তাউস (ময়ুরী বীণা)

তাউস, মূলত জানা যায় ময়ুরী বীণা নামে,[1] হল উত্তর ভারতের একটি বাদ্যযন্ত্র, যেটি ধনুক দ্বারা বাজানো হয়। এটি উত্তর ভারতে ব্যবহৃত ময়ূরী নামক এক প্রকার বীণা। এখানে ময়ূরী আকৃতির একটি অনুরণনক ব্যবহার করা হয়, এবং যন্ত্রটির গলার অংশে (নেক) ধনুকের ছিলা অংশটি দিয়ে বাজানো হয়।[2]

তাউস বা ময়ুরী বীণা
তাউস বা ময়ুরী বীণা
তথ্যসমূহ
অন্য নামময়ুরী বীণা
শ্রেণিবিভাগ ধনুক দ্বারা বাজানো তন্তুবাদ্য
সম্পর্কিত যন্ত্র

বর্ণনা

এর দেহটি ময়ূরের মত এবং বাদ্যের গলার অংশে ২০টি ভারী ধাতব পর্দা রয়েছে। গলা অংশটি একটি দীর্ঘ কাঠের আলনা। সেখানে ২৮ থেকে ৩০টি তন্তু আছে এবং একটি ধনুকের সাহায্যে সেখানে বাজানো হয়।

বাদ্যের ওপরের অংশে চারটি প্রধান তন্তু রয়েছে। এই প্রধান তন্তুগুলির জন্য চারটি গোঁজ রয়েছে যেগুলি কাঠ বা স্টিল দ্বারা তৈরি। প্রধান তন্তুগুলি সাধারণত শাদজম, মধ্যমম এবং পঞ্চমম পর্দায় বাঁধা থাকে। প্রধান তন্তুগুলি ছাড়াও, প্রায় ৩০টি অনুরণক তন্তু রয়েছে যেগুলি যন্ত্রের পাশের অংশে অবস্থিত গোঁজগুলির সাথে সংযুক্ত।[3]

গুরবানী কীর্তন / শাবাদ কীর্তনের একটি অংশ হল তাউস, সেখানে বাদক বাদ্যযন্ত্রটি বাজানোর সময় স্তোত্র উচ্চারণ করেন। ময়ুরী বীণার উল্লেখ পাওয়া যায় মালবিকাগ্নিমিত্র পুস্তকে,[4] যেটি রচনা করেছিলেন সংস্কৃত কবি কালিদাস, খ্রিস্টীয় ৪র্থ থেকে ৫ম শতাব্দীর মধ্যে।[5] ফার্সি তাউস শব্দটির অনুবাদ হল সংস্কৃত ভাষায় ময়ুর[6]

মনে করা হয় যে, শিখদের ষষ্ঠ গুরু, গুরু হরগোবিন্দ, তাউস বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে শিখদের পরিচয় করিয়েছিলেন।

দিলরুবা এবং এসরাজের সাথে সম্পর্ক

তাউস থেকে দিলরুবা বাদ্যযন্ত্রটি উদ্ভূত এবং এটি দশম শিখ গুরু, গুরু গোবিন্দ সিংয়ের সৃষ্টি[7] দিলরুবা হল তাউসের একটি সংহত সংস্করণ, এটি তৈরি করা হয়েছিল যাতে শিখ সেনাবাহিনী ঘোড়ার পিঠে চড়ে যাবার সময় এটি বহন করতে পারে। এস্রাজ হল দিলরুবার একটি আধুনিক রূপ।

তথ্যসূত্র

  1. Edgerly, Beatrice (১৯৪২)। From the Hunter's Bow: The History and Romance of Musical Instruments (ইংরেজি ভাষায়)। G.P. Putnam's Sons।
  2. Chib, Satyendra Krishen Sen (২০০৪)। Companion to North Indian Classical Music (ইংরেজি ভাষায়)। Munshiram Manoharlal Publishers। আইএসবিএন 978-81-215-1090-5।
  3. "The peacock-shaped instrument of Punjab"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২১
  4. Bhagyalekshmy, S. (১৯৯১)। Lakshanagrandhas in Music (ইংরেজি ভাষায়)। CBH Publications। আইএসবিএন 978-81-85381-13-8।
  5. "Kalidas"www.cs.colostate.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৬
  6. Kasliwal, Suneera (২০০১)। Classical Musical Instruments (ইংরেজি ভাষায়)। Rupa। আইএসবিএন 978-81-291-0425-0।
  7. Dutta, Madhumita (২০০৮)। Let's Know Music and Musical Instruments of India। Star Publications। পৃষ্ঠা 22–23। আইএসবিএন 978-1-9058-6329-7।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.