তারাক্ষ্যা কালীমন্দির, সুশুনিয়া
তারাক্ষ্যা কালীমন্দির পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর ব্লকের নিকটে সুশুনিয়া বা তারাশুশুনা নামক গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন কালী মন্দির।
তারাক্ষ্যা কালীমন্দির | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | পূর্ব বর্ধমান জেলা |
অবস্থান | |
অবস্থান | সুশুনিয়া/তারাশুশুনা, মন্তেশ্বর |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
দেশ | ভারত |
স্থাপত্য | |
ধরন | গৌড়ীয় স্থাপত্য |
ইতিহাস
বাঘাসন পঞ্চায়েতের সুশুনিয়া বা তারাশুশুনা গ্রামের প্রায় চারশো বছর ধরে তারাক্ষ্যা মাতার পুজোর চল গ্রামে। প্রথমে মাটির মন্দিরেই দেবীর আরাধনা হত। পরে কংক্রিটের মন্দির তৈরি করা হয়।
এলাকার জমিদার দেবেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে পুজোর রমরমা শুরু হয়। বর্ধমানের রাজা তেজচন্দ্রের আমলে পুজোর জন্য ২৫২ বিঘা জমি দেওয়া হয়েছিল। তবে এখন সে জমি নেই। মন্দিরের ভিতর
রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। জনশ্রুতি, ওই আসনে বসেই তারা নামে এক সাধক প্রথম দেবীর পুজো শুরু করেছিলেন। বাসিন্দারা জানান, সারা বছর গ্রামের মুখোপাধ্যায় ও চট্টোপাধ্যায় পরিবারের তত্ত্বাবধানে দেবীর পুজো হয়। জৈষ্ঠ্য মাসের চম্পক চতুর্দশীতে হয় মহাপুজো।
বিগ্রহ
সুশুনিয়া গ্রামে অবস্থিত তারাক্ষ্যা দীঘি থেকে প্রাপ্ত কালী মূর্তি তারাক্ষ্যা কালী নামে খ্যাত। কালো রঙের চতুর্ভূজা ত্রিনয়না মূর্তিটি কষ্টিপাথরের তৈরী। পদ্মের ওপর অধিষ্ঠিত হয়ে দেবীমূর্তি শিবকে আলিঙ্গনরত অবস্থায় বামহাত দিয়ে শিবকে স্তন্যপান করাচ্ছেন। মূর্তির উর্দ্ধাংশ নিরাবরণ ও নিম্নাংশে লাল পট্টবস্ত্র রয়েছে। দেবীর ডানদিকে নিচের হাতে গদা ধরা রয়েছে। দুইপাশে জয়া বিজয়ার মূর্তি বর্তমান।[1]:১০০
পূজা
পূজার আগের দিন হয় দেবীর অধিবাস। প্রতি বছর অধিবাসের সন্ধ্যায় পূজায় হাজির থাকতে হয় স্থানীয় হোসেনপুর গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যদের। ওই পরিবারের এক সদস্য এক সময়ে বর্ধমানের রাজপরিবারের সভাপণ্ডিত ছিলেন। মূলমন্দিরের খানিক দূরে রয়েছে একটি জলাশয়। তারিক্ষা দিঘি নামেই পরিচিত সেটি। রেওয়াজ মেনে পুজোর দিন ওই দিঘির পাড়ে এক মন্দিরে আনা হয় দেবীকে। সারাদিন চলে পূজা। পরে দেবী ফিরে আসেন মূল মন্দিরে। পূজোর দ্বিতীয় দিন দেবীকে চতূর্দোলায় চাপিয়ে ঘোরানো হয় গোটা গ্রাম। গ্রামবাসীরা বাড়ির সামনে তৈরি করে বেদি। শুধু তারাশুশুনা গ্রাম নয়, প্রতিবার নিয়ম করে পাশাপাশি সিংহলি, হাটগাছা, বাঘাসন, কালুই, কুলি, ঘোড়াডাঙ্গা, হোসেনপুর, নাড়াগোয়ালিয়া গ্রামের কুমার সম্প্রদায়ের বিশেষ পুজো আসে।
তথ্যসূত্র
- তিন তীর্থে, শিবশঙ্কর ভারতী, সাহিত্যম্, ১৮বি, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট, কলকাতা-৭৩, প্রথম প্রকাশ- ১৮ই জানুয়ারী, ২০০১