টুয়েন্টি২০

টুয়েন্টি২০ বা টি২০ ক্রিকেট খেলার সংক্ষিপ্ততম সংস্করণ হিসেবে বিবেচিত। ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডে আন্তঃকাউন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এর শুভসূচনা ঘটে।

এ খেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্রিকেট খেলাকে আরো বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা। পাশাপাশি মাঠে দর্শকদেরকে কাছে টেনে আনা কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় দর্শকদেরকে নির্মল আনন্দ উপহার দেয়া। বর্তমানে এ ধরনের ক্রিকেট খেলা বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড সংক্ষিপ্ততম সংস্করণ হিসেবে টি২০ খেলার ধরনকে শুরুতে গ্রহণ করেনি।

ক্রিকেট বিশ্বে খেলাটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ট্যুরে কমপক্ষে একটি টি২০ খেলার অন্তর্ভুক্তি থাকে। সকল টেস্ট ক্রিকেট খেলার অধিকারী দেশগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতায় টি২০ খেলার ব্যবস্থা রেখেছে।

বিবরণ

টি২০ খেলার ধরন একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অনুরূপ যাতে প্রত্যেক খেলায় দু'টি দল অংশগ্রহণ করে। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সাথে টি২০ ক্রিকেটর মূল পার্থক্য হলো একটি দল সর্বোচ্চ ২০ ওভার পর্যন্ত তাদের ইনিংসে ব্যাটিং করতে পারবে। সচরাচর টি২০ খেলা সম্পন্ন হতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয়িত হয়। অর্থাৎ, প্রত্যেক দল ১০০ মিনিট সময়ের মধ্যে তাদের ইনিংস শেষ করবে। মধ্যবর্তী সময়কাল অর্থাৎ বিরতির জন্য ১০-২০ মিনিট সময় বরাদ্দ রয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে অন্যান্য দলগত ক্রীড়ার সাথে টি২০ ক্রিকেট খেলার সামঞ্জস্যতা নিয়ে আসা হয়েছে।

সনাতনী ধারায় ড্রেসিং রুম থেকে ব্যাটসম্যানদের মাঠে প্রবেশ কিংবা প্রস্থান করলেও সংক্ষিপ্ত ঘরাণার এ খেলায় দ্রুতলয়ে খেলার উদ্দেশ্যে মাঠের ধারে চেয়ারের সাঁরি দিয়ে নির্মিত বেঞ্চ থেকে আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ব্যবস্থা ফুটবলের টেকনিক্যাল এরিযা এবং বেসবল খেলার ডাগআউটের অনুরূপ হিসেবে স্বীকৃত।

আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বা আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ

আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ টুয়েন্টি২০ পদ্ধতির আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতা হিসেবে পরিচিত। প্রতিযোগিতাটি ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি কর্তৃক পরিচালিত হয়। প্রতিযোগিতায় ১২ দলের অংশগ্রহণ থাকে। তন্মধ্যে ১০টি আইসিসি'র পূর্ণ সদস্য ও বাকী দুইটি সহযোগী সদস্য অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে প্রতিযোগিতাটি প্রতি দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

১ম আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতা ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভারত ৫ রানে পাকিস্তানকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।[1] ২০০৯ সালের ২য় আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে পরাভূত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।[2] ৩য় আসরে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে চূড়ান্ত খেলায় ৭ উইকেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

২০১২ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়ার একটি দেশ শ্রীলঙ্কায় ৪র্থ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতা ১৮ সেপ্টেম্বর-৭ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।[3] বর্তমান শিরোপাধারী দল হিসেবে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দল

টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক

২০০৫ সাল থেকে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আগস্ট, ২০১২ পর্যন্ত সকল টেস্ট ক্রিকেটভূক্ত দলসহ ১৭টি দেশের জাতীয় দল এতে অংশ নিয়েছে।

