ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ

ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্রঋণ ভিত্তিক এনজিও। ১৯৮০ সালে অশোক ফেলো, প্রফেসর ডঃ হোসনে আরা বেগম বাংলাদেশের বগুড়ায় টিএমএসএস প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি নারী ভিত্তিক বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্দেশ্যে কর্মরত।[2] টিএমএসএস বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে সেবার মান উন্নত ও সুলভ্য করার জন্য এনসিসি ব্যাংক লিমিটেডসহ[3] বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কর্মরত।

ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৮০
ধরনঅলাভজনক
অবস্থান
  • ঠেঙ্গামারা, গোকুল, বগুড়া-৫৮০০
অবস্থানসমূহ
  • টিএমএসএস ভবন, ৬৩১/৫ পশ্চিম কাজিপাড়া, মিরপুর-১০, ঢাকা-১২১৬
পরিষেবাক্ষুদ্রঋণ
শিক্ষা
স্বাস্থ্য
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কার্যক্রম
পরিবেশ রক্ষা কার্যক্রম
সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম
অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রম
মূল ব্যক্তিত্ব
প্রফেসর ডঃ হোসনে আরা বেগম, প্রতিষ্ঠাতা
আয়
১৯৬,৬৩,৯০,৪০৭ টাকা (২০১১) ($২,৫৩,৪১,১৪৮ মার্কিন ডলার)
ব্যয়১৮১,২১,৭৭,৩১৬ টাকা (২০১১) ($২,৩৩,৫৩,৭৮২ মার্কিন ডলার)
কর্মী সংখ্যা
৩৬,০০০+ (২০২২)[1]
ওয়েবসাইটwww.tmss-bd.org

পটভূমি

১৯৬৪ সালে বগুড়া জেলার ঠেঙ্গামারা গ্রামের ফাতেমা বেওয়া এবং জোমেলা বেওয়া নামক দুজন ভিক্ষুকের নেতৃত্বে একদল ভিক্ষুক ভিক্ষুকদের একটি মহিলা দল তৈরি করে। ফাতেমা বেওয়া ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে আশপাশের এলাকার ভিক্ষুকদের সংগঠিত করে তাদেরকে নিয়ে সারাদিন বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংগৃহীত ভিক্ষা থেকে এক মুঠো করে চাল জমা করা আরম্ভ করেন। জমাকৃত চাল থেকে বিক্রয়লব্ধ অর্থ তাদের সঞ্চয় তহবিলে জমা করতে থাকে। সঞ্চয় সংগ্রহের জন্য তারা ১০ এবং ২০ জনের একটি করে দল গঠন করেন। একসময় তাদের কার্যক্রমের খবর অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতার পর দেশের ৬টি গ্রামে এ ধরনের ১৪টি মহিলা দল গঠিত হয়।

শুরুর দিকে তারা কোনো একজন বিশ্বস্ত লোকের কাছে তাদের সংগ্রহ সঞ্চিত রাখতো। পরবর্তিতে হোসনে আরা বেগমের মতো একজন নেতা খুঁজে পান। তার নেতৃত্বে এটি সাংগঠনিক রূপ পায় এবং ১৯৮০ সালে এর নামকরণ করা হয় ‘ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ’। সংগঠনটি পরিচালনার জন্য ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তখন এর সাধারণ সদস্য ছিল ২২৬ জন। পর্যায়ক্রমে এটি দরিদ্র ও দুস্থ নারীদের কল্যাণে নিবেদিত সংগঠন হিসেবে নিবন্ধন হয় এবং অতি অল্পসময়ের মধ্যে এটি দরিদ্র মহিলাদের অন্যতম বৃহত্তম এনজিওতে পরিণত হয়।[4]

কার্যক্রম

টিএমএসএস প্রশিক্ষণ, ক্ষমতায়ন, প্রতিষ্ঠান সংগঠন, মানব সম্পদ উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, উদ্যোক্তা উন্নয়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, লিঙ্গ সম্পর্ক উন্নয়ন, কৃষি, মৎস্য ও বনায়ন, দরিদ্রদের স্বার্থে গণতন্ত্র সংহতকরণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং পল্লী উন্নয়নের মতো বহুবিধ কর্মসূচির সাথে যুক্ত।[5] টিএমএসএস হস্তশিল্প, টিএমএসএস প্রিন্টিং প্রেস, টিএমএসএস এগ্রো বেইজড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, টিএমএসএস ডেইরি ফার্ম, টিএমএসএস ডোমেস্টিক এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি, টিএমএসএস সিকিউরিটি এজেন্সি লিমিটেড, টিএমএসএস মম-ইন বিনোদন পার্ক, টিএমএসএস ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেড, টিএমএসএস ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম লিমিটেডের মতো বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ এবং সহোদর উদ্যোগগুলি পরিচালনা করে।[6] বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ৪০৪ টি গ্রামে এর কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর বর্তমান কর্মী সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার।[1]

সমালোচনা

২০১৯ সালে তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের বিরুদ্ধে করতোয়া নদী দখল ও দূষণের অভিযোগ উঠেছিল।[7][8]

তথ্যসূত্র

  1. "At a Glance" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮
  2. "Women in all Spheres to be Empowered: CA"The New Nation। ২০০৭-১২-১০। ২০১১-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৮
  3. "Move to send Remittance to Remote Areas"The Daily Star। ২০০৮-০২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৮
  4. "ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮
  5. "Social Development" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮
  6. "Social Enterprise" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮
  7. "দখলদারদের কবলে পড়ে করতোয়া 'শত নদী'"টিবিএস নিউজ। ২০১৯-১২-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮
  8. হাবিব, পঞ্চায়েত। "ঠেঙ্গামারা মম ইন পার্ক পাউবোর জমিতে"ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৮

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.