তাওযীহুল কুরআন

তাওযীহুল কুরআন (উর্দু: آسان ترجمہ قرآن، توضیح القران, প্রতিবর্ণী. তাওযীহুল কুরআন, আসান তরজমায়ে কুরআন নামে উর্দুতে অধিক পরিচিত) দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুফাসসির মুহাম্মদ তাকি উসমানির উর্দু ভাষায় রচিত একটি আধুনিক ও জনপ্রিয় তাফসির গ্রন্থ।[3] ২০০৮ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। লেখক প্রায় সাড়ে তিন বছর সময় নিয়ে এটা রচনা করেছেন, যার বেশিরভাগ লিখেছেন ভ্রমণকালে। লেখকের পরিচিতি ও পাণ্ডিত্যের খ্যাতির কারণে এটি অল্প সময়ে বিপুল পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে। অনেক ভাষায় এর অনুবাদ সম্পন্ন হয়েছে। লেখকের দাবি অনুসারে, গ্রন্থটির রচনাশৈলী আক্ষরিকও নয়, আবার খুুুব স্বাধীনও নয়। বিভিন্ন সংস্করণের পাশাপাশি এটি পিডিএফ, মোবাইল অ্যাপ, অডিও আকারেও উপলব্ধ।

তাওযীহুল কুরআন
বাংলা অনুবাদের প্রচ্ছদ
লেখকমুহাম্মদ তাকি উসমানি
মূল শিরোনামউর্দু: آسان ترجمہ قرآن, توضیح القران, প্রতিবর্ণী. তাওযীহুল কুরআন, আসান তরজমায়ে কুরআন
অনুবাদকআ.ব.ম. সাইফুল ইসলাম
প্রচ্ছদ শিল্পীইবনে মুমতায (বাংলা)
দেশপাকিস্তান
ভাষাউর্দু (মূল)
মুক্তির সংখ্যা
৩ খণ্ড
বিষয়তাফসীর[1]
প্রকাশিত
  • ২০০৮ (উর্দু)
  • ২০১০ (বাংলা)
প্রকাশকমাকতুবাতে মাআরিফুল কুরআন (উর্দু), মাকতাবাতুল আশরাফ (বাংলা)
মিডিয়া ধরন
পৃষ্ঠাসংখ্যা
  • ১৯৭৫ (উর্দু)
  • ১৯২১ (বাংলা)
আইএসবিএন৯৭৮৯৬৯৯৩০৬০০৬
২৯৭.১২২
ওয়েবসাইটতাওযীহুল কুরআন
মূল উর্দু সংস্করণ

ইতিহাস

লেখক ২০০৮ সালে এই গ্রন্থটি রচনার কাজ সমাপ্ত করেন। রচনার কাজ শুরুর পর শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন বছর, যার বেশিরভাগ সময় তিনি ভ্রমণরত অবস্থায় কাজ করেছেন।[4] গ্রন্থটি বঙ্গানুবাদের কাজে তত্ত্বাবধান করেছেন লেখকের শীর্ষস্থানীয় শিষ্যদের অন্যতম মুহাম্মদ আব্দুল মালেক। তার অনুরোধে এটির পূর্ণাঙ্গ বঙ্গানুবাদ করেন আ.ব.ম. সাইফুল ইসলাম। মাকতাবাতুল আশরাফ থেকে ২০১০ সালের এপ্রিলে এর ১ম খণ্ড, অক্টোবরে ২য় খণ্ড এবং ২০১১ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ খণ্ড প্রকাশিত হয়।[5] ভারতের ফরিদ বুক ডিপো থেকে এর হিন্দি অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

প্রেক্ষাপট

গ্রন্থটি রচনার কারণ উল্লেখ করে লেখক বলেছেন,

বৈশিষ্ট্য

এ অনুবাদটি সম্পূর্ণ আক্ষরিক নয়, আবার এমন স্বাধীনও নয় যে, কুরআনের শব্দমালা থেকে দূরে সরে গেছে। সহজ ও সুস্পষ্টকরণের প্রতি লক্ষ্য রাখার সাথে সাথে পূর্ণ চেষ্টা করা হয়েছে যাতে অনুবাদ কুরআনের শব্দশৈলীর কাছাকাছি থাকে। শব্দের ভেতর যেখানে একাধিক তাফসীরের অবকাশ আছে, সেখানে সেই অবকাশ যাতে অনুবাদের ভেতরও থাকে সে দিকেও লক্ষ রাখা হয়েছে। আর যেখানে তা সম্ভব হয়নি, সেখানে সালাফ তথা পূর্বসূরীদের ব্যাখ্যার আলােকে যে তাফসীর লেখকের নিকট সর্বাপেক্ষা সঠিক মনে হয়েছে, সেই অনুযায়ী অনুবাদ করা হয়েছে। ব্যাখ্যামূলক টীকায় কেবল এই দিকে লক্ষ রাখা হয়েছে যে, অনুবাদ পড়ার সময় আয়াতের মর্ম অনুধাবনে পাঠক কোথাও সমস্যার সম্মুখীন হলে যাতে টীকার সাহায্যে তার নিরসন করতে পারে। দীর্ঘ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও তাত্ত্বিক আলােচনা-পর্যালােচনার অবতারণা করা হয়নি। সংক্ষিপ্ত টীকাসমূহে ছাঁকা কথাও পরিবেশনের চেষ্টা করা হয়েছে।[6][7]