জাতীয় ক্রিকেট দলের নাম টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের তারিখ
 অস্ট্রেলিয়া ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫
 নিউজিল্যান্ড ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫
 ইংল্যান্ড ১৩ জুন, ২০০৫
 দক্ষিণ আফ্রিকা ২১ অক্টোবর, ২০০৫
 ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬
 শ্রীলঙ্কা ১৫ জুন, ২০০৬
 পাকিস্তান ২৮ আগস্ট, ২০০৬
 বাংলাদেশ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৬
 জিম্বাবুয়ে ২৮ নভেম্বর, ২০০৬
 ভারত ১ ডিসেম্বর, ২০০৬
 কেনিয়া ১ সেপ্টেম্বর, ২০০৭
 স্কটল্যান্ড ১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৭
 নেদারল্যান্ডস ২ আগস্ট, ২০০৮
 আয়ারল্যান্ড ২ আগস্ট, ২০০৮
 কানাডা ২ আগস্ট, ২০০৮
 বারমুডা ৩ আগস্ট, ২০০৮
 আফগানিস্তান ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১০

ঘরোয়া টি২০

চিপক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত চেন্নাই সুপার কিংসকলকাতা নাইট রাইডার্সের মধ্যকার খেলার দৃশ্য

প্রধান ঘরোয়া টুয়েন্টি২০ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার সাথে সম্পৃক্ত দেশের তালিকা নিম্নে দেয়া হলো:-

দেশ ঘরোয়া প্রতিযোগিতা
আফগানিস্তানআফগানিস্তান প্রভিন্সিয়াল টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতা
আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগ
অস্ট্রেলিয়াবিগ ব্যাশ লীগ
বাংলাদেশবাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ,ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন টি-২০ লিগ
কানাডাস্কটিয়াব্যাংক ন্যাশনাল টি২০ চ্যাম্পিয়নশীপ
ইংল্যান্ডফ্রেন্ডস লাইফ টি২০
ভারতইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ
সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফি
কেনিয়াইস্ট আফ্রিক প্রিমিয়ার লীগ
নিউজিল্যান্ডএইচআরভি কাপ
সুপার স্ম্যাশ
পাকিস্তানপাকিস্তান সুপার লীগ
স্কটল্যান্ডমার্গিট্রয়েড টুয়েন্টি২০
দক্ষিণ আফ্রিকাসিএসএ টি২০ চ্যালেঞ্জ
ম্যাজান্সি সুপার লিগ
এসএ২০ (ক্রিকেট)
শ্রীলঙ্কাশ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লীগ
লঙ্কা প্রিমিয়ার লীগ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রআমেরিকান টুয়েন্টি২০ চ্যাম্পিয়নশীপ
ওয়েস্ট ইন্ডিজক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ
জিম্বাবুয়েস্ট্যানবিক ব্যাংক সিরিজ

টি২০ আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং

নভেম্বর, ২০১১ সালে সর্বপ্রথম আইসিসি টি২০ আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতি প্রবর্তন করে। এ পদ্ধতি টেস্ট ক্রিকেট র‌্যাঙ্কিং এবং একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতির অনুরূপ। র‌্যাঙ্কিং ব্যবস্থাটি ২ থেকে ৩ বছরের সময়কালের খেলাগুলোর ফলাফলের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। বর্তমান বছরের ১ আগস্ট পর্যন্ত সম্পূর্ণ, গত বছরের খেলার জন্যে দুই-তৃতীয়াংশ এবং এর পূর্বের বছরের জন্যে এক-তৃতীয়াংশ ফলাফল এতে সংযুক্ত করা হয়। র‌্যাঙ্কিংয়ে স্থান পাবার জন্যে একটি দলকে কমপক্ষে ৮টি টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় অংশ নিতে হয়।[4]

