ডুগং
ডুগং (বৈজ্ঞানিক নাম: Dugong dugon) বা সমুদ্রধেনু হল প্রায় বিলুপ্তপ্রায় একটি সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী। মালয় ভাষায় এর নামের অর্থ হল সমুদ্রের ভদ্রমহিলা[2] এবং এর আরেক আঞ্চলিক নাম "সমুদ্রের গাভী (বা ধেনু)"। এদের দেখা যায় ভারত মহাসাগর অঞ্চল থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম অংশ পর্যন্ত অঞ্চলে। এরা শাকাশী এবং সারা জীবন সমুদ্রেই অতিবাহিত করে।
ডুগং Dugong dugon | |
---|---|
সমুদ্রধেনু | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | স্তন্যপায়ী |
বর্গ: | সিরেনিয়া |
পরিবার: | ডুগঙ্গিডি গ্রে, ১৮২১ |
উপপরিবার: | ডুগঙ্গিনি সিম্পসন, ১৯৩২ |
গণ: | ডুগং Lacépède, 1799 |
প্রজাতি: | D. dugon |
দ্বিপদী নাম | |
Dugong dugon (Müller, 1776) | |
ডুগং এর বিস্তার |
খাদ্য ও বাসস্থান
অন্যান্য সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী–র থেকে ডুগং অনেক বেশি সাদৃশ্য দেখায় স্থলচর প্রাণী হাতির সঙ্গে। প্রাপ্তবয়স্ক ডুগং ২.৫-৩.৫ মি. লম্বা হয় এবং ওজন হয় ২৩০-৪২০ কেজি। যদিও এরা নিঃসঙ্গ থাকতেই ভালবাসে, কিন্তু অনেকসময় এদের জোড়ায় অথবা ৩ থেকে ৬ জনের দলে বিভক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এদের প্রধান খাবার সমুদ্রের ঘাস। এরা দিনে ২৫-৩০ কেজি সামুদ্রিক ঘাস খেতে পারে। এদের গর্ভকালীন সময় হল ১২-১৪ মাস। স্ত্রী ডুগং এর দু’বার প্রসবের মধ্যে ব্যবধান থাকে ২.৫ থেকে ৭ বছর। এরা সাধারণত ৭০ বছর অবধি বাঁচে। একটু উষ্ণ জলে এরা বাস করে। প্রায় ৩৭ টি দেশের জলভাগে ডুগং বাস করে। সবথেকে বেশি ডুগং থাকে অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রে, মান্নার উপসাগর এবং ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে অবস্থিত পক প্রণালীতেও এরা বাস করে।[3]
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যার প্রধান কারণ হল এদের বাসস্থান নষ্ট হয়ে যাওয়া। অত্যধিক নৌকো চলাচল, কৃষিক্ষেত্র থেকে বিষাক্ত কীটনাশক সমুদ্রের জলে মেশা, নাগরিক জীবনের বর্জ্য দ্বারা সমুদ্রের দূষণ, জাহাজ থেকে তেল পড়া, এবং সামুদ্রিক ঘাস অর্থনৈতিক কারণে অত্যধিক সংগ্রহ করে নেওয়া, এইসব কারণে ডুগং–রা অত্যন্ত সংকটে পড়ছে।[4] এ ব্যাপারে উপগ্রহের সাহায্যে এই ঘাসের উৎসস্থল গুলি চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে।
ভারত মহাসাগর, আন্দামান ও নিকোবর, শ্রীলঙ্কার উপকূল ইত্যাদি অঞ্চলে অত্যধিক মাছ ধরাও এদের পক্ষে ক্ষতিকর হচ্ছে। কচ্ছ উপসাগরে ডুগং–এর তেল নৌকা সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়। এদের মাংসেরও ওষধি গুণ আছে বলে বিশ্বাস। এদের জন্মহার কম হওয়া এদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার আরেকটি কারণ। ডুগং-রা হলো মানুষের মতোই এক স্তন্যপায়ী জীব৷ বাচ্চা ডুগং-রা প্রায় এক বছর ধরে মায়ের দুধ খায়৷ অথচ ডুগং-দের বাচ্চা হয় প্রতি সাত বছর অন্তর অন্তর৷ যে কারণে এক একটি বাচ্চা এত মূল্যবান!
চিত্রশালা
তথ্যসূত্র
- Marsh, H. (2008). Dugong dugon. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on 29 December 2008.
- "ডুগং"। anandamela। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫।
- "'সি কাউ' ডুগং"। সব খবর২৪। জুন ২৪, ২০১৫।
- "'সি কাউ', মানাটি, ডুগং"। ডিডাব্লিউ। 23.06.2015। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)