গঠন

মূল গ্রন্থের শুরুতে লেখক গ্রন্থ নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত ভূমিকা লিখেছেন। তারপর ওহী কী ও কেন?’ শিরোনামে একটি আলোচনার অবতারণা করা হয়েছে। যার আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে রয়েছে: ওহীর প্রয়োজনীয়তা, ওহী নাযিলের পদ্ধতি, কুরআন নাযিলের তারিখ, সর্বপ্রথম আয়াত, মক্কি ও মাদানি আয়াত, পর্যায়ক্রমিক অবতরণ, শানে নুযূল, কুরআন সংরক্ষণের ইতিহাস, পারা, রুকু, ওয়াকফ, তাফসীর শাস্ত্র ইত্যাদি। প্রত্যেক সূরার শুরুতে “পরিচিতি” শিরোনামে সূরাটি নিয়ে কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা রয়েছে। তারপর পর্যায়ক্রমে লেখক প্রথমে কুরআনের আয়াতের অনুবাদ করেছেন। তারপর অনূদিত আয়াতের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা সংযুক্ত করা হয়েছে। এই রীতি শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করা হয়েছে। বাংলা অনুবাদের প্রথম খণ্ডে মুহাম্মদ তাকি উসমানির শীর্ষস্থানীয় শিষ্যদের অন্যতম মুহাম্মদ আব্দুল মালেকের কুরআন নিয়ে একটি ভূমিকা আছে, তৃতীয় খণ্ডেও তার একটি ভূমিকা আছে যার শিরোনাম “কুরআন বুঝার চেষ্টা: কিছু নিয়ম-কানুন”। খণ্ড অনুযায়ী আলোচিত সূরা সমূহ:

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

উদ্ধৃতি

  1. লোকমান হাকীম, মাওলানা (২০১৪)। জাস্টিস মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী জীবন ও কর্ম। বাংলাবাজার, ঢাকা: মাকতাবাতুল হেরা। পৃষ্ঠা ১০০। আইএসবিএন 9789849112310।
  2. দাউদ, মুহাম্মদ; শাহ, মুহতাররম; জাফর আলী শাহ, সৈয়দ (২০১৬)। "আন্ডারস্ট্যান্ড কুরআন: এন ইন্টারেক্টিভ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন"পেশওয়ার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  3. মুহাম্মদ ইশতিয়াক, ডক্টর (২ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "A Review On The Contribution Of Mufti TaqiUsmani In The Pool Of Islamic Sciences As An Exgete In Context Of His Tafseer Tawzih Ul Quran"ইসলামিক রিসার্চ ইনডেক্স। আল্লামা ইকবাল উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। (২৩): ৩—১৭। ২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২২
  4. নাওয়ী, জাহারুদিন; মো. মারজুকি, জুনাইদহ (২০১৭)। "মুফতি মুহাম্মদ তাকী উসমানী এবং কুরআন গবেষণায় তাঁর পাণ্ডিতের অবদান"আল-ইরশাদ: ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়সমূহের জার্নাল (ইংরেজি ভাষায়)। (১): ১৭—১৮।
  5. তাকি উসমানি, মুহাম্মদ (২০১০)। তাওযীহুল কুরআন। সাইফুল ইসলাম, আ.ব.ম. কর্তৃক অনূদিত। পাকিস্তান; বাংলাদেশ: মাকতাবায়ে মাআরিফুল কুরআন; মাকতাবাতুল আশরাফ। আইএসবিএন 978-9699306068। এএসআইএন B08DL46F8F
  6. আব্দুল মালেক, মুহাম্মদ (২০১৬)। নির্বাচিত প্রবন্ধ-২। ৩০/১২, পল্লবী, ঢাকা-১২১৬: মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া। পৃষ্ঠা ৩৪৯—৩৬৯।
  7. জিল হুমা (জানুয়ারি–জুন ২০১৯)। "মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানি কি মারুফ তাসনিফাত ও তালুফাত কা তারুফি জায়েজাহ" [মুফতি মুহাম্মদ তাকী উসমানীর শীর্ষস্থানীয় বই ও রচনাবলীর ব্যাখ্যা] (১): ১৯৮—১৯৯। ২৮ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০২১

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.