ডেভিস কাপ

ডেভিস কাপ (ইংরেজি: Davis Cup) পুরুষদের টেনিসের প্রধান আন্তর্জাতিক দলীয় প্রতিযোগিতাবিশেষ। আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন (আইটিএফ) কর্তৃক এ প্রতিযোগিতা পরিচালিত হয়। সাংবাৎসরিকভিত্তিতে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেরা জাতীয় দলগুলো একত্রিত হয়ে একে-অপরের বিরুদ্ধে নক-আউট ভিত্তিতে খেলায় অংশগ্রহণ করে।

ডেভিস কাপ
চলতি মৌসুম বা প্রতিযোগিতা:
২০২০-২১ ডেভিস কাপ
খেলাটেনিস
প্রতিষ্ঠাকাল১৯০০ (1900)
দলের সংখ্যা১৮ (বিশ্ব গ্রুপ)
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাশিয়া (৩য় শিরোপা)
সর্বোচ্চ শিরোপা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৩২টি শিরোপা)
অফিসিয়াল ওয়েবসাইটডেভিসকাপ.কম
প্রতিষ্ঠাতাডুইট এফ. ডেভিস

১৯০০ সালে ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার খেলার মাধ্যমে এ প্রতিযোগিতার উদ্ভব ঘটে। কিন্তু ২০০৭ সাল পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বের ১৩৭টি দেশের জাতীয় দল ডেভিস কাপে অংশ নিয়েছে। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে সফলতম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এ পর্যন্ত তারা ৩২ বার চ্যাম্পিয়ন হবার পাশাপাশি ২৯ বার রানার্স-আপও হয়। এরপরেই অস্ট্রেলিয়ার স্থান। তারা ২৮ বার বিজয়ী হবার পাশাপাশি ১৯ বার রানার্স-আপ হয়। তন্মধ্যে চারবার নিউজিল্যান্ডের সাথে একত্রিত হয়ে অস্ট্রেলেশিয়া নাম ধারণ করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে রয়েছে সুইজারল্যান্ড টেনিস দল। তারা ফ্রান্সকে ২০১৪ সালের প্রতিযোগিতায় পরাভূত করে প্রথমবারের মতো শিরোপা লাভ করে।

ইতিহাস

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টেনিস দলের চার সদস্যের আগ্রহের প্রেক্ষিতে ১৮৯৯ সালে এ প্রতিযোগিতা আয়োজনের ধারণার উদ্ভব হয়। তারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হবার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত লন টেনিস সংস্থা এতে রাজী হয়। চারজন হার্ভার্ড খেলোয়াড়ের একজন ডুইট এফ. ডেভিস প্রতিযোগিতার রূপরেখা তুলে ধরেন। স্বীয় উদ্যোগে এবং নিজস্ব এক হাজার ডলারের বিনিময়ে শ্রেভ, ক্রাম্প এন্ড ল কোম্পানীর কাছ থেকে খাঁটি রৌপ্য ট্রফি খরিদ করেন।[1]

প্রথম খেলাটি ১৯০০ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন দলের মধ্যে ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন শহরের লংউড ক্রিকেট ক্লাব মাঠে ইন্টারন্যাশনাল লন টেনিস চ্যালেঞ্জ নামে অনুষ্ঠিত হয়। ঐ খেলায় ডুইট ডেভিস নিজেও অংশগ্রহণ করেন। ব্রিটিশদেরকে তাঁক লাগিয়ে প্রথম তিন খেলায় জয়ী হন তিনি। পরের বছর কোন খেলা হয়নি। ১৯০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র দল পুনরায় জয়ী হয়। ১৯০৫ সালে প্রতিযোগিতায় বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলেশিয়া অংশগ্রহণ করায় এর ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়। ১৯১৪ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড দল এ প্রতিযোগিতায় একত্রে অংশগ্রহণ করতো।

শুরুতে প্রতিযোগিতার নামকরণ করা হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল লন টেনিস চ্যালেঞ্জ নামে। কিন্তু খুব শীঘ্রই এটি ডুইট ডেভিস কর্তৃক ট্রফি প্রদানের ফলে ডেভিস কাপ হিসেবে নামাঙ্কিত করা হয়।

