তরুণাস্থি

তরুণাস্থি (ইংরেজি: Cartilage) এক ধরনের যোজক কলা। এটি অস্থির মতো শক্ত নয়। তরুণাস্থিতে রক্তনালী থাকে না। এর কোষগুলোতে ব্যাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ করা হয়। তাই তরুণাস্থির বৃদ্ধি ও মেরামত ধীর গতিতে হয়। তরুণাস্থিতে স্নায়ুকোষও নেই। এটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ব্যাথা অনুভূত হয় না। তবে তরুণাস্থি ভেঙ্গে গিয়ে যদি টেনডনমাংসপেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে ব্যাথা অনুভূত হবে। এর কোষগুলো একক ও জোড়ায় জোড়ায় খুব ঘনভাবে স্থিতিস্থাপক মাতৃকাতে বিস্তৃত থাকে। তরুণাস্থি কোষগুলো থেকে কন্ড্রিন নামক এক ধরনের শক্ত,ঈষদচ্ছ রাসায়নিক বস্তু বের হয়। মাতৃকা কন্ড্রিন দিয়ে গঠিত, এর বর্ণ হালকা নীল। জীবিত অবস্থায় তরুণাস্থি কোষের প্রোটোপ্লাজম খুব স্বচ্ছ এবং নিউক্লিয়াসটি গোলাকার থাকে। কন্ড্রিনের মাঝে গহ্বর দেখা যায় এগুলোকে ক‍্যাপসুল বা ল‍্যাকিউন বলে। এর ভিতর কন্ড্রোব্লাস্ট এবং কন্ড্রোসাইট থাকে। সব তরুণাস্থি একটি তন্তুময় যোজক কলা নির্মিত আবরণী দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে, একে পেরিকন্ড্রিয়াম বলে। এই আবরণটি দেখতে চকচকে সাদা, তাই আমরা সাধারণত তরুণাস্থিকে সাদা, নীলাভ এবং চকচকে দেখতে পাই।

নীল রঙে আর্টিকুলার তরুণাস্থিসহ মানুষের কঙ্কাল

গঠন

কনড্রিন (ইংরেজি: chondrin তরুণাস্থির ম্যাট্রিক্স) এ কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিন নির্মিত বিভিন্ন তন্তু এবং কনড্রোসাইট (ইংরেজি: chodrocytes তরুণাস্থির কোষ) থাকে। কনড্রোসাইটের গুচ্ছকে ল্যাকুনা (ইংরেজি: lacuna) বলে। তরুণাস্থির আবরণকে পেরিকন্ড্রিয়াম (ইংরেজি: perichondium) বলে।[1]পেরিকন্ড্রিয়াম চকচকে সাদা,তাই সাধারণত তরুণাস্থিকে সাদা,নীলাভ এবং চকচকে দেখা যায়।

কাজ

তরুণাস্থি বিভিন্ন অঙ্গের চাপ ও টান প্রতিরোধ করে। অস্থিসন্ধিতে তরুণাস্থি অস্থির প্রান্তভাগকে ঘর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করে।[1]

প্রকার

ম্যাট্রিক্সের গঠন-প্রকৃতি অনুযায়ী তরুণাস্থি চার ধরনের।[1]

  1. হায়ালিন তরুণাস্থি
  2. পীত তন্তুময় তরুণাস্থি
  3. শ্বেত তন্তুময় তরুণাস্থি
  4. ক্যালসিফায়েড বা চূনময় তরুণাস্থি

তথ্যসূত্র

  1. ড. মোঃ আবদুল আলীম (২০১৭)। জীববিজ্ঞান ২য় পত্র। মুবীন পাবলিকেশনস।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.