তুঙ্গ নদী
তুঙ্গ নদী (কন্নড়: ತುಂಗ ನದಿ) দক্ষিণ ভারতে কর্ণাটক রাজ্যের একটি নদী ।এই নদীর জন্ম হয় মধ্যে পশ্চিম ঘাটে একটি পাহাড় 'বরাহ পর্বতে',যার অন্য নাম গঙ্গামূলা।এখান থেকে কর্ণাটক-এর দুটি জেলা চিকমাগালুর ও শিমোগার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। এটা ১৪৭ কিমি দীর্ঘ এবং শিমোগা শহরের কাছে কুডলির নামক একটি ছোট শহরে ভদ্রা নদীর সাথে সংযুক্ত হয়ে তুঙ্গভদ্রা নদী সৃষ্টি করে। তুঙ্গভদ্রা পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে অবশেষে কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ সীমান্তের কাছে কৃষ্ণা নদীতে মিলিত হয়।
তুঙ্গ নদী | |
তীর্থহাল্লিতে ছিব্বাগুড্ডের কাছে তুঙ্গভদ্রা নদী | |
দেশ | ভারত |
---|---|
রাজ্য | কর্ণাটক |
উৎস | গঙ্গামূলা |
- অবস্থান | চিকমাগালুর জেলা, কর্ণাটক, ভারত |
মোহনা | তুঙ্গভদ্রা নদী |
- অবস্থান | কুডলি, ভদ্রাবতী, কর্ণাটক, ভারত |
দৈর্ঘ্য | ১৪৭ কিলোমিটার (৯১ মাইল) প্রায় |
তুঙ্গ নদী জলের মিষ্টতার জন্যে বিখ্যাত এবং সাহিত্যে একে বিশ্বের সবথকে সুমিষ্ট নদী বলে বর্ণনা করা হয়। প্রচলিত কথায় বলা হয় "তুঙ্গ পান, গঙ্গা স্নান" অর্থাৎ গঙ্গার জলে স্নান করা উচিত এবং তুঙ্গর জল পান করা উচিত। তুঙ্গ নদীর উপরে গাজানুর এর কাছে একটি বাঁধ রয়েছে এবং একটি বৃহৎ বাঁধ নির্মিত হয়েছে হসপেটে তুঙ্গভদ্রা নদীর উপরে।
ধর্মীয় কেন্দ্র এবং পৌরাণিক কাহিনী
তুঙ্গর তীরে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ মন্দির রয়েছে, তাদের মধ্যে সরবাধিক উল্লেখযোগ্য আদি শঙ্করাচার্য্য দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সারদাপীঠ এবং বিদ্যাশঙ্কর মন্দির। আদি শঙ্করাচার্য্য শৃঙ্গেরিতে তার জীবদ্দশায় ১২ থেকে ২২ বছর পর্যন্ত কাটিয়েছেন। তিনি ৮ম শতকে এখানে অদ্বৈত বেদান্ত মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। মহান আচার্য কীভাবে এই স্থানের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন, তার বর্ণনাটি আচার্যের দ্বারা পবিত্র শারদম্বার মন্দিরের কাছাকাছি পাথরে লিখিত রয়েছে। চিত্রাঙ্কনটিতে দেখা যায় একটি বিষধর সাপ সূর্যের ঝলসানো তাপ থেকে একটি ব্যাঙকে বাঁচানোর জন্যে ছায়া প্রদান করছে। এই দৃশ্য দেখে তার মনে হয়, তুঙ্গর শান্ত পরিবেশে প্রাকৃতিক শত্রুরাও বন্ধু হয়ে উঠতে পারে, তাই এই স্থানই মন্দির স্থাপনার জন্যে আদর্শ। অভয় দানের এই ঐতিহ্য, ভয় থেকে স্বাধীনতা, এখানে আজও প্রবল ভাবে রক্ষিত; তাই দেখা যায় তুঙ্গর বিশাল মাছগুলি কুডলির ঘাটে সাধারণ ভক্তদের হাত থেকে নির্ভয়ে খাবার নিয়ে যায়। [1]
পুরাণ মতে তুঙ্গ অত্যন্ত পবিত্র নদী। একটি হিন্দু কিংবদন্তি অনুযায়ী, ঋষি পরশুরাম তার পিতা মহান ঋষি জমদগ্নির আদেশে মাতা রেণুকার শিরশ্ছেদ করার পরে, বিভিন্ন নদীতে ডুবিয়ে রক্তের দাগ ধৌত করার চেষ্টা করেন কিন্ত কোন ভাবেই রক্তের শেষ লেগে থাকা চিহ্ন ধোয়া সম্ভব হয় না; অবশেষে তীর্থহালির নিকটবর্তী তুঙ্গ নদীতে তার কুঠারটি ধোয়ার পরে সেটি রক্তের দাগ মুক্ত হয়। এই কারণে তীর্থহাল্লি রামতীর্থ নামেও পরিচিত। এবং লোকবিশ্বাস অনুযায়ী এই স্থানে তুঙ্গ নদীতে অবগাহন সমস্ত পাপনাশী।[2]
গ্যালারি
- নদীতীরে শৃঙ্গেরি তে একটি অলঙ্করণ যেখানে একটি সাপ একটি ব্যাঙ কে রক্ষা করছে
- তুঙ্গ নদীর তীরে মন্দির
- নদীর উপরে নির্মিত সেতু
- হরিহরপুরা থেকে নদীর দৃশ্য
- পূর্ণ যৌবনা তুঙ্গ
তথ্যসূত্র
টেমপ্লেট:পশ্চিমঘাট