিটেনে ঘরে ফিরে নিজ নিজ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবার জন্য। ভারত সম্মুখে কঠোর পরিশ্রমের অভিযানের মাধ্যমে কাররই তেমন যুদ্ধ করার কোন প্রস্তুতি কিংবা মন মানসিকতা ছিল না।

যুদ্ধের পর্যায়

দ্বন্দ্ব্ব প্রথম শুরু হয় ৩রা মে ১৯১৯ সালে যখন  আফগান বাহিনী খাইবার পাশের পশ্চিমের শেষাংশের সীমানা অতিক্রম করে এবং বাগ নামের শহরটি দখল নেয়।  অবস্থানগত কারণে বাগ শহরটি ভারত ও ব্রিটিশ দের নিকট অনেক গুরুপ্তপূর্ণ ছিল কারণ এটি লানডি কোটাল এর পানি সরবরাহ করতো। আর লানডি কোটালে ব্রিটিশ ভারতীয় দুইটি কোম্পানি সেনা বাহিনী এর গ্যারিসন করেছিল।  যদিও এই আক্রমণকে ছোট একটি সিমানা লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হয় প্রকৃতভাবে এটা ছিলা আক্রমণের এক বিশাল পরিকল্পনা। কারণ যেটাই ছিল অনুসুচি এর বাইরেই আক্রমণ শুরু হয়েছিল, কারণ আমানুল্লাহ এর পরিকল্পনা ছিল ৮ই মে তে পেশাওয়ার দখল নেয়ার। এর মাধ্যমে উত্তর পশ্চিম সীমানার ব্রিটিশ চিফ কমিশনার- স্যার জর্জ রুজ কেপ্পেল আগেই সতর্ক হয়ে যান, যিনি পুরো পরিকল্পনাই ধরতে পেরেছিলেন।  এবং তিনি ভাইসরয়, লর্ড কেল্মসফোর্ড কে বোঝাতে সক্ষম হোন যে বাগ এর আক্রমণের সাড়া আগেই দেয়া লাগবে যাতে করে আক্রমণ পেশাওয়ার পর্যন্ত এগুতে না পারে।

তথ্যসূত্র

  1. Lansford 2017, পৃ. 47।
  2. Cavanna 2015, পৃ. xviii।
  3. "Third Anglo-Afghan War 1919"। OnWar.com। ৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১০
  4. Molesworth 1962, পৃ. vii
  5. Barthorp 2002, পৃ. 27 & 64
  6. Wilkinson-Latham 1998, পৃ. 4 & 13
  7. Molesworth 1962, পৃ. 20
  8. টেমপ্লেট:Harnvb
  9. টেমপ্লেট:Harnvb
  10. Molesworth 1962, পৃ. 22
  11. টেমপ্লেট:Harnvb
  12. Barthorp 2002, পৃ. 150–151
  13. Collett 2007
  14. টেমপ্লেট:Harnvb
  15. টেমপ্লেট:Harnvb
  16. টেমপ্লেট:Harnvb
  17. Hughes 1992, পৃ. 125
  18. Barthorp 2002, পৃ. 152
  19. Hughes 1992, পৃ. 126
  20. [[#CITEREF|]]
  21. Putkowski, Julian। "Mutiny in India in 1919"Vol. 8 No. 2। Revolutionary History। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১৩
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.