আইসিসি পুরুষ টি২০আই দলের র‍্যাঙ্কিং
র‌্যাঙ্ক দলের নামখেলার সংখ্যাপয়েন্টরেটিং
 ইংল্যান্ড২২৬,০৮৮২৭৭
 ভারত২৫৬,৮১১২৭২
 নিউজিল্যান্ড২৩৬,০৪৮২৬৩
 পাকিস্তান৩০৭,৮১৮২৬১
 অস্ট্রেলিয়া২৩৫,৯৩০২৫৮
 দক্ষিণ আফ্রিকা১৯৪,৭০৩২৪৮
 আফগানিস্তান১২২,৮২৬২৩৬
 শ্রীলঙ্কা১৩২,৯৫৭২২৭
 বাংলাদেশ১৩২,৯২১২২৫
১০  ওয়েস্ট ইন্ডিজ১৮৩,৯৯২২২২
১১  জিম্বাবুয়ে১৯৩,৬২৮১৯১
১২  আয়ারল্যান্ড১৮৩,৩৮৮১৮৮
১৩    নেপাল১৯৩,৫৫৬১৮৭
১৪  স্কটল্যান্ড১১২,০৩৫১৮৫
১৫  সংযুক্ত আরব আমিরাত১১২,০২৩১৮৪
১৬  পাপুয়া নিউগিনি১৪২,৫০১১৭৯
১৭  নেদারল্যান্ডস২০৩,৫০৪১৭৫
১৮  ওমান১০১,৭৩২১৭৩
১৯  নামিবিয়া১৪২,২০৪১৫৭
২০  সিঙ্গাপুর১২১,৬৭৮১৪০
২১  কাতার১১১,৪২২১২৯
২২  কানাডা১০১,২৬৩১২৬
২৩  হংকং১৩১,৫৭২১২১
২৪  জার্সি১৩১,৪৮১১১৪
২৫  কেনিয়া৮৯৪১১২
২৬  ইতালি৬৬৩১১১
২৭  কুয়েত৮৬৬১০৮
২৮  সৌদি আরব৪২৮১০৭
২৯  ডেনমার্ক৬০৬১০১
৩০  বারমুডা৫৬৮৯৫
৩১  মালয়েশিয়া২০১,৭২৩৮৬
৩২  উগান্ডা১০৮৪৭৮৫
৩৩  জার্মানি৭৫৯৮৪
৩৪  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৬৪৪৮১
৩৫  বতসোয়ানা১০৭৮৬৭৯
৩৬  নাইজেরিয়া৩৭৫৭৫
৩৭  গার্নসি৬৪৫৭২
৩৮  নরওয়ে৩৫৫৭১
৩৯  অস্ট্রিয়া৪২১৭০
৪০  স্পেন৪৫৭৫৭
৪১  বাহরাইন২২৭৫৭
৪২  রোমানিয়া৪৫৩৫৭
৪৩  বেলজিয়াম৫০২৫৬
৪৪  তানজানিয়া১৬৭৫৬
৪৫  ফিলিপাইন২৪১৪৮
৪৬  মেক্সিকো৩১৩৪৫
৪৭  কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ১৩২৪৪
৪৮  ভানুয়াতু১০৪৩৫৪৪
৪৯  বেলিজ২০৯৪২
৫০  আর্জেন্টিনা২০৬৪১
৫১  পেরু১৭৯৩৬
৫২  ফিজি১০৫৩৫
৫৩  মালাউই৩১২৩৫
৫৪  পানামা১৬২৩২
৫৫  সামোয়া১৫৯৩২
৫৬  কোস্টা রিকা১২৬৩২
৫৭  জাপান১২৬৩২
৫৮  মাল্টা২১৪৩১
৫৯  থাইল্যান্ড১৭৫২৫
৬০  পর্তুগাল১১৯২৪
৬১  চেক প্রজাতন্ত্র১২২৮৫২৪
৬২  লুক্সেমবুর্গ১৮৭২৩
৬৩  ফিনল্যান্ড১০৬২১
৬৪  দক্ষিণ কোরিয়া৭৮২০
৬৫  মোজাম্বিক১৭৫১৯
৬৬  আইল অব ম্যান৭৭১৯
৬৭  বুলগেরিয়া১৫৯১৮
৬৮  ভুটান৪৭১২
৬৯  মালদ্বীপ৬৫
৭০  সেন্ট হেলেনা৫৫
৭১  ব্রাজিল৩৯
৭২  চিলি১৯
৭৩  জিব্রাল্টার১৩
৭৪  মিয়ানমার
৭৫  চীন
৭৬  তুরস্ক
৭৭  ইসোয়াতিনি
৭৮  রুয়ান্ডা
৭৯  লেসোথো
৮০  ইন্দোনেশিয়া
তথ্যসূত্র: আইসিসি র‌্যাঙ্কিং, ক্রিকইনফো র‍্যাঙ্কিং, ৩ মে ২০২১

তথ্যসূত্র

  1. "India hold their nerve to win thriller"। Cricinfo.com। সেপ্টেম্বর ২৪, ২০০৭।
  2. "Afridi fifty seals title for Pakistan"। Cricinfo.com। জুন ২১, ২০০৯।
  3. "England to start ICC World Twenty20 title defence against qualifier"ICC। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১১। ১৭ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১২
  4. "ICC Team Rankings"। ১৬ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১২
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.