১৯৫০ সাল থেকে ১৯৬৭ সালের মধ্যকার সময়টুকুতে অস্ট্রেলিয়া দল প্রতিযোগিতায় একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছিল। তারা ১৮ বছরের মধ্যে ১৫ বারই কাপ জয় করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বাধিক ৩২ বার, অস্ট্রেলিয়া ২৮ বার (তন্মধ্যে অস্ট্রেলেশিয়া নাম ধারণ করে ৪ বার), গ্রেট ব্রিটেন ৯ বার (তন্মধ্যে ব্রিটিশ আইলসের সাথে ৫ বার), ফ্রান্স ৯ বার এবং সুইডেন ৭ বার বিজয়ী হয়।

১৯৭৩ সাল পর্যন্ত ডেভিস কাপে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স কিংবা অস্ট্রেলিয়া দলের মধ্যেকার যে-কোন দল জয়লাভ করলেও ১৯৭৪ সালে এসে তার বিচ্যুতি ঘটে। ১৯৭৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারত চূড়ান্ত খেলায় উন্নীত হয়। কিন্তু চূড়ান্ত খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের বর্ণবৈষম্যবাদ নীতির অভিযোগে ভারতীয় দল সেখানে খেলতে যায়নি। ফলে, দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। লক্ষ্যণীয় যে, তারপর থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা টেনিস দল আর কখনো বিজয়ী হয়নি। ১৯৭৫ সালে বিশ্ববাসী প্রথমবারের মতো আরো দু'টি উদীয়মান দেশ - সুইডেন এবং চেকোস্লোভাকিয়ার মধ্যকার চূড়ান্ত খেলা দেখতে পেল। সেখানে সুইডেনের ডেভিস কাপ দল ৩-২ ব্যবধানে চ্যাম্পিয়ন হয়।

বর্তমান কাঠামো

স্তর

বিভাগ

বৈশ্বিক গ্রুপ
১৬ দেশ

গ্রুপ ওয়ান: আমেরিকান অঞ্চল
৫ দেশ

গ্রুপ ওয়ান: ইউরো/আফ্রিকান অঞ্চল
১১ দেশ

গ্রুপ ওয়ান: এশিয়া/ওশেনিয়া অঞ্চল
৮ দেশ

গ্রুপ টু: আমেরিকান অঞ্চল
৮ দেশ

গ্রুপ টু: ইউরো/আফ্রিকান অঞ্চল
১৬ দেশ

গ্রুপ টু: এশিয়া/ওশেনিয়া অঞ্চল
৮ দেশ

গ্রুপ থ্রী: আমেরিকান অঞ্চল
৮ দেশ

গ্রুপ থ্রী: ইউরোপীয় অঞ্চল
৯ দেশ (সাময়িক)

গ্রুপ থ্রী: আফ্রিকান অঞ্চল
১২ দেশ (সাময়িক)

গ্রুপ থ্রী: এশিয়া/ওশেনিয়া অঞ্চল
৮ দেশ

গ্রুপ ফোর: আমেরিকান অঞ্চল
৫ দেশ (সাময়িক)

গ্রুপ ফোর: এশিয়া/ওশেনিয়া অঞ্চল
১০ দেশ (সাময়িক)

পরিসংখ্যান

  • ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ শিরোপা লাভ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ৭ বার, ১৯২০-১৯২৬
  • ধারাবাহিকভাবে সর্বাধিকবার চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণ: অস্ট্রেলিয়া, ২৩ বার, ১৯৪৬-১৯৬৮
  • সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়: মোহাম্মদ আখতার হোসেন, বাংলাদেশ, ১৩ বছর ৩২৬ দিন[2]#
  • বয়োজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়: গ্যাডোনফিন কোপটিগ্যান ইয়াকা, টোগো, ৫৯ বছর ১৪৭ দিন[2]

#বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একজন খেলোয়াড়কে অবশ্যই ১৪ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী হতে হবে

দলসমূহের প্রদর্শন

বিশ্ব গ্রুপ (১৯৮১–২০১৮)

দেশঅংশজয়৮১৮২৮৩৮৪৮৫৮৬৮৭৮৮৮৯৯০৯১৯২৯৩৯৪৯৫৯৬৯৭৯৮৯৯০০০১০২০৩০৪০৫০৬০৭০৮০৯১০১১১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮দেশ
 আর্জেন্টিনা২৫ F1RSFQF1R-1R--SFQF1R---------SFSFQFSFFQFFQFSFFSFSF1RSFW1R- আর্জেন্টিনা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. John Grasso (সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Davis Cup"Historical Dictionary of Tennis। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 79। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১১
  2. http://www.daviscup.com/en/history/records.aspx

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.